নয়া দিল্লি: কেরলে (Kerala) প্রবল বর্ষণ (Heavy Rain) শুরু হয়েছে দিন কয়েক আগেই। কোথাও জমে রয়েছে জল, কোথাও নেমেছে ধস। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে প্রাণ হারিয়েছে সে রাজ্যের অনেক বাসিন্দা। তবে সোমবার থেকে কেরলে বৃষ্টি কিছুটা কমলেও, ভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে দেশের একাধিক রাজ্যে। উত্তরাখণ্ডে (Uttarakhand) সেই বৃষ্টি জেরে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এই দুই রাজ্যের পাশাপাশি সোমবার থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে মধ্য প্রদেশ, রাজস্থান, দিল্লি, তামিলনাড়ু, পুদুচেরী, হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, তেলেঙ্গানা ও পশ্চিমবঙ্গে।
বৃষ্টি প্রকোপে ক্রমশ উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে উত্তরাখণ্ডে। গতকালই সে রাজ্যে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। মৃতদের মধ্যে ছিলেন নেপালের তিন শ্রমিক। উত্তরাখণ্ডের পাউরি জেলায় সামখালে একটি তাঁবুতে ছিলেন তাঁরা। বৃষ্টির জেরে আচমকা পাথর গড়িয়ে আসে সেই তাঁবুর দিকে। সেই পাথর চাপা পড়ে তাঁবুর ভিতরেই মৃত্যু হয় ওই তিন শ্রমিকের। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুজন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক বিজয় কুমার।
চম্পাওয়াত জেলায় ধসের জেরে বাড়ি ভেঙে মৃত্যু হয়েছে আরও দুজনের। পরিস্থিতি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে চার ধাম যাত্রা। যে সকল তীর্থযাত্রী ইতিমধ্যেই হরিদ্বার বা হৃষিকেশে পৌঁছেছেন, তাঁদের আপাতত পাহাড়ের দিকে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে দেরাদুনে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। সেই কন্ট্রোল রুম ইতিমধ্যেই পরিদর্শন করেছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুস্কর সিং ধামি।
অন্যদিকে কেরলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৭। জলস্তর পৌঁছেছে বিপদসীমার ওপরে। ১১ টি বাঁধে জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। আগামী ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত বৃষ্টি চলবে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া দফতর।
জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর একটি দল পাঠানামথিত্তা, আলাপ্পুজা, ইডুক্কি, এর্নাকুলাম, ত্রিশুর এবং মালাপ্পুরাম জেলায় মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও, ইডুক্কি, কোট্টায়াম, কোল্লাম, কান্নুর এবং পলক্কাদ জেলায় আরও ৫ টি দল মোতায়েন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর দুটি দলের একটি তিরুবনন্তপুরমে এবং একটি কোট্টায়ামে মোতায়েন রয়েছে। ডিফেন্স সিকিউরিটি কর্পসের (DSC)একটি দল কোঝিকোড়ে এবং একটি দল ওয়ানাডে মোতায়েন করেছে। বায়ু সেনা বাহিনী এবং নৌবাহিনীকে জরুরি অবস্থার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার প্রবল বৃষ্টি হয়েছে দিল্লিতেও। রবিবার সকাল থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত দিল্লিতে বৃষ্টি হয়েছে ৮৭.৯ মিলিমিটার। একই অবস্থা হিমাচল প্রদেশে। সে রাজ্যে বৃষ্টির ডেরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জাতীয় সড়ক। আগামী দুদিন ধরে বৃষ্টি হবে মধ্য প্রদেশেও।
পশ্চিমবঙ্গেও ভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে গত রবিবার থেকে। মঙ্গলবার কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারের বেশ কিছু জায়গায়। কমলা সতর্কতার অর্থ ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস। অন্যদিকে হলুদ সতর্কতা রয়েছে মালদহ, উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে। হলুদ সতর্কতা মানে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা। হাওয়া অফিস মনে করছে, বুধবারের পর থেকে নিম্নচাপের প্রভাব কমতে শুরু করবে। ফলে টানা বৃষ্টি থেকে মুক্তি মিলতে পারে।
আরও পড়ুন: Weather Update: আজও সব জেলাতেই বৃষ্টি, লক্ষ্মীপুজোর দিন দুর্যোগ কাটবে? জানাল হাওয়া অফিস