লখনউ: ভোটের আগে উত্তর প্রদেশের জন্য ফের বড়সড় উপহার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। আগামী ১১ ডিসেম্বর সরযূ ক্যানাল প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন মোদী। উত্তর প্রদেশের বাহরাইচ, গোন্ডা, সন্ত কবীর নগর, বলরামপুর, গোরক্ষপুরের মতো এলাকার ওপর দিয়ে তৈরি হচ্ছে সেই প্রকল্প। এই প্রকল্প চালু হলে ২৫ লক্ষ কৃষক উপকৃত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের জন্য খরচ হচ্ছে ৯ হাজার ৮০২ কোটি টাকা।
এই প্রকল্প সম্পূর্ণ হলে মূলত কৃষিকাজে সুবিধা হবে। সেচ ব্যবস্থা উন্নত করতে এই প্রকল্প কাজ করবে বলে মনে করা হচ্ছে। ১৪.০৪ লক্ষ হেক্টর চাষের জমিতে কাজ করতে সুবিধা হবে। বন্যার প্রবণতা কমবে ওই এলাকায়। নেপাল থেকে জল ঢুকে এই অঞ্চলের চাষের জমিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়। সেই সম্ভাবনা কমাতেই এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা যে ৯৯ টি প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পূর্ণ করার কথা বলেছিলেন, তার মধ্যে এটি একটি। উত্তর প্রদেশের জল শক্তি মন্ত্রী মহেন্দ্র সিং জানান, ১৯৭১ থেকে এই প্রকল্পের কাজ আটকে ছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হাতে নেওয়ার পর সেই কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়েছে। গত রবিবারই সেই কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েচেন তিনি। এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সরযূ ক্যানাল প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ। রেল ব্রিজ তৈরির কাজও প্রায় শেষের পথে।
এই প্রকল্পে যুক্ত হচ্ছে পাঁচটি নদী, ঘাগরা, সরযূ, রাপ্তি, বনগঙ্গা ও রোহিন। ৩১৮ কিলোমিটারের মূল খালের সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে ৬৬০০ খাল। জল শক্তি মন্ত্রী মহেন্দ্র সিং আরও জানান, মূলত বন্যা সংক্রান্ত সমস্যা কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে এই প্রকল্প। মাহসি, কাইসেরগঞ্জের মতো এলাকায় নেপাল থেকে জল ঢোকে, ফলে বন্যা হয়। খাল তৈরি হয়ে গেলে সেই সম্ভাবনা কমবে।
১৯৭৮ সালে এই প্রজেক্টের কাজ প্রাথমিকভাবে শুরু করে উত্তরপ্রদেশ সরকার। সেই সময় বরাদ্দ করা হয়েছিল ৭৮ কোটি টাকা। প্রাথমিক ভাবে দুটি জেলা মিলিয়ে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। চার বছর বাদে ১৯৮২ সালে নটি জেলা জুড়ে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। তখন এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছিল সরযূ ক্যানাল ন্যাশনাল প্রজেক্ট। ২০২১-এ এই প্রকল্পের বরাদ্দ বাড়িয়ে করা হয় ৯ হাজার ৮০২ কোটি টাকা। পাশাপাশি সেচের জন্য ৩ লক্ষ হেক্টরের বদলে ১৪ লক্ষ হেক্টর জমিতে কাজ হয়।
প্রকল্পের কাজ দীর্ঘদিন ধরেই পড়েছিল। ২০১৭ সালে যোগী আদিত্যনাথ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রজেক্টে বরাদ্দ অনেকটা বাড়িয়ে দেন। তারপর থেকেই হু হু করে এগোতে শুরু করে কাজ। সরযূ ক্যানেলটি তৈরি হয়েছে বাহরাইচে ঘাগরা নদীর ওপর মির্জাপুর ব্যারেজের কাছে। আবার রাপ্তি নদীর খাল তৈরি হয়েছে শ্রাবস্তীতে। বাস্তি এবং গোন্ডা জেলার কৃষকদের এতে বিশেষ উপকার হবে বলে জানিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।
আরও পড়ুন: Coronavirus: জমায়েতই ডেকে আনল বিপদ! একই মেডিক্যাল কলেজে করোনা আক্রান্ত ৪৮ পড়ুয়া