ব্রিটেন : গত কয়েক দিনে চরমে উঠেছে ভারত-ব্রিটেনের ভ্যাকসিন (Vaccine) সংঘাত। একে অপরের দিকে ভ্যাকসিন নিয়ে চেলেছে কূটনৈতিক চাল। অবশেষে শেষ অস্ত্রেই কাজ হল। কয়েক দিন আগেই ভারত (India) ঘোষণা করে, ব্রিটেন (Britain) থেকে ভারতে এলে বাধ্যতামূলকভাবে ১০ দিনের কোয়ারেন্টাইনে ভাকতে হবে। এরপরই আজ ব্রিটেনের তরফে ঘোষণা করা হল, কোভিশিল্ড বা ব্রিটেনের অনুমোদন পাওয়া যে কোনও ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ় নেওয়া থাকলে ব্রিটেনে গিয়ে আর কোয়ারেন্টাইনে থাকার প্রয়োজন নেই।
ভারতে অবস্থিত ব্রিটিশ হাই কমিশনারের তরফে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত অ্যালেক্স এলিস জানিয়েছেন এ কথা। বলা হয়েছে যে, ব্রিটেনে যাওয়া ভারতীয়দের ক্ষেত্রে এবার থেকে আর কোনও কোয়ারেন্টাইনের প্রয়োজন হবে না। ১১ অক্টোবর থেকেই নয়া এই নির্দেশিকা অনুয়াযী কোভিশিল্ড কিংবা ব্রিটেনের অনুমোদন প্রাপ্ত যে ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ ডোজ় নেওয়া থাকলেই সে দেশে প্রবেশের ছাড়পত্র দেওয়া হবে। গত কয়েকমাস ধরে ভারত যে ভাবে সহযোগিতা করেছে সে জন্যে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।
ভারতে প্রবেশাধিকারের জন্য ব্রিটিশ নাগরিকদের জন্য কড়া বিধি জারি করে ভারত। কোনও ব্রিটিশ নাগরিক ইংল্যান্ড থেকে ভারতে এলে তাঁকে বাড়িতে বা যে কোনও হোটেলে দশ দিনের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে বলে জানা গিয়েছে। এ ছাড়াও ব্রিটেনের নাগরিকদের ভারতে আসতে গেলে ৭২ ঘণ্টা আগে করা কোভিড নেগেটিভ আরটি-পিসিআর রিপোর্ট আনতে হবে। সেই সঙ্গে বিমানবন্দরে নামা মাত্র কোভিড টেস্টও বাধ্যতামূলক করা হয়। ভারতে আসার আটদিনের মাথায় আরও একবার আরটি-পিসিআর টেস্ট করাতে হবে বলে জানানো হয়। সে দেশের সব নাগরিকের জন্যে এই নির্দেশিকা জারি করে দিল্লি সরকার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে কোভিশিল্ডকে সুরক্ষিত বলে জানানো হলেও ব্রিটেন সহ একাধিক দেশে কোভিশিল্ডকে করোনা ভ্যাকসিন হিসাবে স্বীকৃতি দেয়নি। ফলে ভারতে থেকে ব্রিটেনে যাওয়া পড়ুয়াদের সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছিল। ভারত থেকে একাধিক পড়ুয়া ব্রিটেনে পড়তে যায়, এছাড়াও কর্মসূত্রে বহু ভারতীয় ব্রিটেনে যান। এই কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম জারির পরই বিতর্ক শুরু হয়। পরে বিদেশ সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা এই নিয়ে সরব হন। তিনি বলেছিলেন, ‘ব্রিটেন কোভিশিল্ডকে বৈধ করোনা টিকা হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ার ফলে আমাদের দেশ থেকে ব্রিটেনে যাওয়া যাত্রীরা সমস্যায় পড়ছেন। এই সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে হবে। ব্রিটেন দ্রুত সিদ্ধান্ত বদল না করলে ভারতের তরফেও একইরকম ব্যবহার করা হবে।’
ভারত বার্তা দেওয়ার ঠিক পরই ব্রিটেনের নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়, ‘আপাতত চারটি ভ্যাকসিনকে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে। অ্য়াস্ট্রাজেনেকার ভ্যাক্সজেভ্রিয়া, মডার্না, ফাইজ়ার এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ডকে অনুমোদন প্রাপ্ত টিকা হিসাবে গণ্য করা হবে।’ ব্রিটেনের হাই কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, টিকা সার্টিফিকেটে কিছু সমস্যা রয়েছে। তা নিয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। তাই থাকায় আপাতত ভারতীয় যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে বলে জানানো হয়। এরপরই ভারতের নয়া সিদ্ধান্ত নেয়।