নয়া দিল্লি: কয়েকদিন আগেই দেশের অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তথা মাদার টেরিজার তৈরি সংস্থা মিশনারিজ অব চ্যারিটির এফসিআরএ রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ায় জটিলতা তৈরি হয়। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক বিতর্কেরও সূত্রপাতও হয়। সম্প্রতি মাদার টেরিসার তৈরি সংস্থার এফসিআরএ লাইসেন্স পুনঃনবীকরণের আবেদন খারিজ করেছিল কেন্দ্র। এবার দেশের আরও ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা লাইসেন্স বাতিল হল। বিদেশ থেকে সংস্থায় তহবিল জোগাড় করতে এই লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক। শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, নতুন করে লাইসেন্স পুনঃনবীকরণের আবেদন না করায় সংস্থাগুলির লাইসেন্সের মেয়াদ স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় শেষ হয়ে গিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, ওই সংস্থাগুলিকে লাইসেন্স পুনঃনবীকরণের কথা মনে করিয়ে দেওয়া হলেও তারা আবেদন করেনি। শুক্রবারই ছিল আবেদন করার শেষদিন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে খবর, অক্সফাম ইন্ডিয়া ট্রাস্ট, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া, ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন এবং কুষ্ঠ মিশন সহ মোট ১২ হাজারটিরও বেশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এফসিআরএ লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে এসেছিল। সেই সংস্থাগুলিও নিজেদের লাইসেন্স হারালেন। এই তালিকায় টিউবারকিউলোসিস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া, ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল সেন্টার ফর আর্টস এবং ইন্ডিয়া ইসলামিক কালচারাল সেন্টারও রয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে খবর, মোট ১৬ হাজার ৮২৯ টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এফসিআরএ লাইসেন্সের মেয়াদ আবেদনের ভিত্তিতে ২০২২ সালের ৩১ মার্চ অবধি বৃদ্ধি করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, দেশের মোট ২২ হাজার ৭৬২ টি এনজিও এফসিআরএ আইনের আওতাধীন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছিল, বেশ কিছু অপ্রীতিকর খবর পেয়েই মিশনারিজ অফ চ্যারিটির এফসিআরএ লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করা হয়নি। ভারত জুড়ে অনাথ শিশু, গরীব, অসুস্থ এবং নিঃস্বদের অনাথ আশ্রম ও আশ্রয় কেন্দ্র পরিচালনা করে মিশনারিজ অফ চ্যারিটি। গুজরাটে এই সংস্থার বিরুদ্ধে বলপূর্বক ধর্মান্তকরণের জন্য থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। তারপরই এই নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত হয়।
উল্লেখ্য, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির তরফ থেকে কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল, করোনা পরিস্থিতিতে তারা বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে কোভিড আক্রান্ত পরিবারগুলিকে সাহায্য করতে হয়েছে, তাই কেন্দ্রের নির্দেশ মতো রেজিস্ট্রেশনের সব শর্ত পূরণ করা সম্ভব হয়নি। ২০২০-র নভেম্বরে নতুন শর্ত জারি করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। যেখানে বলা হয়, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকে তিন বছরে অন্তত ১৫ লক্ষ টাকা সাহায্য হিসেবে খরচ করতে হবে। তবেই তারা বিদেশ থেকে টাকা পাবে। পাশাপাশি, যেখান থেকে টাকা আসছে তাদের একটি চিঠি দিয়ে সংস্থাগুলিকে জানাতে হবে যে, কত টাকা প্রয়োজন ও কী কাজের জন্য প্রয়োজন।