PM Modi announces Precaution Dose: নতুন বছরের শুরুতেই ছোটদের করোনা টিকা, ‘প্রিকশন ডোজ়’ স্বাস্থ্যকর্মীদেরও; কী বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা?

COVID Vaccine for children aged 15-18 years: দ্বিতীয় ডোজ় কবে শেষ হবে, তারপর বুস্টার ডোজ় শুরু হবে - তা করতে গেলে অনেকটা দেরি হয়ে যেত। তাই এই সিদ্ধান্তটা নেওয়া খুব দরকার ছিল। বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

PM Modi announces Precaution Dose: নতুন বছরের শুরুতেই ছোটদের করোনা টিকা, 'প্রিকশন ডোজ়' স্বাস্থ্যকর্মীদেরও; কী বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা?
নতুন বছরের শুরুতেই, অভয়বাণী প্রধানমন্ত্রীর
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 26, 2021 | 12:38 AM

নয়া দিল্লি ও কলকাতা : বড়দিনে বড় ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। শনিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন, ৩ জানুয়ারি থেকে ১৫ বছর বয়সি থেকে ১৮ বছর বয়সিদের করোনা টিকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। তিনি আরও বলেন, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে, বিশেষ করে টিকাকরণের ক্ষেত্রে প্রথম থেকেই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করেছে ভারত। এবার সেই পথে হেঁটেই করোনা টিকার তৃতীয় ডোজ় দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। ১০ জানুয়ারি থেকে দেওয়া হয়ে করোনা টিকার প্রিকশন ডোজ় (COVID 19 Precaution Dose)। স্বাস্থ্যকর্মীরা এবং যাঁরা একেবারে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করছেন, প্রথম পর্যায়ে তাঁদের দেওয়া হবে এই প্রিকশনারি ডোজ়। একইসঙ্গে ষাটোর্ধ্ব নাগরিকরা যাঁদের কোমর্বিডিটি রয়েছে, তাঁদেরও এই প্রিকশন ডোজ় দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অবশ্যই দরকার।

ইউরোপ এবং আফ্রিকার এক বিস্তীর্ণ এলাকা বর্তমানে করোনার চতুর্থ ঢেউয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের ধাক্কা সামাল দিতে বিভিন্ন দেশগুলি করোনার বুস্টার ডোজ়ের পথে হাঁটছে। ভারতে কবে থেকে করোনার বুস্টার ডোজ় শুরু হবে, তা নিয়ে বিগত বেশ কিছুদিন ধরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। এবার সেই দুশ্চিন্তার অবসান হল। করোনার বিরুদ্ধে লড়াই আরও জোরদার করতে আগামী বছর থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে করোনারর তৃতীয় ডোজ় দেওয়ার প্রক্রিয়া। তবে এটিকে সরাসরি বুস্টার ডোজ় বলছেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি এটিকে বলছেন প্রিকশন ডোজ়।

প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর বিশিষ্ট চিকিৎসক কুণাল সরকার জানান, “বেশ কিছু অনিশ্চয়তা দূর হল। আমার এতদিন দেখেছি, দেশের ভ্যাকসিন উৎপাদনে আমরা মূলত একটি টিকার উপরই নির্ভরশীল ছিলাম, তা হল কোভিশিল্ড। আমাদের দেশে টিকা উৎপাদনের গতিও কিছুটা কম ছিল। এই মুহূর্তে আমাদের হাতে কোনও বিজ্ঞানসম্মত ভিত্তি নেই যার থেকে বলা যায়, ১৮ উর্ধ্বদের টিকা দিয়ে খুব বড়সড় কিছু হয়ে গিয়েছে। তবে আমাদের মনে এটি অনেকটা আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কিছুটা সুরক্ষা দিয়েছে।” তাঁর মতে, এইতে পড়ুয়ারা অনেকটা উপকৃত হবে। ছোটদের করোনা টিকা চালু না হওয়ার কারণে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ব্যহত হচ্ছিল। এবার সেই সমস্যা কিছুটা মিটবে বলে আশাবাদী তিনি।

তবে একইসঙ্গে শিশুদের টিকার ক্ষেত্রে উপলব্ধ করোনা টিকার জোগান কতটা রয়েছে, তা নিয়েও কিছুটা সংশয়ে রয়েছেন চিকিৎসক কুণাল সরকার। বলেন, “শিশুদের ক্ষেত্রে আমরা কোভিশিল্ড ব্যবহার করতে পারছি না। কোভ্যাক্সিনের উৎপাদন এই মুহূর্তে খুব বেশি নেই বলেই জানি। জাইকোভ ডি-র উৎপাদন সম্পর্কেও আমাদের কাছে বিশেষ তথ্য জানা নেই।” একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, “বুস্টার ডোজ় হিসেবে কোভ্যাক্সিন ব্যবহারের কোনও তথ্য আমাদের হাতে নেই। আগামী কিছুদিনের মধ্যে এই সংক্রান্ত তথ্য আমাদের পরিষ্কার করতে হবে।”

বিশিষ্ট ভাইরোলজিস্ট সুমন পোদ্দার বলছেন, “সেকেন্ড ডোজ় এখনও অনেকে পাননি। অনেকের মধ্যে ঢিলেমি দেখা দিয়েছে। যা পরিস্থিতি, তাতে দুয়ারে ভ্যাকসিনের মতো একটি প্রকল্প চালু করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় ডোজ় কবে শেষ হবে, তারপর বুস্টার ডোজ় শুরু হবে – তা করতে গেলে অনেকটা দেরি হয়ে যেত। তাই এই সিদ্ধান্তটা নেওয়া খুব দরকার ছিল। তবে আমাদের কাছে করোনা টিকার পর্যাপ্ত স্টক রয়েছে কিনা, সেটা নিশ্চিত করা খুব জরুরি।”

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকারও। তাঁর মতে, “এই সিদ্ধান্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। ভারতের জনসংখ্যার প্রায় ৪১ শতাংশের বয়স ১৮ বছরের নীচে। গোটা ইউরোপ ও আফ্রিকায় চতুর্থ ঢেউ চলছে, আমাদেরও এটা মেনে নেওয়া উচিত যে এ দেশেও সংক্রমণের গ্রাফ কিছুটা বাড়বে। তাই করোনা যোদ্ধাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত খুব দরকার ছিল। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী আজ এও জানিয়েছেন দেশে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার আইসিইউ বেড তৈরি রাখা হয়েছে। অর্থাৎ, যদি অ্যাকটিভ কেস ২০ লাখও হয়ে যায়, তাও সেই পরিস্থিতির জন্য তৈরি ভারত।” একইসঙ্গে সাধারণ নাগরিকদের ব্যক্তিগত দায়িত্বের কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, রাষ্ট্র, সমাজ এবং ব্যক্তি – তিন পক্ষকেই নিজের নিজের দায়িত্ব পালন করতে হবে। একজন ব্যক্তি হিসেবে ভ্যাকসিন এবং মাস্ককে ব্যবহার করার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি।

আরও পড়ুন : Covaxin: ওমিক্রনের আতঙ্কের মাঝেই সুখবর, ১২ ঊর্ধ্বদের জন্য কোভ্যাক্সিনে অনুমোদন দেশে