নয়া দিল্লি: গ্রুপ অফ সেভেন বা জি৭ (G7) এবং কোয়াড (Quad)-সহ তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বহুপাক্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে শুক্রবার (১৯ মে) ৪ দিনের বিদেশ সফরে রওনা হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চারদিনের ঝটিতি সফরে তিনি জাপান, পাপুয়া নিউ গিনি এবং অস্ট্রেলিয়ায় যাবেন। প্রধানমন্ত্রীর এই সফর তাঁর অন্যতম ব্যস্ত সফর হতে চলেছে। সব মিলিয়ে ৪০টিরও ইভেন্টে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। শীর্ষ সম্মেলনগুলির পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের মাধ্যমে অন্তত ২৪ জনেরও বেশি রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে আলোচনায় মিলিত হওয়ার কথা রয়েছে তাঁর।
সফরের প্রথম ধাপে, ১৯ থেকে ২১ মে পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী মোদী হিরোশিমায় যাবেন। সেখানে তিনি জি৭ গোষ্ঠীর বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই সম্মেলনে তিনি খাদ্য, সার এবং শক্তি ক্ষেত্রে সুরক্ষা-সহ বর্তমান বিশ্ব যে চ্যালেঞ্জগুলির সম্মুখীন হচ্ছে, সেগুলির বিষয়ে বক্তৃতা দেবেন। জাপান থেকে পাপুয়া নিউ গিনির পোর্ট মোরেসবিতে যাবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ২২ মে সেখানে তিনি সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী জেমস মারাপের সঙ্গে, ‘ফোরাম ফর ইন্ডিয়া-প্যাসিফিক আইল্যান্ডস কোঅপারেশন’ বা ‘ফিপিক’ (FIPIC)-এর তৃতীয় শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। সফরের তৃতীয় এবং শেষ পর্যায়ে, প্রধানমন্ত্রী মোদী অস্ট্রেলিয়া যাবেন। সেখানে তিনি অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজের সঙ্গে এক বৈঠক করবেন এবং ২৩ মে প্রবাসী ভারতীয়দের এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন।
কোয়াড শীর্ষ সম্মেলন এই বছর অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ওয়াশিংটনে এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যস্ততার কারণে অস্ট্রেলিয়া সফর স্থগিত করেছেন। তাই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এই সম্মেলন এখন হিরোশিমাতেই অনুষ্ঠিত হবে। বিদেশ সচিব বিনয় কোয়াত্রা এই শীর্ষ সম্মেলনের বিশদ বিবরণ না দিলেও, জানিয়েছেন যে এই বৈঠক থেকে আগামী দিনে কী কী পদক্ষেপ নেবেন কোয়াড দেশগুলি, তার রূপরেখা তৈরি হবে।
জি৭ শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের নিয়মিত অংশগ্রহণ, এই গোষ্ঠীতে ভারতের ক্রমবর্ধমান স্বীকৃতির ইঙ্গিতবাহক বলে মন্তব্য করেঠেন বিনয় কোয়াত্রা। এই শক্তিশালী আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর বর্তমান সভাপতি দেশ জাপান। জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিশিদা ফুমিও কিশিদা ভারতের প্রদানমন্ত্রীকে অতিথি হিসেবে এই শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ, অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, আঞ্চলিক সমস্যা, জলবায়ু পরিবর্তন, জ্বালানি নিরাপত্তা, খাদ্য ও স্বাস্থ্যগত সুরক্ষার মতো বিষয়গুলি নিয়ে এই সম্মেলনে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
বিদেশ সচিব আরও জানিয়েছেন, জি৭ সম্মেলনের পাশাপাশি, হিরোশিমায় মহাত্মা গান্ধীর একটি আবক্ষ মূর্তির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সেই সঙ্গে মূল সম্মেলনের ফাঁকে ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী একাধিক রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করবেন। এই বৈঠকগুলি আয়োজন নিয়ে শেষ মুহূর্তের আলোচনা চলছে। অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার সময় অস্ট্রেলিয়ায় ভারতীয়দের উপর হামলার সাম্প্রতিক ঘটনাগুলি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। তারপর, আলবেনিজকে সঙ্গে নিয়েই সিডনিতে হাজার হাজার প্রবাসী ভারতীয়দের সামনে ভাষণ দেবেন মোদী।