নয়া দিল্লি: গত বছর দেশে করোনা হানার সময় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে এসে জনতা কার্ফুর ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। তারপর দেশে কায়েম হয়েছিল লকডাউন। কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল অর্থনীতির চাকা। কিন্তু রোখা গিয়েছিল করোনার প্রথম ঢেউ। এখন দেশে আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। করোনার তোড়ে ভাসছে গোটা দেশ। তার মধ্যেই গত ২০ এপ্রিল জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে মোদী বলেছিলেন, “লকডাউন শেষ অস্ত্র।” তারপর জাতীয় লকডাউন কায়েম হয়নি দেশে। তবে রাজ্যভিত্তিক লকডাউন হয়েছে। আবারও অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে দেশ। এ বার জাতির উদ্দেশে কী বার্তা প্রধানমন্ত্রীর? দেখুন লাইভ আপডেট…
ভারতের ভ্য়াকসিন নির্মাতাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। ভ্যাকসিন না নেওয়ার জন্য ভ্রান্ত ধারণা ছড়ানো হয়েছে। যাঁরা এই কাজ করেছেন তাঁরা জীবন নিয়ে খেলছেন। এসব থেকে সতর্ক থাকুন। সকলের কাছে অনুরোধ, ভ্যাকসিন নিয়ে সচেতন হতে হবে। করোনা চলে যায়নি। আমাদের সাবধান থাকতে হবে, করোনাবিধির পালন করতে হবে। আমার সম্পূর্ণ বিশ্বাস করোনাকে আমরা হারাতে পারব: মোদী
গত বছর করোনার কারণে লকডাউনে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা ৮ মাস ধরে ৮০ কোটিরও বেশি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দিয়েছিল। এ বারও মে-জুনে সেই যোজনার ঘোষণা করা হয়েছি। এ বার কালীপুজো পর্যন্ত এই প্রকল্প চলবে।
যাঁরা দ্রুত ভ্যাকসিন নিতে চান। বেসরকারি ক্ষেত্রে তারাও এই সুযোগ পাবেন। বেসরকারি হাসপাতালে তাঁরা টিকা নিতে পারবেন। সেখানে প্রতি ডোজ়ে বড়জোর ১৫০ টাকা বেশি নিতে পারবে হাসপাতাল।
রাজ্যকে ভ্যাকসিনে কোনও খরচ করতে হবে না। ১৮ ঊর্ধ্বরাও এই নিয়মে কেন্দ্রের কাছ থেকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পাবে। ২১ জুন থেকে কার্যকরী হবে এই নিয়ম।
এরপর একাধিক রাজ্য বলতে শুরু করল আগের নীতিই সঠিক ছিল। যাঁরা রাজ্যভিত্তিক ভ্যাকসিনেশন করতে চেয়েছিল, তারা ফের কেন্দ্রের নিয়মে ফিরতে চাইছিল। দেশবাসীর কথা ভেবে আমরা ফের পুরনো নিয়মে ফিরতে চাই। রাজ্যের কাছে ২৫ শতাংশ টিকাকরণের যে কাজ ছিল তা কেন্দ্র নেবে।
কেন্দ্রের কাছে দাবি এসেছিল, স্বাস্থ্য রাজ্যের হাতে ছাড়া হোক। এ জন্য কেন্দ্র নির্দেশিকা বানিয়ে রাজ্যকে কাজ করার ছাড় দিয়েছে। করোনা কার্ফু থেকে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োন এই সংক্রান্ত রাজ্যের সব দাবি মেনে নিয়েছে কেন্দ্র। সবাইকে বিনামূল্যে টিকা দিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছিল। এর মধ্যেই অনেক রাজ্য সরকার ভ্যাকসিনের কাজ করতে চেয়েছিল। ভ্যাকসিনেশনের জন্য কেন বয়সের মাপকাঠি? বয়স্কদের টিকাকরণ আগে কেন হচ্ছে? এই বিষয়ে আলোচনা হওয়ার পর রাজ্যের দাবি ও আগ্রহকে প্রাধান্য দিয়ে টিকাকরণে বদল আনা হয়। উৎসাহকে মান্যতা দিয়ে ১মে থেকে ২৫ শতাংশ কাজ রাজ্যের হাতে তুলে দেওয়া হয়: মোদী
‘কেন্দ্রীয় সরকার মুখ্যমন্ত্রীদের পরামর্শ ও বিরোধীদের পরামর্শ নিয়ে কাজ করেছে। যাঁরা করোনায় বেশি আশঙ্কাজনক, তাঁদের আগে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। সে জন্যই প্রথম সারির যোদ্ধারা আগে ভ্যাকসিন পেয়েছেন। আপনারা কল্পনা করুন, দ্বিতীয় ঢেউয়ের আগে যদি এঁরা ভ্যাকসিন না পেতেন, তাহলে কী হত?’
