নয়া দিল্লি: প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার পর থেকেই মহিলাদের শিক্ষা-সহ সামগ্রিক উন্নয়নের উপর বিশেষ জোর দেন নরেন্দ্র মোদী। মহিলাদের জন্য ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’, ‘উজ্জ্বলা যোজনা’-সহ একাধিক প্রকল্পও চালু করেন তিনি (PM Narendra Modi)। বুধবার গুজরাটের গান্ধীনগরে আয়োজিত G-20 বৈঠকেও সেই একই বার্তা শোনা গেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গলায়। তাঁর কথায়, “যখন মহিলারা সমৃদ্ধ হবে, তখন বিশ্ব সমৃদ্ধশালী হবে। অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন তাঁদের অগ্রগতির জ্বালানি-স্বরূপ এবং শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁরা সম্পূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করতে পারলে সমগ্র বিশ্বের উন্নতি হবে।”
গান্ধীনগরে তিনদিন ধরে আয়োজিত জি-২০-র মন্ত্রিসভার বৈঠকের মূল বিষয় হল, মহিলাদের ক্ষমতায়ন। সেই বৈঠকে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগদান করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় মহিলাদের ক্ষমতায়নের প্রসঙ্গ বলতে গিয়ে দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কথা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু নিজেকে অনুপ্রেরণাদায়ক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি আদিবাসী সমাজ থেকে এসেছেন। কিন্তু, বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রকে (ভারত) চালিত করছেন, আবার বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রতিরক্ষা বাহিনীর কম্যান্ডার-ইন-চিফ তিনি।”
পুরুষদের মতো মহিলাদেরও যে সমান অধিকার রয়েছে, সেটা সমস্ত নাগরিকের ভোটাধিকারের মাধ্যমে সংবিধানে উল্লিখিত বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। এপ্রসঙ্গে দেশে মহিলা জনপ্রতিনিধির সংখ্যার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “অর্থনৈতিক, পরিবেশ এবং সামাজিক বদলের মূল চাবিকাঠি হলেন নির্বাচিত মহিলা জনপ্রতিনিধিরা। ভারতে গ্রামীণ এলাকায় মোট ১৪ লক্ষ জনপ্রতিনিধির মধ্যে ৪৬ শতাংশ মহিলা।” এছাড়া দেশে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সংখ্যা বেড়েছে এবং করোনার সময় এই গোষ্ঠী বিশেষভাবে মহামারী মোকাবিলায় সাহায্য করেছেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি জানান, দেশের নার্সের ৮০ শতাংশের বেশি মহিলা। তাঁরা করোনা মহামারীর সময় প্রথমসারির যোদ্ধা হিসাবে কাজ করে গিয়েছেন। এছাড়া মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী মাস্ক, স্যানিটাইজার, গ্লাভস তৈরি করে সহায়তা করেছেন। তাই মহিলাদের ক্ষুদ্র ব্যবসায় এগিয়ে চলার জন্য সরকার সাহায্য করতে প্রস্তুত। মহিলাদের জন্য তাঁর সরকার স্বচ্ছ জ্বালানির ব্যবস্থা করেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এদিন মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি গান্ধীনগরে মহিলাদের ক্ষমতায়ন নিয়ে আয়োজিত জি-২০-র মন্ত্রিসভার বৈঠকে সূচনা করেন। এই বৈঠকে জি-২০ অন্তর্ভুক্ত দেশগুলির দেড়শোর বেশি প্রতিনিধি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্ক, রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রতিনিধিও।