যুগান্তকারী নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের, ‘অপরাধে যুক্ত’ জননেতার নথি জমা দিতে হবে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে

Supreme Court: সুপ্রিম কোর্ট এদিন নির্দেশ দিয়েছে, প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল যখন তাদের কোনও সদস্যকে ভোটে লড়ানোর সিদ্ধান্ত নেবে, মনোনয়নের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেই সদস্যর বিস্তারিত জানাতে হবে।

যুগান্তকারী নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের, 'অপরাধে যুক্ত' জননেতার নথি জমা দিতে হবে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে
সুপ্রিম কোর্টের কাছে কড়া ভাষায় ধমক খেল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 10, 2021 | 5:20 PM

নয়া দিল্লি: জনপ্রতিনিধিদের অপরাধ-যোগ প্রকাশ্যে আনতে হবে। মনোনীত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তা সামনে আনতে হবে। মঙ্গলবার যুগান্তকারী নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। ২০২০ সালে রাজনীতিকে অপরাধ-মুক্ত করতে বড় পদক্ষেপ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। এবার সেই নির্দেশকেই আরও কিছুটা কঠোর কড়া হল বলে মনে করা হচ্ছে।

সুপ্রিম কোর্ট এদিন নির্দেশ দিয়েছে, প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল যখন তাদের কোনও সদস্যকে ভোটে লড়ানোর সিদ্ধান্ত নেবে, মনোনয়নের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেই সদস্যর বিস্তারিত জানাতে হবে। বিশেষত, তাঁর যদি অতীতে কোনও অপরাধের রেকর্ড থাকে তা সামনে আনতে হবে। একই সঙ্গে আদালতের নির্দেশ, একজন অপরাধ যোগ থাকা ব্যক্তিকে কেন জনপ্রতিনিধি করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে তার ব্যাখ্যাও দিতে হবে দলকে।

২০২০ সালে বিহারে বিধানসভা ভোটের সময় দেখা গিয়েছিল প্রায় ৩১ শতাংশ প্রার্থীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। এ নিয়ে আদালত রায় দিলেও তাতে খুব একটা কাজ হয়নি বলেই অভিযোগ উঠেছিল। এরপরই সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি নিয়ে ভর্ৎসনা করে বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলকে। তখনই আদালত জানিয়েছিল, কোনও প্রার্থীর যদি ক্রিমিনাল রেকর্ড থাকে তা মনোনয়নপত্রে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করতে হবে। নির্বাচিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কিংবা মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার কমপক্ষে দু’ সপ্তাহ আগে সেই বিস্তারিত জমা দিতে বলা হয়। এদিন সুপ্রিম কোর্ট সেই সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দিল। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই তা জানাতে হবে।

একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের রোষে পড়ে দেশের ৯টি রাজনৈতিক দল। বিজেপি কংগ্রেস-সহ ৯টি দলকে জরিমানা। প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গোপনে এই জরিমানা করেছে আদালত। বিহার ভোটের সময় অভিযোগ আড়াল করা হয়। বিজেপি-কংগ্রেসের জরিমানা ১ লক্ষ টাকা। সিপিএম, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি বা NCP-এর জরিমানা ৫ লক্ষ টাকা করে।

এ প্রসঙ্গে আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা বলেন, “রাজনীতির সঙ্গে যদি অপরাধ জড়িয়ে থাকে সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক। গণতন্ত্রের বিরোধী। তবে সম্মানীয় সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সম্পূর্ণ কুর্নিশ জানিয়ে মাথা নত করেই বলছি এই রায়ের কিন্তু অপপ্রয়োগও হতে পারে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল কারও নামে যদি ক্রিমিন্যাল কমপ্লেন করেন তা হলে সেটাই ভোটে হাতিয়ার হয়ে যাবে। আমরা কিছুটা সন্দিহান হচ্ছি এটা আবার সে ভাবে ব্যবহার করা হবে না তো?”

বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারের কথায়, “এটাই হওয়া উচিৎ। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে রাজনৈতিক আন্দোলন করতে গিয়ে যে সব কেস নথিভুক্ত হয় নেতাদের উপর সেটা আলাদা করা ও অন্যান্য অপরাধমূলক ঘটনা আলাদা করা।” অন্যদিকে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়, “বিজেপি নেতারা অপরাধে যুক্ত। সারা ভারতবর্ষের তত্ত্ব তাই বলছে। অন্যান্য দলের নেতারাও আছে। বাংলায় বিজেপির পাশাপাশি তৃণমূলের নেতারাও আছে। অপরাধের সঙ্গে যুক্ত নেতাদের আটকাতে চাইলে, এই রায়কে অবশ্যই স্বাগত জানানো উচিৎ।”

তবে তৃণমূলের কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের প্রতিক্রিয়া, “৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট জানাতে বলেছে। আমি লজ্জিত, ব্যাথিত এবং দুঃখিত! দু’বছর কাস্টডিতে ছিলাম, আমার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ জানতেই পারলাম না। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কী করে জানাব? আমি তো জানতেই পারিনি কেন দু’ বছর আমাকে গ্রেফতার করে রাখা হয়েছিল। তবে এটা পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোটের আগে বেরোলে ভাল হতে। তা হলে মজাটা আরও ভাল হত।” আরও পড়ুন: আজ দুপুরেই রাজ্যপালের দরবারে শুভেন্দু, বাগনান-গণধর্ষণ নিয়ে অভিযোগ জানাতে পারেন জগদীপ ধনখড়কে