মুম্বই: বুধবার (১৩ ডিসেম্বর), সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘন নিয়ে উত্তাল গোটা দেশ। আর এই ঘটনার আঁচ এসে পড়ল মহারাষ্ট্রের লাতুরেও। সংসদে ওই বিশৃঙ্খলার ঘটনার পরপরই লাতুরের চাচুর থানার পুলিশ হানা দিল ঝরি গ্রামে। আসলে লোকসভায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের অন্যতম, অমল শিন্ডের বাড়ি লাতুর জেলার চাচুর মহকুমার ঝরি গ্রামে। ঘটনার পরই দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে মহারাষ্ট্র পুলিশকে অমলের বিষয়ে বিশদ তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দেয়। আর তারপরই ঝরি গ্রামে হানা দিল চাচুর থানার পুলিশ।
সংসদে বিশৃঙ্খলার জেরে সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। আর এরপরই ঘুম ভেঙেছে পুলিশ প্রশাসনের। অবিলম্বে এই ঘটনার তদন্তে নেমেছে দিল্লি পুলিশ। সূত্রের খবর, যে ব্যক্তি সংসদের ভিতরে ঢুকে স্লোগান তুলেছিলেন এবং লোকসভা কক্ষ হলুদ রঙের ধোঁয়ায় ঢেকে দিয়েছিলেন, তিনিই অমল শিন্ডে। তাঁর সম্পর্কে খোঁজখবর নিতেই এদিন ঝরি গ্রামে অমল শিন্ডের বাড়িতে পৌঁছয় পুলিশ। সেই সময় বাড়িতে ছিলেন অমল শিন্ডের বাবা-মা। তাঁদেরকেই, তাঁদের ছেলে সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। পুলিশ জানতে পেরেছে তার পুরো নাম অমল ধনরাজ শিন্ডে। অমলের বাড়ির আর্থিক অবস্থা মোটেই ভাল নয়। তার বাবা-মা দুজনেই দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন। অমল আপাতত পড়াশোনা করছে।
গত কয়েকদিন ধরে কী করছিলেন অমল শিন্ডে? কাদের সঙ্গে মেলামেশা করছিলেন? এই সকল বিষয়েও খোঁজ খবর নেয় পুলিশ। জরি গ্রামের বাসিন্দাদের, অমলের প্রতিবেশিদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশ কথা বলেছে অমলের আত্মীস্বজনদের সঙ্গেও। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, অমলের বিষয়ে তাঁরা খুব বেশি কিছু জানেন না। কারণ, গ্রামে খুব একটা থাকেন না তিনি। গ্রামে থাকতে পছন্দ করেন না তিনি।
অমল শিন্ডের শিক্ষা সংক্রান্ত নথিপত্রও যাচাই করেছে পুলিশ। বাড়িতে রাখা সেই সব কাগজপত্র এবং তাঁর বাবা-মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এক অদ্ভুত তথ্য সামনে এসেছে। যে অমল এদিন সংসদে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন, তিনিই শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব নিতে চেয়েছিলেন। গত কয়েকদিন ধরে তিনি পুলিশে নিয়োগের পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। পরিবার ও গ্রাম থেকে দূরে থাকতেন। অমলের বাবা-মা জানিয়েছেন, দিন পনেরো আগে তিনি দিল্লি যাচ্ছেন বলে বাড়ি ছেড়েছিলেন। কিন্তু, কেন তিনি দিল্লি যাচ্ছেন, সেখানে কী কাজ রয়েছে, কার কার সঙ্গে দেখা করবেন, বা কারা তাঁর সঙ্গে ছিলেন – এইসকল বিষয়ে বাবা-মাকেও কিছুই জানায়নি সে। পুলিশ এখন এই প্রশ্নগুলির উত্তরই খুঁজছে।