নয়া দিল্লি: গত কয়েক মাসে, কানাডা এবং আমেরিকা – দুই দেশেই ভারতীয় হাইকমিশনে হামলা হয়েছে। হামলা হয়েছে বেশ কয়েকটি ভারতীয় মন্দিরেও। হুমকি দেওয়া হয়েছে ভারতীয় কুটনীতিবিদদের। আমেরিকা সরকারের পক্ষ থেকে এই ঘটনাগুলির তদন্ত করা হলেও, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করছে না কানাডা। সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি), দেশের সবথেকে বড় নিউজ নেটওয়ার্ক TV9-এর বার্ষিক সম্মেলন, ‘হোয়াট ইন্ডিয়া থিঙ্কস টুডে’র মঞ্চে এমনই অভিযোগ করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এদিন, ‘রাইজ অব দ্য গ্লোবাল সাউথ’ বিষয়ে এক কথোপকথনে অংশ নিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী। এই মঞ্চে তিনি ভারত-কানাডা কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী সমস্যা নিয়েও মুখ খুলেছেন তিনি।
বিদেশমন্ত্রী বলেন, “আমাদের রাষ্ট্রদূতদের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। তাঁদের প্রাণহানির ঝুঁকি ছিল। তাই আমরা কানাডার নাগরিকদের ভিসা প্রদান করা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিলাম। এখন অবশ্য ভিসা প্রদান ব্যবস্থা প্রায় স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। আসলে, বাক স্বাধীনতার নামে কূটনীতিকদের ভয় দেখানো যায় না। এটা বাক স্বাধীনতার অপব্যবহার বলে মনে করি আমি। হাই কমিশনারদের উপর হামলা করা হচ্ছে। তাদের কোনও নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে না। ভারতের পতাকা নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমার প্রশ্ন হল, এটাকে কী বাক স্বাধীনতা বলা যায়? আমেরিকাতেও একই ধরনের হামলা হয়েছিল। সেই দেশে এই ঘটনার তদন্ত চলছে। যদি কানাডা কোনও পদক্ষেপ না করে, তবে সেটাকেও একটা বার্তা হিসেবেই পড়তে হবে। যারা আমাদের কূটনীতিকদের হুমকি দিয়েছে, যারা তাঁদের বিরুদ্ধে পোস্টার লাগিয়েছে, সেই সকল বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে হবে।”
শুধু কানাডার সঙ্গে নয়, চিনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নিয়েও এদিন TV9-এর মঞ্চে আলোচনা করেন বিদেশমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, গত কয়েক বছরে দুই দেশের সম্পর্কের ওঠানামা হলেও একটা স্থিতাবস্থাও রয়েছে। গত ২৫ বছরে দুই দেশেরই ব্যাপক উত্থান ঘটেছে। বিদেশমন্ত্রী মতে, ভারতের আগে চিনের অগ্রগতি শুরু হয়েছিল। ভারতের উত্থান সেই সময় আটকে ছিল রাজনীতির যাতাকলে। ভারত ও চিন, দুই প্রতিবেশি দেশই পৃথিবীকে বদলে দিচ্ছে। তাই এই সম্পর্কে জটিলতাও রয়েছে। ভারত প্রাথমিকভাবে, ১৯৯০ সালের চুক্তি অনুযায়ী প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বজায় রাখার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু, ২০২০ সালে চিন সেনা সেই চুক্তি লঙ্ঘন করেছিল। তাই ভারতও ওই এলাকায় সেনা উপস্থিতি বাড়ায়। চিনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পদক্ষেপও করেছে ভারত। চিনের মোকাবিলা. ভারত এখন ডিজিটাল ক্ষমতা, সামরিক ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে এবং পরিকাঠামোর উন্নয়ন করে চলেছে।