পটনা: ভবিষ্যতের উকিল-ব্যারিস্টাররা তৈরি হন আইন কলেজে। এমনই এক আইন কলেজের অন্দরে ঘটে গেল চরম বেআইনি এক কাজ। বিহারের পটনার সুলতানগঞ্জ আইন কলেজের ক্যাম্পাসে, ২২ বছর বয়সী এক ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করেছে মুখোশধারী কিছু দুষ্কৃতী। সোমবার (২৭ মে), আইন কলেজে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন ওই ছাত্র। এরপরই তার উপর চড়াও হয় দুষ্কৃতী দলটি। মঙ্গলবারই অবশ্য প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, গত বছর একটি ডান্ডিয়া অনুষ্ঠানে হওয়া বিবাদের জেরেই নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে ওই যুবককে।
নিহত যুবকের নাম হর্ষ রাজ। বিএন কলেজে ভোকেশনাল ইংরেজির তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল সে। সোমবার সুলতানগঞ্জ আইন কলেজে যাওয়ার পর, মুখোশে মুখ ঢেকে দুষ্কৃতীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে চড়াও হয়েছিল তার উপর। ক্যাম্পাসের সিসিটিভি ক্যামেরার এই হত্যার ঘটনা ধরা পড়েছে। দেখা গিয়েছে, হামলাকারীরা লাঠি দিয়ে হর্ষকে আঘাত করেই চলেছে। এই সিসিটিভি ফুটেজ দেখেই অভিযুক্তদের সনাক্ত করে পুলিশ।
Live @murder of a Bhumihar student caught on camera at Patna University campus. Harsh Raj was a student leader who was lynched by 20-30 Shoshit Vanchits at the university campus. They beaten the guy to de@th. This is very disheartening to see that no media cries when a… pic.twitter.com/x4uiHgCHiL
— Shubham Sharma (@Shubham_fd) May 28, 2024
মারের চোটে গুরুতর আহত হন হর্ষ। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। তারপর তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসা চলাকালীনই তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল গত বছর দশেরার সময়। একটি ডান্ডিয়া অনুষ্ঠানে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঝগড়ার হয়েছিল। তাদের মধ্যে এখনও উত্তেজনা বজায় রয়েছে। এর জেরেই এই হামলার পরিকল্পনা করেছিল হামলাকারীরা। সিটি এসপি (পূর্ব) ভরত সোনি জানিয়েছেন, “এটা একটি স্পষ্ট ৩০২ ধারার (খুন) মামলা।”
#WATCH | Patna, Bihar: On student beaten to death, City SP (East), Bharat Soni says, “Harsh Raj, a third-year student of B.N. College pursuing vocational English course came to Sultanganj Law college to appear for an exam…..10-15 boys wearing masks started hitting him…Harsh Raj… pic.twitter.com/WpHcsrxht7
— ANI (@ANI) May 28, 2024
তিনি বলেন, “গতকাল আইন কলেজে একটি জঘন্য অপরাধ হয়েছে। কিছু অসামাজিক ব্যক্তি, হর্ষ রাজ নামে এক ছাত্রকে বেধড়ক মারধর করে। মারের চোটে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার তদন্তের জন্য, আমরা একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করেছি। মূল অভিযুক্তকে আমরা গ্রেফতার করেছি। তার নাম চন্দন যাদব। সে তার অপরাধ স্বীকারও করেছে। আমরা অন্য অপরাধীদের ধরার চেষ্টা করছি।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক বিতর্কও উসকে উঠেছে। বিহারের মন্ত্রী তথা জেডিইউ নেতা অশোক চৌধুরী বলেছেন, কোনও নিন্দাই এই ঘটনার জন্য যথেষ্ট নয়। তিনি বলেন, “আমি এই ঘটনার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। দোষীদের শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে। এই সঙ্কটের সময়. ছাত্রের পরিবারের পাশে আছে আমাদের সরকার।” এদিকে, নীতিশ কুমারের নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের সমালোচনা করেছে বিরোধীরা। আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব বলেছেন, “অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। এনডিএ সরকার গঠনের পর থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিন দিন অবনতি হচ্ছে। প্রশাসনের উপর তাদের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। আমাদের মেয়াদে এমনটা হলে, ওরা রাস্তায় নেমে ‘জঙ্গলরাজ’ বলে চিৎকার করত।”