নয়া দিল্লি : ভোটাধিকার একটি গণতান্ত্রিক অধিকার। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রে ভোটদান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। ভোটবাক্সে নিজের মতামত প্রতিফলিত করে নিজেদের প্রতিনিধি বেছে নেয় ভারতের জনগণ। এবং সেই প্রক্রিয়ায় সকল ভারতীয় জনগণের অংশগ্রহণ করা উচিত। মঙ্গলবার জাতীয় ভোটার দিবসে প্রধানমন্ত্রী এরকমই বার্তা দিলেন। আজ তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং দেশের নাগরিকদের পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে শুরু করে সাধারণ নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর দিকে মনোনিবেশ করতে বলেছেন।
জাতীয় ভোটার দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) কর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, “ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ তম বছরে, আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত যে আমরা নির্বাচনে ৭৫ শতাংশ ভোট নিশ্চিত করব”। তিনি কর্মীদের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন, যে প্রতিটি নির্বাচনে মোট ভোটারের উপস্থিতি যেন কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ হয়। মোদি বলেছেন যে, প্রথম সাধারণ নির্বাচনের পর থেকে ভোটের শতাংশ (৪৫%) বেড়েছে। তবে এখনও অনেকটাই কম এবং সেইদিকে সমস্ত রাজনৈতিক দলের মনোযোগ প্রয়োজন। তিনি আরও বলেছেন, ২০১৯ সালের শেষ সাধারণ নির্বাচনে, ভোটের হার ছিল ৬৭ শতাংশ। তিনি বলেছেন, “মহিলা ভোটারের শতাংশ… বেড়েছে। কিছু কিছু জায়গায়, ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে পুরুষদের চেয়ে মহিলারা বেশি এগিয়ে রয়েছেন। কিন্তু ভোটের হার এখনও কম এবং এ বিষয়ে সবার মনোযোগ প্রয়োজন। সব রাজনৈতিক দল ও নাগরিকদের এ বিষয়ে ভাবা প্রয়েজন।”
শহর এলাকার মানুষদের ভোটদানে অংশগ্রহণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মোদী। তিনি বলেছেন যে, শহুরে এলাকায়, যেখানে লোকেদের উন্নত শিক্ষা এবং আরও বেশি সংস্থান রয়েছে, সেখানে ভোটদানের ক্ষেত্রে উদাসীনতা লক্ষ্য করা যায় এবং ভোটের শতাংশও কম। তিনি বলেছেন, “শহুরে এলাকায়… লোকেরা সোশ্যাল মিডিয়ায় সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে, (কিন্তু) এখনও ভোট দেয় না। ভারতের মতো প্রাণবন্ত গণতন্ত্রে এর পরিবর্তন হওয়া দরকার।” ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য ভারতের নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন মোদী। তিনি আরও বলেছেন যে, জাতীয় নির্বাচন কমিশন নাগরিকদের জন্য বছরে চারবার ভোটার হিসাবে নিবন্ধন করার ব্যবস্থা করেছে এবং ৮০ বছরের বেশি বয়সী এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা করেছে।
মোদি “এক দেশ, এক নির্বাচন” পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন। মোদী জানান যে “এক দেশ, এক নির্বাচনের” বিষয়টি তিনি নিজেও সমর্থন করেন এবং এই বিষয়ে আরও গভীরভাবে আলোচনা হওয়া উচিত। গণতন্ত্রে যত আলোচনা হবে তত দেশের বিকাশ ঘটবে। মোদী বলেছেন, যে বারবার নির্বাচন কীভাবে উন্নয়নকে প্রভাবিত করে তা নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার। “বারবার নির্বাচনের কারণে প্রতিটি পদক্ষেপ রাজনৈতিক প্রিজমের মধ্য দিয়ে দেখা হয়। উদাহরণস্বরূপ, আজ আমি পান্না প্রধানদের (প্রতিটি ভোট তালিকার দায়িত্বে থাকা বিজেপির কর্মীরা) কাছে পৌঁছতে এবং দলীয় কর্মীদের সাথে কথা বলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমি লক্ষ্য করেছি সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু লোক মন্তব্য করেছে যে মোদী ইতিমধ্যে নির্বাচনের কথা ভাবছেন।” মোদী বিজেপি কর্মীদের অনুরোধ করেছেন যাতে তাঁরা মানুষের সাথে সংযুক্ত থাকে এবং তাদের পার্টির মাইক্রো-অনুদান অনুশীলনে অংশগ্রহণ করতে উৎসাহিত করে। তিনি তাঁদের অপুষ্টি দূর করতে সরকারের কর্মসূচিতে নাগরিকদের অংশগ্রহণও নিশ্চিত করতে বলেন।