জোশীমঠ: বিগত কয়েক দিন ধরেই শিরোনামে জোশীমঠ (Joshimath)। উত্তরাখণ্ডের এই ছোট্ট পাহাড়ি শহরের উপর দিয়েই যাওয়া হয় বদ্রীনাথে (Badrinath)। চিনের সীমান্তের কাছে অবস্থিত হওয়ায় প্রতিরক্ষার দিক থেকেও অত্য়ন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই শহর। কিন্তু সেই শহরের উপরই নেমে এসেছে বিপদের খাড়া। যথেচ্ছ নির্মাণকাজ ও পাহাড় কাটার ফলে ধসে যাচ্ছে মাটি। ফাটল ধরছে বাড়িঘর-রাস্তায়। কেন্দ্রের তরফে ইতিমধ্যেই বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জোশীমঠকে বসবাসের অযোগ্য বলে ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকেই সেখানে বাড়ি ভাঙার কথা ছিল, কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ী ও হোটেল মালিকদের বিক্ষোভের কারণে সেই কাজ শুরু করা যায়নি। তবে শুধু জোশীমঠই নয়, বসবাসের জন্য অসুরক্ষিত হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) আরও কয়েকটি শহরকে।
জোশীমঠে এখনও অবধি ৬৭৮টি বাড়িকে অসুরক্ষিত হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ৮২টি পরিবারকে আপাতত অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এনটিপিসির তপোবন প্রকল্পের কারণেই জোশীমঠের বাড়িঘরে ফাটল ধরেছে। এছাড়া অবৈধভাবে বাড়ি ও হোটেল তৈরি হওয়ার কারণেও ফাটল ধরেছে এলাকাজুড়ে।
তবে শুধু জোশীমঠ নয়, একই অবস্থা হবে উত্তরাখণ্ডের পৌরি, বাগেশ্বর, উত্তরকাশী, তেহরি গারওয়াল ও রুদ্রপ্রয়াগেও।
১. তেহরি গারওয়াল- তেহরি গারওয়ালের একাধিক বাড়িতে ইতিমধ্যেই ফাটল ধরে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সুড়ঙ্গ তৈরির জন্য ডিনামাইট দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানোর কারণেই বাড়িগুলিতে ফাটল ধরছে। মাঝরাতে বিস্ফোরণ ঘটানোর পর থেকেই কেঁপে উঠছে বাড়িগুলি। তাঁরা বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন।
২. পৌরি- পৌরিতেও একই অবস্থা। সেখানেও একাধিক বাড়ি ও রাস্তায় ফাটল ধরেছে। রেল প্রকল্পের কাজের কারণেই এই ফাটল ধরছে বলে দাবি বাসিন্দাদের।
৩.বাগেশ্বর- বাগেশ্বরেও খারবাগাদ গ্রামের বাসিন্দারা চরম সঙ্কটের মুখে পড়েছেন, কারণ এই গ্রামের ঠিক ওপরেই পাহাড়ে গর্ত করে সুড়ঙ্গ বানানো হচ্ছে হাইড্রোপাওয়ার প্রকল্পের জন্য। এর জেরে একাধিক জায়গায় জল লিক করছে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন গ্রামের বাসিন্দারা।
৪. উত্তরকাশী- উত্তরকাশীতে মাস্তাদি ও ভাতওয়াড়ি গ্রামকে বিপদজনক বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ১৯৯১ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্পের কারণে মাস্তাদি গ্রামে আগেই ফাটল ধরেছিল। সেই ফাটলগুলি হঠাৎ বড় হতে শুরু হয়েছে। গোটা উত্তরকাশী জেলাই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
৫. রুদ্রপ্রয়াগ– রুদ্রপ্রয়াগের মারোদা গ্রামেও ঋষিকেশ-কর্ণপ্রয়াগ রেললাইন নির্মাণের কারণে একাধিক বাড়িতে ফাটল ধরছে। আগেই সুড়ঙ্গ তৈরির জন্য একাধিক বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছিল। রেললাইনের কাজ শুরু হওয়ার পরই ধ্বংসের মুখে আরও অনেক বাড়ি।