ভুবনেশ্বর: নিত্যদিন বচসা লেগে থাকে স্ত্রীর সঙ্গে। দুই বছরের কন্যা সন্তানকে নিয়েও অসন্তোষ ছিল। এক ঢিলে দুই পাখি মারতেই কষেছিলেন খুনের ছক। তবে এমন সেই ফন্দি যেখানে সাপও মরবে, এদিকে লাঠিও ভাঙবে না। সেই কারণেই স্ত্রী ও মেয়ে যখন ঘুমিয়ে, তখন ঘরের ভিতরে ছেড়ে দিলেন বিষধর সাপ। ঘর থেকে সাপ যাতে বের হতে না পারে, তার জন্য বাইরে থেকে দরজা-জানালাও বন্ধ করে দিলেন। বিষধর সাপের কামড়েই মৃত্যু হয় স্ত্রী ও কন্যার। খুনের পর প্রায় একমাস গায়ে হাওয়া লাগিয়েই ঘুরছিলেন, কিন্তু শেষ রক্ষা আর হল না। পুলিশের জালে ধরা পড়লেন অভিযুক্ত যুবক।
ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার গঞ্জমে। বৃহস্পতিবার পুলিশ ২৫ বছরের এক যুবককে গ্রেফতার করে তাঁর স্ত্রী ও দুই বছরের শিশুকন্যাকে খুনের অভিযোগে। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত যুবক স্ত্রী ও মেয়েকে খুন করার জন্য ঘরে বিষধর কেউটে সাপ ছেড়ে দিয়েছিল। সাপের কামড়েই মৃত্যু হয় দুইজনের।
জানা গিয়েছে, গঞ্জমের আধেইগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ওই যুবক। তাঁর নাম কে গণেশ পাত্র। ২০২০ সালে তাঁর বিয়ে হয় বাসন্তী পাত্র (২৩) নামক এক যুবতীর সঙ্গে। তাঁদের দুই বছরের এক শিশুকন্য়াও রয়েছে। সম্প্রতিই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। নিত্যদিন সেই ঝামেলা বাড়তে থাকে। এরপরই ওই যুবক স্ত্রীকে খুনের ছক কষে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, একজন সাপুড়ের কাছ থেকে একটি বিষধর সাপ কিনে আনে অভিযুক্ত। সাপুড়েকে যুবক বলেছিলেন, ধর্মীয় রীতির জন্য়ই এই সাপ প্রয়োজন। টাকার লোভে সাপুড়ে রাজিও হয়ে যায়। গত ৬ অক্টোবর তিনি সাপটি একটি প্লাস্টিকের জারে ভরে বাড়িতে নিয়ে আসেন। রাতে যখন স্ত্রী ও মেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে, তখন তিনি পাশের ঘর থেকে চুপিসারে এসে ঘরে সাপ ছেড়ে দেন এবং দরজা বন্ধ করে দেন।
পরেরদিন সকালে দরজা খুলে দেখা যায়, মা-মেয়ে দুইজনেরই মৃত্যু হয়েছে। ঘরেই পাওয়া যায় সাপটিকে। পুলিশ প্রথমে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে। কিন্তু মৃত যুবতীর বাবা খুনের অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। জিজ্ঞাসাবাদে প্রথমে যুবক সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করলেও, পরে দাবি করে জানালা দিয়ে হয়তো সাপ ঢুকে গিয়েছিল। বারবার বয়ান বদল করায় পুলিশের সন্দেহ বাড়ে। কড়া জেরা করা হলে অভিযুক্ত খুনের কথা স্বীকার করে নেয়।