রংপো: বাংলার ভ্রমণপিপাসুদের কাছে অন্যতম পছন্দের জায়গা হল সিকিম। বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ, শ্বেতশুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘাকে একেবারে চোখে চোখ রেখে দেখতে, তুষারখেলার মজা নিতে বাঙালি ছুটে যায় সিকিম। কিন্তু, আকাশপথ ছাড়া সিকিমে যাওয়ার একমাত্র পথ হল, সড়কপথ। স্বাভাবিকভাবেই উত্তরবঙ্গ থেকেও সিকিমে যাওয়া যেমন খরচসাপেক্ষ, তেমনই সময়সাপেক্ষ। এবার সিকিম রুটে ঐতিহাসিক বদল ঘটতে চলেছে। শীঘ্রই চালু হতে চলেছে ট্রেন চলাচল। সোমবারই সিকিমের প্রথম রেলস্টেশনের শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
দেশের মধ্যে একমাত্র সিকিম রাজ্যেই রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরে অবশেষে ৪৯ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটল। এদিন পূর্ব সিকিমের রংপোয় প্রথম রেলস্টেশনের শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এলাকার নামেই এই স্টেশনের নাম দেওয়া হয়েছে রংপো রেলস্টেশন।
রংপোর খানিকোলায় সিকিমের প্রথম রেলস্টেশনের শিলান্যাস করা হয়। নয়া দিল্লি থেকে ভার্চুয়ালি এই স্টেশনের শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বলা যায়, সারা দেশের সঙ্গে সিকিমের রেল সংযোগ ঘটালেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এছাড়া ৪১ হাজার কোটি টাকার ২১ হাজারের বেশি রেল পরিকাঠামোর প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি। খানিকোলায় রেলস্টেশনের শিলান্যাসের এই অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন সিকিমে রাজ্যপাল লক্ষণ প্রসাদ আচার্য-সহ রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকেরা। এছাড়া স্থানীয় বাসিন্দারাও জড়ো হয়েছিলেন ওই অনুষ্ঠানে। রংপো রেলস্টেশনের শিলান্যাসের সঙ্গে সঙ্গে ভিড়ের মধ্য থেকে ওঠে ভারত মাতার জয়ধ্বনি, হাতে-হাতে উত্তোলিত হয় তেরঙা। যেন এক মাইলফলক ছুঁল সিকিম।
রাজ্যের প্রথম রেলস্টেশনের শিলান্যাসের পর সিকিমের রাজ্যপাল লক্ষ্মণ প্রসাদ আচার্য বলেন, “রংপো রেলওয়ে স্টেশনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন সিকিমের জন্য একটি ঐতিহাসিক এবং গর্বের মুহূর্ত।” এটা ‘বিকশিত ভারত ২০৪৭’-এর লক্ষ্য পূরণে সহায়তা করবে এবং সিকিমের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটার পাশাপাশি পর্যটন ক্ষেত্রেরও উন্নতি ঘটবে বলে উল্লেখ করেন রাজ্যপাল আচার্য।
সিকিমের সঙ্গে রেল সংযোগ করার কাজ অবশ্য আগেই শুরু হয়েছিল। সেবক থেকে রংপো পর্যন্ত রেললাইনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথে ৫টি স্টেশন, ১৪টি সুড়ঙ্গ এবং ২২টি সেতু রয়েছে। এই রেলপথের কাজ সম্পূর্ণ হলে শিলিগুড়ির সেবক থেকে সরাসরি রেলপথে পৌঁছে যাওয়া যাবে রংপো।