নয়া দিল্লি: অধিকাংশ রাজনৈতিক নেতার ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রতিশ্রুতিই সার। সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ হচ্ছে কিনা, তার খেয়াল অধিকাংশ নেতাই রাখেন না। কিন্তু ব্যতিক্রম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চলতি বছরের স্বাধীনতা দিবসে, লালকেল্লা থেকে ভাষণ দেওয়ার সময় মহিলাদের ক্ষমতায়ন, জনৌষধি দোকানগুলির সংখ্যা বৃদ্ধির মতো বিভিন্ন প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর), এই প্রকল্পগুলি বাস্তবায়ের কাজ কতদূর এগোল, তার খোঁজ খবর নিলেন তিনি। এদিন এই বিষয়ে এক উচ্চ-স্তরের পর্যালোচনা বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক ও বিভাগে একাধিক শীর্ষ কর্তা এই বৈঠকে অংশ নেন। প্রকল্পগুলির অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন তাঁরা।
প্রধানমন্ত্রীর স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে, বিশেষ গুরুত্ব ছিল মহিলাদের ক্ষমতায়নের উপর। ২ কোটি ‘লাখোপতি দিদি’ তৈরি থেকে শুরু করে ১৫,০০০ মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ড্রোন পরিচালনায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। লাল কেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, “আমি চাই ২ কোটি লাখোপতি দিদি তৈরি হোক। সেই লক্ষ্যেই আজ আমরা মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছি। আমরা আমাদের মহিলাদের সম্ভাবনা, মহিলাদের নেতৃত্বে উন্নয়নের প্রচার করছি। জি২০ গোষ্ঠীতে আমি যখনই মহিলাদের নেতৃত্বে উন্নয়নের প্রসঙ্গ তুলেছি, সমগ্র জি২০ গোষ্ঠী, এর গুরুত্ব স্বীকার করেছে।” লাখোপতি দিদি তৈরির লক্ষ্যে, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর আওতায় মহিলাদের বেশ কিছু জীবিকা তৈরির পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এদিনের বৈঠকে, এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য কী কী কাজ করা হয়েছে, সেই সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন প্রধানমন্ত্রী।
স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে, প্রধানমন্ত্রী স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির ১৫,০০০ মহিলাকে কৃষিক্ষেত্রে ড্রোন ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “আমরা ড্রোন চালানোর প্রশিক্ষণ দেব। ড্রোন মেরামতের প্রশিক্ষণ দেব। ভারত সরকার এই রকম হাজার হাজার মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে ড্রোন সরবরাহ করবে। তারা প্রশিক্ষণ দেবে এবং আমরা আমাদের কৃষিকাজের জন্য ড্রোন পরিষেবা শুরু করব।” এদিন, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হয় প্রদানমন্ত্রী মোদীকে। জানানো হয়, মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ইতিমধ্যেই প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে। তাদের কর্মকাণ্ডের উপর নজর রাখছে সরকার।
এছাড়া, স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে জনৌষধি দোকান, অর্থাৎ, সাশ্রয়ী মূল্যের ওষুধের দোকানের সংখ্যা দ্রুত ১০,০০০ থেকে বাড়িয়ে ২৫,০০০ করা হবে বলে জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সাশ্রয়ী মূল্যের ওষুধ যাতে আরও বেশি সংখ্যক অভাবী মানুষের নাগাতে আসে, সেই লক্ষ্যেই এই পরিকল্পনা করেছে সরকার। তিনি বলেছিলেন, “এখন, দেশে ১০,০০০ জনৌষধী কেন্দ্র আছে। আমরা আগামী দিনে ২৫,০০০ জনৌষধী কেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্য নিয়েছি।” এদিন এই সম্প্রসারণের লক্ষ্য বাস্তবায়নে কী কী কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে, তা পর্যালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।