কোচি : যাঁরা মদ কিনছেন, তাঁদের সঙ্গে যেন গরু – ছাগলের মতো করে ব্যবহার না করা হয়। বৃহস্পতিবার কেরল হাইকোর্টের (Kerala High Court) তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, যাঁরা যাঁরা রাজ্য সরকারের অধীনস্ত মদের দোকানগুলিতে যান, তাঁদের সঙ্গে গরু, ছাগলের মতো করে ব্যবহার করা যাবে না। কেরল হাইকোর্টের বিচাপতি দেভান রামচন্দ্রন (Devan Ramchandran) তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, কেরল স্টেট বেভারেজের কর্পোরেশন (BEVCO) যে মদের দোকানগুলি চালায়, সেগুলিতে পরিকাঠামো কখনও পর্যাপ্ত বলা যায় না।
৭ সেপ্টেম্বর কেরল হাইকোর্টের কাছে একটি আবেদন জমা পড়েছিল। সেখানে কোট্টায়ামের এক মহিলা হাইকোর্টের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন, তাঁর বাড়ির পাশেই একটি ব্যাঙ্ক রয়েছে। এখন সেই ব্যাঙ্কের কাছেই একটি মদের দোকান বসানোর কথা হচ্ছে।
শুনানি চলাকালীন কেরল হাইকোর্ট আরও জানিয়েছে, এরপর পরিকাঠামোগত আর একটিও অভিযোগ জমা পড়লে কেরল সরকারের রাজস্ব কমিশনারকে ডেকে পাঠানো হতে পারে। কেরল হাইকোর্টের তরফে আরও বলা হয়েছে, সরকার বিক্রি মদ বিক্রি করুক, কিংবা নাগরিকরা মদ কিনুক, তা নিয়ে আদালতের কোনও মাথা ব্যাথা নেই। কিন্তু সামগ্রিকভাবে নাগরিকদের প্রাপ্য সম্মান অবশ্যই দিতে হবে।
আদালত স্পষ্ট করে জানিয়েছে, কেরল সরকারের অধীনস্ত মদের দোকানগুলিতে যাঁরা মদ কিনতে যান, তাঁদের সঙ্গে কোনওভাবেই গরু ছাগলের মতো ব্যবহার করা যাবে না। একইসঙ্গে যাঁরা মদের দোকানগুলির আশেপাশে দিয়ে যান, তাঁরাও যাতে কোনওভাবে কোনও অপ্রস্তুত না বোধ করেন, সেই ব্যবস্থাও করতে হবে।
বিচারপতি দেভান রামচন্দ্রন নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথাও তুলে ধরেছেন মামলার শুনানির সময়। বলেন, “মদের দোকানগুলির বাইরে যেভাবে লম্বা লাইন পড়ে, তা দেখে আমি ব্যক্তিগতভাবে অপ্রস্তুত বোধ করি।” অবশ্য তিনি এও বলেন, অনেকেই অবশ্য মনে করেন, মদের দোকানের বাইরে এই লম্বা লাইন নাকি অনেক বেশি শৃঙ্খলপরায়ণতা বোঝায়।
মদের দোকানগুলির পরিকাঠামোগত উন্নতি করতে সরকার কী কী ব্যবস্থ নিচ্ছে তা আগামী এক মাসের মধ্যে আদালতের কাছে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কেরল হাইকোর্টে বলা হয়েছে, আদালতে এমন প্রায় ৫০ টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ আবেদনই জমা পড়েছে মহিলাদের থেকে। একাধিক মহিলা আদালতে অভিযোগ জানিয়েছেন যে তাঁরা বাড়ি থেকে বেরোতো ভয় পাচ্ছেন। কারণ, তাঁদের বাড়ির কাছেই একটি মদের দোকান রয়েছে। বাড়ি থেকে বেরোতে হলে, তাঁদের সেই মদের দোকানের সামনে দিয়েই যেতে হবে। এমন বেশ কিছু অভিযোগ আদালতে জমা পড়েছে। কেরলের রাজস্ব দফতরকে দ্রুত বিষয়গুলি দেখে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেরল হাইকোর্ট। মামলাটির পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য্য করা হয়েছে ১৮ অক্টোবর।
আরও পড়ুন : রেস্তরাঁয় হুক্কা পরিবেশন নিয়ে কী ভাবছে সরকার? জানতে চাইল দিল্লি হাইকোর্ট