নয়া দিল্লি: বর্ষশেষের প্রাক্কালে বাংলায় অনুষ্ঠিত হবে লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ (Gita reading ceremony)। গীতা পাঠের সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বয়ং (PM Narendra Modi)। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর একথা জানালেন বঙ্গ বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি জানান, লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে উপস্থিত থাকার জন্য সাধু-সন্তদের এক প্রতিনিধি দল তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে-সঙ্গে সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে হলেও প্রধানমন্ত্রীর কলকাতায় আগমন বিজেপি কর্মীদের অনুপ্রেরণা দেবে বলেও জানান সুকান্ত মজুমদার। প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি ব্রিগেডে গীতা পাঠ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে রাষ্ট্রপতিকেও। যদিও রাষ্ট্রপতি যাবেন কিনা সে বিষয়ে থেকে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। এছাড়া এই অনুষ্ঠানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলেও বিজেপি সূত্রে খবর। অন্যদিকে, আগামী ২৯ নভেম্বর কলকাতায় রাজ্য বিজেপির তরফে বঞ্চিতদের নিয়ে আয়োজিত সভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) আসতে পারেন। এব্যাপারে তাঁর দফতরের তরফে সবুজ সংকেত পাওয়া গিয়েছে বলেও জানান বঙ্গ বিজেপি সভাপতি (Sukanta Majumdar)।
আগামী ২৪ ডিসেম্বর কলকাতার ময়দানে ১ লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বিভিন্ন মঠ ও মন্দিরের তরফ থেকে লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ কমিটি নামে একটি সংস্থা গঠন করে এই গীতা পাঠ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানাতে শুক্রবার সকালেই দিল্লি যান বঙ্গ বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। কলকাতা বিমানবন্দর চত্বরে দাঁড়িয়ে সেকথা নিজেই জানান বালুরঘাটের সাংসদ। তাঁর সঙ্গে ছিল সাধু-সন্তদের এক প্রতিনিধি দলও। এরপর সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে কলকাতায় গীতা পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিত থাকার খবরটি নিশ্চিত করেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি জানান, কলকাতায় লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ অনুষ্ঠানে বহু মানুষের জমায়েত হবে। ইতিমধ্যে ১ লক্ষ ২০ হাজার মানুষ রেজিস্ট্রেশন করিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর সামনেই লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ করা হবে।
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের আর মাত্র কয়েক মাস বাকি। এবার বাংলা থেকে আরও বেশি আসন পেতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। সেজন্য ইতিমধ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জনসংযোগ কর্মসূচি শুরু করে দিয়েছে। যদিও লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ অনুষ্ঠানটির আয়োজনের কেন্দ্রে সরাসরি বিজেপি নেই। এটি একটি অরাজনৈতিক ও ধর্মীয় কর্মসূচি। তবে বিভিন্ন মঠ ও মন্দিরের তরফে মিলিতভাবে এই গীতা পাঠ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলেও এর পিছনে যে গেরুয়া শিবির রয়েছে, তা সুকান্ত মজুমদারের দিল্লি গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণের ঘটনাতেই স্পষ্ট। এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি যে দলীয় কর্মীদের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠবে, সেকথা স্বীকার করে নিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। এছাড়া চলতি মাসে বঞ্চিতদের নিয়ে আয়োজিত বিজেপির জনসভায় অমিত শাহ উপস্থিত হলে সেটা লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের কাছে উপরি পাওনা হবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।