নয়া দিল্লি: ভারতের অন্যতম ‘বন্ধু’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের রাষ্ট্রনেতাদের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের উপরেই গড়ে উঠেছে এই বন্ধুত্ব। মঙ্গলবার মার্কিন সফরে (US Visit) যাওয়ার আগে এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “দুই দেশের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হল আমাদের অংশিদারিত্ব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের নেতাদের মধ্যে অভূতপূর্ব পারস্পরিক আস্থা রয়েছে।” বর্তমান বিশ্বে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের দাবিদার বলেও জানান তিনি। তবে ভারত যে কোনও অবস্থাতেই সার্বভৌমত্বের সঙ্গে সমঝোতা করবে না এবং সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে আগ্রহী, তাও মার্কিন সফরে যাওয়ার প্রাক্কালে স্পষ্ট করে দেন প্রধানমন্ত্রী মোদী (PM Narendra Modi)।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত ক্রমশ আত্মনির্ভরশীল ও উন্নীত হয়ে উঠছে এবং বর্তমানে বিশ্বের মধ্যে ভারত নিজের অবস্থান তুলে ধরেছে বলেও বার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “আমরা ভারতকে কোনও দেশের বিকল্প হিসাবে দেখি না। আমরা মনে করি, বিশ্বের মধ্যে ভারত নিজের সঠিক অবস্থান অর্জন করছে।” বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ এবং পারস্পরিক নির্ভরশীলতা আগের তুলনায় বেড়েছে বলেও জানান মোদী। এ প্রসঙ্গে সীমান্তে চিনের আগ্রাসনের কথাও পরোক্ষে তুলে ধরেন তিনি।
পারস্পরিক নির্ভরশীলতা প্রসঙ্গে চিনকেও বিশেষ বার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “চিনের সঙ্গে স্বাভাবিক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য সীমান্তবর্তী এলাকায় শান্তি বজায় রাখা অপরিহার্য। দেশের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে বজায় রাখতে এবং প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে মতবিরোধে মেটাতে ভারত শান্তিপূর্ণ সমাধানের উপরই বিশ্বাসী।” তবে কোনও অবস্থাতেই দেশের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে আপোস করা হবে না বলেও কড়া বার্তা দেন নমো।
প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “ভারত তার সার্বভৌমত্ব এবং মর্যাদা রক্ষার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রতিটি দেশেরই আন্তর্জাতিক আইন এবং দেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করা উচিত। যুদ্ধ নয়, কূটনীতি এবং সংলাপের মাধ্যমে বিরোধের সমাধান করা উচিত।” এ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থানও স্পষ্ট করে দেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি বলেন, “কিছু লোক বলেন, আমরা নিরপেক্ষ। কিন্তু, আমরা নিরপেক্ষ নই, আমরা শান্তির পক্ষে রয়েছি। শান্তি-ই ভারতের প্রথম অগ্রাধিকার, এব্যাপারে গোটা বিশ্বের পূর্ণ আস্থা রয়েছে।” ‘সংঘাতের অবসান ঘটাতে এবং স্থায়ী শান্তি-স্থিতাবস্থা নিশ্চিত করতে’ যা-যা করার প্রয়োজন, সেই সমস্ত প্রচেষ্টাকে ভারত সমর্থন করবে বলেও জানান তিনি।
ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী হলেন নরেন্দ্র মোদী। আর তিনিই স্বাধীন ভারতে জন্মগ্রহণকারী প্রথম প্রধানমন্ত্রী। তার উল্লেখ করে নমো বলেন, “আমার চিন্তা প্রক্রিয়া, আচরণ, আমি যা বলি এবং করি, সেটা আমার দেশের বৈশিষ্ট্য এবং ঐতিহ্য দ্বারা অনুপ্রাণিত।” তাঁর মধ্য দিয়েই ভারত বিশ্বের দরবারে উদ্ভাসিত হয় বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কথায়, “আমি আমার দেশকে বিশ্বের কাছে উপস্থাপন করি। আমি নিজে যেমন, সেভাবেই বিশ্বের কাছে আমার দেশ উদ্ভাসিত হবে।”