Odisha Train Accident: ‘কবচ থাকলেও লাভ হত না, কারণ…’, বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনার কী ব্যাখ্যা দিল রেল বোর্ড

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Jun 04, 2023 | 9:22 PM

Odisha Train Accident:

Odisha Train Accident: কবচ থাকলেও লাভ হত না, কারণ..., বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনার কী ব্যাখ্যা দিল রেল বোর্ড
চলছে লাইন থেকে দোমরানো মোচরানো কামরা সরানোর কাজ

Follow Us

নয়া দিল্লি: রবিবার রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘ইলেক্ট্রনিক ইন্টারলকিং সিস্টেম’-এ সমস্যাই শুক্রবার রাতে ওড়িশার বালেশ্বরে ট্রেন বিপর্যয়ের মূল কারণ। ‘কবচ’ রেল সুরক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে এই দুর্ঘটনার কোনও যোগ নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি। তাহলে ঠিক কীভাবে ঘটে গেল এত বড় এক ট্রেন দুর্ঘটনা? যার জেরে কমপক্ষে ২৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছেন ১০০০ জনেরও বেশি। রবিবার (৪ জুন) রেলওয়ে বোর্ডের পক্ষ থেকে বিশদে এই ঘটনার ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। তবে এই ব্যাখ্যার পুরোটাই কেবল প্রাথমিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে। আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত রিপোর্ট জমা না পড়া পর্যন্ত এই বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা যাবে না বলে জানিয়েছে বোর্ড।

রেল বোর্ডের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, বালেশ্বরের বাহানাগা বাজার স্টেশনে চারট লাইন রয়েছে। মাঝখান দিয়ে গিয়েছে যওয়া ও আসার দুটি প্রধান লাইন, আর সেই লাইনদুটির দুই পাশে রয়েছে দুটি লুপ লাইন। দুটি লুপ লাইনেই লৌহ আকরিক বোঝাই পণ্যবাহী ট্রেন দাঁড়িয়েছিল। আপ লাইন দিয়ে হাওড়া থেকে চেন্নাই যাচ্ছিল শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। আর ডাউন লাইন দিয়ে হাওড়ায় আসছিল বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। দুটি মেইন লাইনেই সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছিল। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের গতি ছিল ঘণ্টায় ১২৮ কিলোমিটার, আর বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্টের ১২৬ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। রেলওয়ে বোর্ডের অপারেশনস বিষয়ক সদস্য জয়া ভার্মা সিনহা জানিয়েছেন, ১৩০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার কম গতি থাকায়, দুটি ট্রেনের কোনওটি অতিরিক্ত গতিতে ছিল এই কথা বলা যাবে না।

তিনি জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে একটি সিগন্যালিং সমস্যা শনাক্ত করা হয়েছে। তবে, এটাকে সঙ্কেতের ব্যর্থতা বলা যাবে না। উচ্চ গতিতে থাকায় সেই সমস্যার প্রতিক্রিয়া দেওয়ার জন্য চালক খুব কম সময় পেয়েছিলেন। রেল বোর্ডের থেকে আরও দাবি করা হয়েছে, তিনটি ট্রেন দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়নি। দুর্ঘটনায় পড়েছে শুধুমাত্র একটিই ট্রেন, করমণ্ডল এক্সপ্রেস। জয়া ভার্মা সিনহা বলেছেন, “কোনও কারণে, ট্রেনটি লুপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা লৌহ আকরিক ভর্তি একটি পণ্যবাহী ট্রেনকে সজোরে ধাক্কা মারে। ট্রেনটির ইঞ্জিন এবং কোচ মালগাড়িটির উপর উঠে যায়। লৌহ আকরিক ভর্তি পণ্যবাহী ট্রেনটি খুব ভারী থাকায় দুর্ঘটনার অভিঘাতে ট্রেনটির কিছু হয়নি। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কোচগুলি তৃতীয় ট্র্যাকে ছিটকে পড়ে। উল্টো দিক থেকে তীব্র গতিতে আসা ট্রেনটির কয়েকটি বগিকে ধাক্কা মারে।”

রেলওয়ে বোর্ড আরও জানিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের কামরাগুলি ‘লিঙ্ক হফম্যান বুশ’ বা ‘এলএইচবি’ কামরা ছিল। এগুলি অত্যন্ত নিরাপদ। কিন্তু, মালগাড়িটি লৌহ আকরিকে ভর্তি থাকায় সেগুলির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যে রুটে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানে স্বয়ংক্রিয় ট্রেন সুরক্ষা ব্যবস্থা ‘কবচ’-ও ছিল না বলে জানিয়েছে রেল বোর্ড। শনিবার, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ‘কবচ’ না থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কবচ না থাকাকেই দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে রেল বোর্ড জানিয়েছে, কবচ ব্যবস্থার সঙ্গে এই দুর্ঘটনার কোনও সম্পর্ক নেই। এটি থাকলেও দুর্ঘটনা এড়ানো যেত না। তারা জানিয়েছে, কিছু কিছু দুর্ঘটনা ঘটে, যেগুলি বিশ্বের কোনও প্রযুক্তির মাধ্যমেই এড়ানো যায় না। চালক কোনও সঙ্কেত দেখতে ভুল করেন, সেই সময় কবচ ব্যবস্থা ওই চালককে সতর্ক করতে পারে, ব্রেক নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। একই লাইনে নির্ধারিত দূরত্বের অন্য কোনও ট্রেন থাকলে প্রথম ট্রেনটিকে এই ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয়ভাবে থামাতেও পারে।

Next Article