নয়া দিল্লি: লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের জোট বদল করেছেন জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমার (Nitish Kumar)। গত বছরই বিজেপির সঙ্গে জোট ভেঙে, আরজেডি ও কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিহারে সরকার গঠন করেন নীতীশ। আর সেই সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি নিজেই। আর বিহারে নতুন করে সরকার গঠনের পরই রাজ্য়ের বাইরেও বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ করতে শুরু করেছেন নীতীশ। ২৪-র নির্বাচনে কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে হঠাতে জোট বাঁধতে শুরু করেছেন তিনি। আর বিরোধীদের এক ছাতার তলায় আনতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে এগিয়ে এসেছেন নীতীশ। তাঁর এই ভূমিকায় বিজেপিও তাঁকে খোঁচা দিয়ে বলেছে, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দিবাস্বপ্ন তিনি যেন না দেখেন। এই আবহে সোমবার কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে ও কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। ২৪-র নির্বাচনের আগে বিরোধী দলগুলির বৈঠক নিয়ে এদিন আলোচনা হয় বলে জানা গিয়েছে।
দু’দিন আগেই দিল্লিতে আপ নেতা অরবিন্দ কেজরীবালের সঙ্গে বৈঠক করেন নীতীশ। বৈঠক শেষে কেন্দ্র বনাম দিল্লির সরকারের বিরোধে কেজরীর পাশে থাকার বার্তা দেন বিহারের মুখ্য়মন্ত্রী। এবার গতকাল কংগ্রেস সভাপতি ও রাহুলের সঙ্গে বৈঠক সারলেন তিনি। বৈঠকে ছিলেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা কেসি বেণুগোপাল ও জেডিইউ প্রধান লালন সিংও। এই বৈঠকে বিরোধী ঐক্য নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা যায়। পাশাপাশি নয়া সংসদ ভবনের উদ্বোধনে কোনও কংগ্রেস নেতারা উপস্থিত থাকবেন কি না সেই প্রসঙ্গও উঠে আসে। বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা কেসি বেণুগোপাল সাংবাদিকদের জানান, “বিরোধী দলগুলির বৈঠক হবে। এক বা দু’দিনের মধ্যে স্থান ও দিন জানিয়ে দেওয়া হবে…বহু সংখ্যক বিরোধী রাজনৈতিক দল এই বৈঠকে অংশ নেবেন।”
গতকালের বৈঠক হওয়ার পর খাড়্গে হিন্দিতে টুইটে জানান, “এবার দেশ ঐক্যবদ্ধ হবে। ‘গণতন্ত্রের শক্তি’ আমাদের বার্তা! রাহুল গান্ধী এবং আমরা আজ বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি এবং দেশকে একটি নতুন দিশা দেওয়ার প্রক্রিয়াটি এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি।” প্রসঙ্গত, কর্নাটকে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানেও উপস্থিত ছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ও উপ-মুখ্যমন্ত্রী। সেই শপথ গ্রহণের মঞ্চ যেন বিরোধী ঐক্য উপস্থাপনের একটি মঞ্চও হয়ে উঠেছিল। বিজেপি বিরোধী সকল সমমনোভাবাপন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি সেদিন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। সকল রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা হাত হাত মিলিয়ে কর্নাটকের পর কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে ভিটেছাড়া করার বার্তা দেন। এদিকে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই বিজেপি বিরোধী অনেকগুলি রাজনৈতিক দলের প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন নীতীশ। তালিকা রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য়মন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সপা প্রধান অখিলেশ যাদব, অরবিন্দ কেজরীবাল, শরদ পওয়ার ও উদ্ধব ঠাকরে। তবে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীণ পট্টনায়েকের কাছেও জোটবার্তা নিয়ে গেলেও, সেখান থেকে খালি হাতেই ফিরতে হয় বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে। বাংলায় এসে মমতার সঙ্গেও দেখা করেন নীতীশ। সেই বৈঠকের পর মমতাই বিহারে বিরোধী দলগুলির বৈঠকের কথা বলেন। এবার সেই বৈঠকের দিকেই তাকিয়ে বিরোধী দলগুলি। এই বৈঠক থেকে কোনও নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ উঠে আসবে কি না তাই দেখার।