নয়া দিল্লি: ইজরায়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাসের মাধ্যমে দেশের একাধিক রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক, আইনজীবীদের ফোনে আড়িপাতার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। আর সেই অভিযোগের স্বাধীন তদন্তের দাবি জানিয়ে একাধিক মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। আজ মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতে ছিল সেই মামলার শুনানির দ্বিতীয় দিন। এ দিন আদালতের বাইরে পেগাসাস সম্পর্কিত আলোচনা নিয়ে কড়া বার্তা দেয় সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের তরফে স্পষ্ট জানানো হয় যে বিষয়টা যখন আদালতের বিচারাধীন তখন সোশ্যাল মিডিয়া বা অন্য কোথাও তা নিয়ে আলোচনা না হওয়াই উচিৎ। এর আগে সুপ্রিম কোর্ট জানায় যে যদি এই রিপোর্ট সত্যি হয় তাহলে অভিযোগ সত্যিই গুরুতর। প্রধান বিচারপতি এনভি রামাণের ডিভিশন বেঞ্চে চলছে এই মামলার শুনানি। কেন্দ্রের তরফ থেকে এ দিন সময় চাওয়া হয়েছে, তাই শুনানি স্থগিত হয়ে গিয়েছে। আগামী সোমবার ফের শুনানি হবে। তিন বিচারপতির বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি এনভি রামণ, বিচারপতি বিনীত সরণ ও বিচারপতি সূর্য কান্ত।
সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা নয়:
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সব আবেদনকারীকেই আদালতের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। কেউ টুইটার বা কোনও সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করবেন না। আদালতে এসে কথা বলুন। আমরা সমান্তরাল কোনও বিতর্ক চাই না। সিস্টেমে আস্থা রাখুন। একটা শৃঙ্খলা থাকা প্রয়োজন। যদি আদালতের নজরে কিছু আনতে চান, তাহলে হলফনামা জাম দিন। আদালতের বাইরে কোনও বিতর্ক আমরা চাই না।’
সময় চাইলেন তুষার মেহতা:
আগের শুনানিতে আবেদনকারীদের বলা হয়েছিল যাতে কেন্দ্রকে আবেদনের কপি দেওয়া হয়। আজ কেন্দ্রের তরফে সলিস্যিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘আমি আবেদনের কপি পেয়েছি। আমার এটা পড়তে কিছু সময় লাগবে। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ প্রয়োজন।’ শুক্রবার পর্যন্ত সময় চান তিনি। তাঁকে সময় দেয় আদালত। সোমবার ফের এই মামলার শুনানি হবে বলে জানান প্রধান বিচারপতি।
গত সপ্তাহে এই মামলার প্রথম শুনানিতে বিচারপতি দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছিলেন। এক, কেন আবেদনকারীরা কোনও এফআইআর করেননি? দুই, ২০১৯-এ যে পেগাসাস নিয়ে অভিযোগ সামনে এসেছে তা নিয়ে দু’বছর পর কেন মামলা হল? শুধুমাত্র সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে মামলা হয়েছে। তাই বিচারপতির দাবি, আবেদনকারীদের আরও বেশি তথ্য দিতে হবে।
কেন এফআইআর করা হয়নি সেই প্রশ্নের উত্তরে আইনজীবী কপিল সিবল জানিয়েছিলেন, ‘যেহেতু পেগাসাস কোনও দেশের সরকারকেই শুধুমাত্র বিক্রি করা হয়, তাই পৃথক কোনও ব্যক্তির কাছে এই সংক্রান্ত তথ্য নেই। আর দু’বছর পর কেন মামলা হল, সেই প্রসঙ্গে সিব্বল জানান সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই এই মামলা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি তখন জিজ্ঞেস করেন ২০১৯-এ এই রিপোর্ট এসেছিল। সিবল জবাব দেন, তখনও এই স্পাইওয়্যারের বিস্তৃতি সম্পর্কে জানা ছিল না। আরও পড়ুন: যুগান্তকারী নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের, ‘অপরাধে যুক্ত’কে দল কেন প্রার্থী করেছে জানাতে হবে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে