পটনা: রাজ্য বিধানসভায় জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে নারী-শিক্ষার ভূমিকা সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। বুধবার তিনি বলেছেন, “আমি ক্ষমা চাইছি। আমার কথা আমি ফিরিয়ে নিচ্ছি। আমার কথাগুলি যদি ভুল হয়ে থাকে, তাহলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। যদি কেউ আঘাত পেয়ে থাকেন, আমি কথাগুলি ফিরিয়ে নিচ্ছি। আমার কাউকে আঘাত করার উদ্দেশ্য ছিল না। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার উপর আমি সবসময় জোর দিয়েছি। মহিলাদের ক্ষমতায়ন ও মহিলাদের উন্নয়নের পক্ষেও আমি সবসময় ছিলাম।”
বিহারের পরিবার প্রতি জন্মহার ৪.২ শতাংশ থেকে ২.৯ শতাংশে নেমে এসেছে। এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়েই, মঙ্গলবার বিহার বিধানসভায় ওই বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন নীতীশ কুমার। মহিলাদের মধ্যে শিক্ষার প্রবণতা বেড়েছে বলেই, বিহারে জন্মহার কমছে বলে দাবি করেন তিনি। তবে, তা বলতে গিয়ে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পুরোপুরি মহিলাদের উপরই চাপিয়ে দেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। নীতীশ বলেন, “স্বামীদের কাজের জন্যই আরও বেশি বাচ্চা জন্মায়। কিন্তু, শিক্ষা মহিলাদের স্বামীদের বাধা দিতে সক্ষম করে তোলে। এই কারণেই জন্মের হার কমে গিয়েছে।”
বিধানসভায় এই মন্তব্য করার পরই, বিজেপি তোপের মুখে পড়েছিলেন নীতীশ। তাঁর মুখের ভাষা ‘লজ্জাজনক, ঘৃণ্য এবং অশ্লীল’ বলে নিন্দা করে রাজ্য বিজেপি। জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রধান রেখা শর্মাও এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে দাবি করেন, নীতীশ কুমারকে ক্ষমা চাইতে হবে। এই পরিস্থিতিতে নীতীশের ডেপুটি তেজস্বী যাদব দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রী স্কুলে সেক্স এডুকেশনের কথা বলতে চেয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাকে বিষয়টা স্পষ্ট করতে দিন। মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন তা, যৌন শিক্ষা নিয়ে। মানুষ এই বিষয়ে আলোচনা করতে দ্বিধা করে… কিন্তু এটা স্কুলে পড়ানো হয়। বাস্তবে যা করা দরকার, তিনি সেটাই বলেছেন।”
তেজস্বীর এই সাফাইয়ে কাজ হয়নি। বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নীতীশ কুমার মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন। তাঁর মন ‘বি-গ্রেড প্রাপ্তবয়স্ক চলচ্চিত্রের কৃমিতে আক্রান্ত’ বলেও কটাক্ষ করেছে গেরুয়া শিবির। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রাজ্যের বিজেপি নেতা নিত্যানন্দ রাই বলেছেন, “তিনি যেভাবে মহিলাদের সম্পর্কে কথা বলেছেন, তা অত্য়ন্ত আপত্তিকর। তেজস্বী যাদবের বক্তব্যও আপত্তিকর। নীতীশ কুমারের আর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা নেই। তাঁর উচিত রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়া।”