Padma Awards 2023: আমেরিকাতেও আছে স্কুল, যজ্ঞ করেছেন বিশ্বজুড়ে, পদ্মভূষণ পাচ্ছেন স্বামী চিন্না জেয়ার

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Jan 26, 2023 | 12:32 PM

Padma Awards 2023: ৭৪তম প্রজাতন্ত্র দিবসের ঠিক আগের দিন, বুধবার (২৫ জানুয়ারি) এই বছরের পদ্ম পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করল ভারত সরকার। ৯ পদ্মভূষণ প্রাপকদের অন্যতম হলেন, তেলঙ্গানার হিন্দু ধর্মগুরু স্বামী চিন্না জেয়ার।

Padma Awards 2023: আমেরিকাতেও আছে স্কুল, যজ্ঞ করেছেন বিশ্বজুড়ে, পদ্মভূষণ পাচ্ছেন স্বামী চিন্না জেয়ার
এই বছরের পদ্মভূষণ প্রাপকদের অন্যতম তেলঙ্গানার বৈষ্ণব ধর্মগুরু স্বামী চিন্না জেয়ার

Follow Us

হায়দরাবাদ: ৭৪তম প্রজাতন্ত্র দিবসের ঠিক আগের দিন, বুধবার (২৫ জানুয়ারি) এই বছরের পদ্ম পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করল ভারত সরকার। ৬ জন পদ্মবিভূষণ, ৯ জন পদ্মভূষণ এবং ৯১ জন পদ্মশ্রী পুরস্কার প্রাপকের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এই ৯ পদ্মভূষণ প্রাপকদের অন্যতম হলেন, তেলঙ্গানার হিন্দু ধর্মগুরু স্বামী চিন্না জেয়ার ওরফে, ত্রিদণ্ডী শ্রীমাননারায়ণ রামানুজ চিন্না জেয়ার স্বামী। বৈষ্ণবধর্মের বিষয়ে অনন্য জ্ঞান এবং তাঁর সহজ ভাষার আধ্যাত্মিক বক্তৃতা দানের জন্য সুপরিচিত তিনি। সেই সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বৈদিক শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করেছেন স্বামী চিন্না জেয়ার। হায়দরাবাদে ‘স্ট্যাচু অব ইকুয়ালিটি’ নামে রামানুজের যে মূর্তিটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, সেই মূর্তিটির নকশাও করেছিলেন থেনকালাই ঘরানার এই ধর্মগুরু। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও জড়িত তিনি।

১৯৫৬ সালে অন্ধ্র প্রদেশের রাজমুন্দ্রির কাছে এক তামিল-ভাষী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন স্বামী চিন্না জেয়ার। তাঁর ঠাকুর্দা, ত্রিদন্ডী শ্রীমাননারায়ণ রামানুজ জেয়ার ওরফে, স্বামী পিদা জেয়ারই তাঁকে বড় করেছিলেন। তিনি ছিলেন নদীগদাপালেম গ্রামের শ্রীমদ উভয় বেদান্ত আচার্য পীঠমের প্রধান। ঠাকুর্দার পাশাপাশি বেশ কিছু পণ্ডিত ব্যক্তিদের সান্নিধ্যে সংস্কৃত এবং তামিল ভাষায় রচিত বৈষ্ণব ধর্মগ্রন্থ এবং অন্যান্য হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলির শিক্ষালাভের সুযোগ পেয়েছিলেন স্বামী চিন্না জেয়ার। মাত্র ২৩ বছর বয়সে তিনি সন্ন্যাস গ্রহণ করেছিলেন। ১৯৮১ সালে স্বামী পিদা জেয়ারের মৃত্যু হয়। তারপর স্বামী চিন্না জেয়ার শ্রীমদ উভয় বেদান্ত আচার্য পীঠমের নেতৃত্বভার গ্রহণ করেন।

তবে বিভিন্ন দিক থেকেই চিন্না স্বামী জেয়ার ব্যতিক্রমী। তিনিই ত্রিদন্দী জেয়ার ধারার প্রথম সন্ন্যাসী, যিনি আধ্যাত্মিকতার প্রচারে বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন। ১৯৮৩ সালেই ‘চিন্না জেয়ার স্বামী জিয়ার এডুকেশনাল ট্রাস্ট’ গঠন করেছিলেন তিনি। এই বৈদিক শিক্ষা কেন্দ্রের শাখা এখন হায়দরাবাদ, চেন্নাইয়ের পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও রয়েছে। তাঁর স্কুলে যে কেউ ভর্তি হতে পারে, জাতপাতের বিচার করা হয় না। জেয়ার ধারার হাতে গোনা কয়েকজন সন্ন্যাসী, যারা অ-ব্রাহ্মণ শিষ্য গ্রহণ করেন, তাঁদের অন্যতম হলেন এই স্বামী চিন্না জেয়ার। ১৯৯৪ সালে তিনি প্রথম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়েছিলেন। তারপর থেকে সেখানেও বিপুল সংখ্যক লোককে তিনি বৈদিক শিক্ষা দিয়েছেন। এছাড়া লন্ডন, সিঙ্গাপুর, হংকং এবং কানাডায় বৈদিক যজ্ঞ করেছেন তিনি।

আসলে বৈদিক আচার-অনুষ্ঠানে তিনি সিদ্ধহস্ত। একাধিক ভাষার উপর দখলও আছে স্বামী চিন্না জেয়ারের। এর পাশাপাশি, আদিবাসীদের জন্য স্কুল, বয়স্ক-অনাথ-প্রতিবন্ধী-সহায়হীনদের জন্য থাকার জায়গা, গ্রামীণ উন্নয়ন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যালয়ের মতো আধুনিক সামাজিক কার্যকলাপের সঙ্গেও যুক্ত। এমনকি, বেদ অধ্যয়নের জন্য কম্পিউটার প্রবর্তনকেও তিনি সমর্থন করেন। ২০১৫ সালে গোদাবরী মহা পুষ্করম উৎসব আয়োজনে সহায়তা করার জন্য অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। ইয়াদাদ্রি মন্দিরের সংস্কারে তেলঙ্গানা সরকারকেও পরামর্শ দিচ্ছেন স্বামী চিন্না জেয়ার। মানবতাবাদী এই ধর্মগুরু বৈদিক জ্ঞান, আধ্যাত্মিক অনুশীলন, ধর্মীয় সহনশীলতা, অহিংসা এবং সমস্ত জীবের জন্য পারস্পরিক শ্রদ্ধার প্রচারের মাধ্যমে বিশ্ব শান্তি ও সম্প্রীতিকে উন্নত করার লক্ষ্যেও অবিরাম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। স্থিতিশীল উন্নয়নের বিষয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন রাষ্ট্রসঙ্ঘেও।

Next Article