বিশেষজ্ঞরা শিশুদের নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তার জন্য ২ প্রতিষেধকের ট্রায়াল চলছে। নাজাল ভ্যাকসিনের গবেষণা চলছে। যা ইঞ্জেকশনের বদলে নাকে স্প্রে করা হবে। এই কাজে সফল হলে ভারতের টিকাকরণ অন্য গতি পাবে।
গত বছর থেকেই আমরা ভ্যাকসিন টাস্ক ফোর্স তৈরি করেছি। ভ্যাকসিন নির্মাতাদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে সাহায্য করা হয়েছে। গবেষণার জন্য টাকা দেওয়া হয়েছে। সরকার নির্মাতাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হেঁটেছে। সকলকে আত্মনির্ভর ভারত প্যাকেজ দেওয়া হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
আমরা ১০০ শতাংশ টিকাকরণের দিকে এগোচ্ছিলাম, তখনই করোনা আঘাত হানে। সারা বিশ্বের কাছে প্রশ্ন উঠেছিল, ভারত কী করে এত মানুষের ভ্যাকসিনেশন করবে? সব আশঙ্কা উড়িয়ে ভারত ১ বছরের মধ্যে ২ মেড ইন ইন্ডিয়া ভ্যাকসিন লঞ্চ করেছে। আমাদের বিজ্ঞানীরা দেখিয়ে দিয়েছে ভারত অন্য দেশের থেকে পিছিয়ে নেই: নরেন্দ্র মোদী
আগে বিদেশে ভ্যাকসিনেশন শেষ হলে তবেই ভারত ভ্যাকসিন পেত। ২০১৪ সালে দেশ আমাদের সেবার সুযোগ দেওয়ার পর তখন টিকাকরণের গড় ৬০ শতাংশের আশপাশে ছিল। যা অত্যন্ত চিন্তার। যে গতিতে ভারতের টিকাকরণ চলছিল, তাতে দেশের ১০০ শতাংশ টিকা পেতে ৪০ বছর লেগে যেত। আমরা এই সমস্যার সমাধানের জন্য মিশন ইন্দ্রধনু চালিয়েছি। এর মাধ্যমে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিনেশনের চেষ্টা হয়েছে। আমরা যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ করেছি। স্রেফ ৫-৬ বছরের মধ্যে ভ্যাকসিনেশন কভারেজ ৬০ শতাংশ থেকে ৯০ শতাংশ করেছি: প্রধানমন্ত্রী
এই অদৃশ্য শত্রুর সঙ্গে লড়াইয়ে ভ্যাকসিন আমাদের কাছে রক্ষাকবচ। ভ্যাকসিনের চাহিদার তুলনায় নির্মাতাদের সংখ্যা অনেক কম। এখন যদি ভারতের তৈরি ভ্যাকসিন না থাকত, তাহলে কী হত ভাবুন… : মোদী
ভারতের ইতিহাসে এই পরিমাণ মেডিক্যাল অক্সিজেনের চাহিদা আসেনি। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ হয়েছে। বায়ুসেনা-নৌসেনা সম্মিলিত ভাবে কাজ করেছে। অক্সিজেনের উৎপাদন বেড়েছে। বিশ্বের সব কোণা থেকে যা পাওয়া যায় সব আনা হয়েছে: নরেন্দ্র মোদী
“করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সঙ্গে আমরা লড়ছি। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ভারতও এই লড়াই লড়ছে। আমরা স্বজন হারিয়েছি। তাঁদের প্রত্যেককে আমার সমবেদনা। গত ১০০ বছরের সবচেয়ে বড় মহামারি করোনা। আমাদের দেশ একসঙ্গে লড়েছে।”