সোমবার (১ অগস্ট) লোকসভায় মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বিতর্কের জবাব দিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তিনি দাবি করেছেন, বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সংস্থার মূল্যায়নে এখনও সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি হিসেবে ভারতের অগ্রগতি অব্যাহত রয়েছে। ভারতের অর্থনীতিতে স্থবিরতা বা মন্দা আসার প্রশ্নই ওঠে না। বাদল অধিবেশনের শুরু থেকে লোকসভায় মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনার দাবি জানাচ্ছিল কংগ্রেস। তহবে, এদিন নির্মলা সীতারমন জবাবি ভাষণ দেওয়ার সময় কং সাংসদরা লোকসভা ওয়াকআউট করেন।
সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, নির্মলা সীতারমন এদিন বলেছেন, “আমরা এই ধরনের মহামারী আগে কখনও দেখিনি। আমরা সবাই চেষ্টা করছিলাম যাতে আমাদের নির্বাচনী এলাকার মানুষদের অতিরিক্ত সাহায্য দেওয়া যায়। আমি স্বীকার করছি যে, প্রত্যেক সাংসদ এবং প্রতিটি রাজ্য সরকার তাদের যথাযথ ভূমিকা পালন করছে। অন্যথায়, বাকি বিশ্বের সঙ্গে তুলনায় এখন ভারত যেখানে আছে, সেখানে থাকত না। তাই, আমি এর জন্য ভারতের জনগণকে সম্পূর্ণরূপে কৃতিত্ব দিই। এমনকি, চরম প্রতিকূলতার বিরুদ্ধেও আমরা রুখে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছি এবং দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছি।”
There is no question of India getting into recession or stagflation: Finance Minister @nsitharaman replies in Lok Sabha on discussion under #Rule193 on price rise.
(Video Credit – @sansad_tv )@FinMinIndia pic.twitter.com/n1wo09rpGR
— Prasar Bharati News Services & Digital Platform (@PBNS_India) August 1, 2022
এদিন লোকসভায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ব্যাঙ্কগুলির গ্রস এনপিএ ছিল ৫.৯ শতাংশ। যা গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। সীতারমন আরও জানিয়েছেন, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ভারতের ঋণের সঙ্গে জিডিপি অনুপাত রয়েছে ৫৬.২১ শতাংশে, যা বিশ্বের অনেক তাবড় দেশের তুলনায় অনেক কম। ভারতীয় অর্থনীতি ক্রমে আরও শক্তিশালী হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
মূদ্রাস্ফীতি নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, খুচরা বাজাকরে মূল্যবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, জুন মাসে ভারতের বার্ষিক খুচরা মুদ্রাস্ফীতির হার ৭.০১ শতাংশে পৌঁছেছে। এক বছর আগে যা ছিল ৬.২৬ শতাংশে। এর জন্য মহামারি এবং যুদ্ধকেই দায়ী করেছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, “মহামারি, দ্বিতীয় তরঙ্গ, ওমিক্রন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্য়েও আমরা মুদ্রাস্ফীতিকে ৭ শতাংশ বা তার নিচে ধরে রেখেছি। চিনের বৃহত্তম সরবরাহ শৃঙ্খলা কিন্তু আজও লকডাউনের অধীনে রয়েছে। একে স্বীকৃতি দিতে হবে।”
গত ১৮ জুলাই সংসদের বাদল অধিবেশনের শুরু হয়েছে। প্রথম দিন থেকেই বিরোধীরা ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি এবং প্রয়োজনীয় পণ্যের উপর জিএসটির হার বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা চেয়ে হইহট্টোগোল বাধিয়েছে। এর ফলে বেশ কয়েকবার অধিবেশনের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হয়েছে। গত সপ্তাহে, ২৩ জন বিরোধী সাংসদকে “বিশৃঙ্খল আচরণের” কারণে রাজ্যসভা থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। পাশাপাশি চার কংগ্রেস সাংসদকে লোকসভা থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। সোমবার অবশ্য তাঁদের সাসপেনশন তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে, যে আলোচনা চেয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বিরোধীরা, এদিন নির্মলা সীতারমনের সেই জবাবের মাঝেই কংগ্রেস সাংসদরা লোকসভা থেকে ওয়াক আউট করেন। এর কয়েক মিনিট পরে, ডিএমকে সদস্যরাও ওয়াকআউট করেন।
এদিন লোকসভায় এই বিতর্কের সূচনা করেছিলেন কংগ্রেস সাংসদ মনীশ তিওয়ারি। পরে সংসদ ভবনের বাইরে তিনি বলেছেন, “যেমন জেসিকাকে কেউ হত্যা করেনি, তেমনই সরকারের মতে মুদ্রাস্ফীতির কোনও অস্তিত্ব নেই। বিরোধীর যে উদ্বেগই প্রকাশ করুক না কেন, সরকারের মতে সব কিছু ভাল চলছে। অর্থমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া ঔদ্ধত্যপূর্ণ।”