নয়া দিল্লি: কাশ্মীরের (Kashmir) নিরাপত্তা (Secirity) নিয়ে উদ্বেগ নতুন নয়। তবে সম্প্রতি যে ভাবে পরপর নিরপরাধ সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে উপত্যকায়, তা নতুন করে ভাবাচ্ছে কেন্দ্রকে। চলতি মাসেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah) কাশ্মীর সফরে যাওয়ার কথা। তার ঠিক আগেই উপত্যকায় শুরু হয়েছে চরম অস্থিরতা। সাধারণ নাগরিক থেকে সেনা জওয়ানদের পরপর মৃত্যু কপালে ভাঁজ ফেলেছে গোয়েন্দাদের। এই আবহেই দেশের নিরাপত্তা নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন অমিত শাহ। সোমবার ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর (IB) দফতরে বসে সেই বৈঠক। দেশের সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে সেই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তবে অবশ্যই আলোচনায় বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (DGP)। অন্যান্য উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তাদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর আধিকারিকরাও। সেন্ট্রাল আর্মড পুলিশ ফোর্সের (CAPF) ডিরেক্টর জেনারেলও উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে। দেশের কোথায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও সূত্রের খবর। কাশ্মীরের সাম্প্রতিক হামলার ঘটনা নিয়েও হয়েছে আলোচনা। মাওবাদী অধ্যুষিত অঞ্চলের কী পরিস্থিতি তাও জানতে চেয়েছেন অমিত শাহ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র টুইটারে জানিয়েছেন, দেশের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে কী কী পদক্ষেপ করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে আলোচনা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠকে পুলিশকর্তা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই, স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর ডিরেক্টর অরবিন্দ কুমার। সোমবার দুপুরে সেই বৈঠক শুরু হয়, চলে বেশ কয়েক ঘন্টা।
সোমবারই নতুন করে হাই অ্যালার্ট জারি হয়েছে কাশ্মীরে। উরিতে হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সম্প্রতি, বিহারের এক ফুচকা বিক্রেতা এবং উত্তর প্রদেশের এক কাঠের মিস্ত্রিকে গুলি করে হত্যা করে জঙ্গিরা। বিহারের ওই ফুচকাওয়ালার নাম ছিল অরবিন্দ কুমার শাহ। তাঁকে শ্রীনগরে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে হত্যা করেছিল জঙ্গিরা। আর উত্তর প্রদেশের কাঠের মিস্ত্রি শাগির আহমেদকে পুলওয়ামায় হত্যা করেছিল জঙ্গিরা। অক্টোবরের ২ তারিখ থেকে ৮ তারিখের মধ্যে সাত জন নিরপরাধ সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছিল জঙ্গিরা। তাঁদের মধ্যে চার জনই ছিলেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। একের পরে এক সাধারণ নাগরিক হত্যার ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরে।
ভৌগোলিক দিক থেকে উরি জঙ্গিদের অন্যতম পছন্দের জায়গা হতে পারে। ভারত – পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণ রেখার খুব কাছেই উরি। সেদিক থেকে অনুপ্রবেশকারী জঙ্গিরা অনেকটা ভৌগোলিক দিক থেকে সুবিধাজনক অবস্থান পেতে পারে উরিতে। এর আগেও উরির সেনা ছাউনিতে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, এবার জঙ্গিরা উরির দুই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে নিশানা করছে। গোপন সূত্র মারফত থেকে এই তথ্য পাওয়ার পরেই, উরি-১ এবং উরি-২ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : CBSE: নভেম্বরেই শুরু সিবিএসই দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির প্রথম টার্মের পরীক্ষা