নয়ডা: প্রেম থেকে শুরু করে সম্বন্ধ, শেষ মুহূর্তে এসেই কোনও কারণে ভেস্তে যেত বিয়ের (Marriage) পরিকল্পনা। হাজারো চেষ্টা করলেও কিছুতেই আর বিয়ে হচ্ছিল না। তাই দোষ কাটাতে শেষে এক তান্ত্রিকেরই দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক যুবক। তান্ত্রিক জানিয়েছিল, তাঁর উপর ঘোর বিপদের খাঁড়া রয়েছে, যদি শিশুবলি (Child Sacrifice) না দেয়, তবে কিছুতেই তাঁর বিয়ে হবে না। এই কথা শোনার পরই চিন্তায় পড়ে ওই যুবক, কোথা থেকে বলি দেওয়ার জন্য শিশু খুঁজে পাবেন। এদিকে হাতে বেশি সময়ও নেই, হোলি(Holi)-র দিনটিই ‘শুভ’ বলেছেন ওই তান্ত্রিক। অগত্যা নিশানা বানালেন পাশের বাড়ির সাত বছরের ছোট্ট বাচ্চা মেয়েটিকেই। বন্ধুর সঙ্গে হাত মিলিয়ে চুপিসাড়েই অপহরণ করলেন বাচ্চাটিকে। তবে শেষরক্ষা হল না। বলি দেওয়ার আগেই ধরা পড়ে গেল ওই যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর প্রদেশ(Uttar Pradesh)-র নয়ডায়।
মঙ্গলবারই উত্তর প্রদেশ পুলিশ সোনু বাল্মীকী নামক ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। নয়ডার সেক্টর ৬৩-র পাশে অবস্থিত ছিজারসি গ্রামের বাসিন্দা ওই বাচ্চা মেয়েটিকেও বাগপত জেলা থেকে উদ্ধার করা হয়। জেরায় ওই যুবক জানান, পাশের বাড়িতেই নিজের পরিবারের সঙ্গে থাকত ওই বাচ্চা মেয়েটি। তাদের মধ্যে ভাল সম্পর্কও ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বিয়ের চেষ্টা সত্ত্বেও বাধা পড়ায় সম্প্রতিই তিনি সত্যেন্দ্র নামক এক তান্ত্রিকের কাছে গিয়েছিলেন। ওই তান্ত্রিক জানান, হোলির দিন যদি কোনও বাচ্চাকে তিনি বলি দিতে পারেন, তবেই বিয়ের বাধা কাটবে। এরপরই বলি দেওয়ার জন্য ‘উপযুক্ত’ বাচ্চার খোঁজ করতে শুরু করেন। মন মতো কাউকে না পেয়ে শেষ অবধি প্রতিবেশীর সাত বছরের মেয়েকেই অপহরণের ছক কষেন।
এক বান্ধবীর সাহায্য নিয়েই গত ১৩ মার্চ ওই বাচ্চা মেয়েটিকে অপহরণ করে সে। বাগপতে সোনুর দিদি থাকায়, ,সেখানেই তাঁর বাড়িতে লুকিয়ে রাখা হয় বাচ্চাটিকে। এদিকে, বাচ্চাটির খোঁজে গোটা এলাকা চষে ফেলেন তাঁর মা-বাবা এবং অন্যান্য প্রতিবেশীরা। কোথাও খুঁজে না পাওয়ায় পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়। তল্লাশি অভিযানের পাশাপাশি এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ ধরে প্রায় ২০০ জন সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করা হয়। এরপরই সেখান থেকে মোবাইলের লোকেশন ও অন্যান্য গতিবিধি ট্রাক করেই সোনুর খোঁজ পাওয়া যায়। বাগপত জেলা থেকে সোনু ও তাঁর সহকারী বান্ধবী নীতুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই তান্ত্রিক সহ অপহরণে সহায়তাকারী আরও তিনজন এখনও পলাতক বলেই জানা গিয়েছে।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, মূল অভিযুক্ত সোনুর বিরুদ্ধে এর আগে অপরাধের কোনও রেকর্ড না থাকলেও, প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ওই যুবক প্রায়সময়ই মদ্যপান করত। সত্যেন্দ্র নামক ওই তান্ত্রিকের পরামর্শেই পাশের বাড়ি থেকে ওই বাচ্চাটিকে অপহরণ করে সে। হোলির দিনই বাচ্চাটিকে বলি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। তবে পুলিশের তৎপরতায় উদ্ধার করা হয়েছে শিশুটিকে। পুলিশ কমিশনার ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করেছেন তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকদের জন্য।
আরও পড়ুন: Congress G-23 Meeting: ধিকিধিকি আগুনে পুড়ছে ‘হাত’! জি-২৩-র বৈঠকে আমন্ত্রণ ‘সাধারণ’ নেতাদেরও