লখনউ: একই হাসপাতালে জ্বর নিয়ে ভর্তি ২৫০ জনেরও বেশি রোগী। ফিরোজাবাদ(Firozabad), আগ্রা(Agra)-র গণ্ডি পেরিয়ে এ বার কানপুর(Kanpur)-এও ছড়িয়ে পড়ল জ্বরের প্রকোপ। কানপুরের শঙ্কর বিদ্যার্থী মেমরিয়াল মেডিক্যাল কলেজেই ডেঙ্গু (Dengue), ম্যালেরিয়া (Malaria) ও ভাইরাল জ্বর (Viral Fever) নিয়ে প্রায় ২৫০-রও বেশি রোগী ভর্তি হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
মেডিক্য়াল কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ সঞ্জয় কালা বলেন, “আচমকাই জ্বরের প্রকোপ দেখা দিয়েছে শহরে। প্রায় ২৫০ জনেরও বেশি রোগী জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে ১০জন শিশুও রয়েছে। এখনও অবধি ২৫ জন রোগীর নমুনায় ডেঙ্গু ধরা পড়েছে, কয়েকজনের ম্যালেরিয়াও হয়েছে। তবে এখনও কোনও রোগী মৃত্যু হয়নি।”
শুধু শঙ্কর বিদ্যার্থী মেমরিয়াল মেডিক্যাল কলেজেই নয়, লালা লাজপত রাই হাসপাতালেও কমপক্ষে ২০টি শিশু জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে কেবল একজনের নমুনায় ডেঙ্গু ধরা পড়েছে।
বিগত প্রায় এক মাস ধরেই অজানা জ্বরের প্রকোপ দেখা দিয়েছে উত্তর প্রদেশ জুড়ে। ফিরোজাবাদ জেলায় গত দুই সপ্তাহেই রেকর্ড সংখ্যক মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই আবার শিশু। অজানা জ্বরে শিশু মৃত্যুর কারণ জানতেই কেন্দ্রীয় দল পাঠানো হয়েছিল, তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতেই জানা গিয়েছে, “ডেঙ্গু হেমারোজিক ফিভার”-এই আক্রান্ত হচ্ছেন অধিকাংশ। এছাড়াও ম্যালেরিয়া ও স্ক্রাব টাইফাসের কারণেও জ্বর আসছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও অবধি উত্তর প্রদেশ থেকে ১৫০০-র বেশি জ্বরের রোগীর খোঁজ মিলেছে। রাজ্যের মধ্য ও পশ্চিম ভাগেই সবথেকে বেশি ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। ফিরোজাবাদ ছাড়াও বর্তমানে ফারুখাবাদ, কানপুর ও উন্নাওতে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। কেবল উন্নাওতেই ৬৭৮ জন জ্বর ও ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
বুধবারের তথ্য অনুযায়ী, ফিরোজাবাদে এখনও অবধি জ্বরে ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে ৪৫০ জনেরও বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। প্রয়াগরাজে এখনও অবধি ৯৭ জন ডেঙ্গু রোগীর খোঁজ মিলেছে। আগ্রা, গাজিয়াবাদ ও নয়ডাতেও ভাইরাল জ্বর, ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া দেখা দিয়েছে।
সরকারি হাসপাতালগুলিতে এত সংখ্যক শয্যা না থাকায়, যাদের সামর্থ্য রয়েছে, তারা রোগীদের অনত্র নিয়ে যাচ্ছেন। যারা যেতে পারছেন না, তারা হাসপাতালের দোরগোড়াতেই বসে থাকছেন চিকিৎসার আশায়। একই অবস্থা বেসরকারি হাসপাতালগুলিতেও। সেখানেও প্রতিটি ওয়ার্ডে জ্বরের রোগী ভর্তি। নতুন করে শয্যা এনেও হাসপাতালের করিডরেও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে গ্রামবাসীদের অভিযোগ, রাজ্য প্রশাসনের তরফে মুখে আশ্বাস দেওয়া হলেও এখনও অবধি গ্রামে গ্রামে স্যানিটাইজেশন ও মশা দূর করার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতেও প্রয়োজনীয় ওষুধ মিলছে না।
আরও পড়ুন: COVID Antibody: ৪ থেকে ৬ মাস পরই কমছে অ্যান্টিবডির পরিমাণ, কতদিনের সুরক্ষা দেবে করোনা টিকা?