নয়া দিল্লি: স্বাধীনতার সাত দশক পেরিয়ে গিয়েছে, এখনও সার্বজনীন টিকাকরণ (Universal Immunization) কেন্দ্রের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়েই রয়েছে। সরকারি নথি অনুযায়ী, ২০১৩ সালে দেশের সম্পূর্ণ টিকাকরণের হার মাত্র ৫৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছিল। এদিকে নবজাতকদের মৃত্যু হার এখনও বেশি। ৫ বছর বয়সী ১ হাজার শিশুদের মধ্যে ৪৯ জন শিশুরই মৃত্যু হয় নানা অসুস্থতার কারণে। সেই কারণেই ২০১৪ সালে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরই, তাদের প্রথম উদ্যোগ ছিল টিকাকরণ। মিশন ইন্দ্রধনুষের আওতায় দেশের ৯০ শতাংশ শিশুকেই টিকাকরণের উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
মিশন ইন্দ্রধনুষের প্রথম দুটি ধাপেই এক বছরে টিকাকরণের হার ৬.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। পঞ্চম দফার মিশন ইন্দ্রধনুষের পর ১৯০টি জেলায় সমীক্ষা চালানোর পর দেখা গিয়েছে, দেশে টিকাকরণের হার ১৮.৫ শতাংশ বেড়েছে। পঞ্চম দফার এই টিকাকরণ অভিযানে কেন্দ্রের প্রধান লক্ষ্যই ছিল দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলি, যেখানে টিকাকরণের হার সর্বনিম্ন এবং আংশিক টিকাপ্রাপ্ত বা টিকা পায়নি, এমন শিশুর সংখ্যা সর্বাধিক।
মূলত ১২টি প্রতিরোধযোগ্য রোগ, যেমন ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, টিটেনাস, পোলিও, টিউবারকুলোসিস, হেপাটাইটিস বি, মেনিনজাইটিস, নিউমোনিয়া, হেপোফিলিয়াস ইনফ্লুয়েঞ্জা টাইপ বি সংক্রমণ, জাপানিজ এনফেলাইটিস, রোটাভাইরাস ভ্যাকসিন, নিউমোক্কাল কনজুগেট ভ্যাকসিন ও মিসেলস রুবেলা-র টিকা দেওয়া হয়।
পঞ্চম দফার ইন্দ্রধনুষ কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর থেকে এখনও অবধি প্রায় ৪ কোটি শিশু ও প্রায় ১ কোটি গর্ভবতী মহিলা টিকা পেয়েছেন। তবে ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে দেশে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় এই কর্মযজ্ঞে কিছুটা ছেদ পড়ে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে দুই দফায় টিকাকরণ কর্মসূচির মাধ্যমে প্রায় ৯.৫ লক্ষ শিশু ও ২.২ লক্ষ গর্ভবতী মহিলা টিকা পেয়েছেন। ২০২১ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই ৩০ লক্ষ শিশু টিকা পেয়েছেন। দেশের ৭০০টি জেলায় মিশন ইন্দ্রধনুষের ১০ দফা সম্পূর্ণ হয়েছে।
অন্যতম বড় জনস্বাস্থ্য কর্মসূচি মিশন ইন্দ্রধনুষের লক্ষ্য হল প্রতি বছর ৩ কোটি গর্ভবতী মহিলা ও ২.৬ কোটি নবজাতক শিশুকে টিকা দেওয়া। ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে, ১২ থেকে ২৩ মাসের শিশুদের সম্পূর্ণ টিকাকরণের হার বেড়ে ৭৬.৪ শতাংশে বেড়ে দাঁড়িয়েছে।
অন্যদিকে, ২০২০ সালে ৫ বছরের কমবয়সীদের মৃত্যুহারও প্রতি ১ হাজারে ৩৩-এ নেমে এসেছে। দ্রুত এই মৃত্যুহার হ্রাস পাচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। মোদী সরকারের অন্যতম দুটি সাফল্যের মাইলফলক হল ২০১৪ সালে পোলিও এবং ২০১৫ সালে নিওন্যাটাল টিটেনাসকে দেশ থেকে সম্পূর্ণ দূরীকরণ সম্ভব হয়েছে।