নয়া দিল্লি: বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবহুল দেশ ভারত। এত সংখ্যক জনগণের জন্য কেবল সুযোগ-সুবিধা দিলেই চলবে না, একইসঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে নিরাপত্তাও। বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী সামরিক বাহিনী থাকা সত্ত্বেও শত্রুরা বারংবার চেষ্টা করেছে ভারতের উপর হামলা চালাতে। কখনও সীমান্তে মুখোমুখি সংঘর্ষ, কখনও আবার লুকিয়ে হামলা চালিয়েছে শত্রুরা। তবে বিগত ৭ বছরে চিত্রটা অনেকটাই বদলে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) দায়িত্ব গ্রহণের পরই তিনি নরমে গরমে জবাব দিয়েছেন শত্রুপক্ষকে। নিয়েছেন এমন কিছু সিদ্ধান্ত, যা দেশকে বিশ্বমঞ্চে শক্তিশালী দেশ হিসাবে প্রমাণিত করেছে।
দেশের সীমানায় অতন্দ্র প্রহরী হিসাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে আমাদের সেনাবাহিনী (Indian Force)। তাদের কেবল সামরিক সাহায্য ও রসদ পৌঁছিয়েই সরকারের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না, মনোবল জোগানোও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর সেই কাজটাই করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সীমান্তে গিয়ে পাহারারত সেনা জওয়ানদের সঙ্গে দেখা করে দিপাবলী উদযাপন থেকে শুরু করে বারংবার তাদের ধন্যবাদ জানানো, এইসমস্ত কাজের মধ্য দিয়েই তিনি সেনাবাহিনীর মনোবল বাড়িয়েছেন।
ক্ষমতায় আসার পরই ২০১৬ সালে দেশের উপর হামলার পরই প্রধানমন্ত্রী এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছিলেন শত্রুপক্ষের সীমানায় ঢুকে তাদের যোগ্য জবাব দিতে। এরপরই পাকিস্তানের হামলার জবাবে সে দেশের মাটিতে প্রবেশ করেও এয়ারস্ট্রাইক চালিয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনা।
বিগত ৭ বছর ধরে ভারত বিশ্বের একাধিক দেশের সঙ্গে সামরিক চুক্তি করেছে। ২০২০ সালেই আমেরিকার সঙ্গে ৩.৪ কোটি ডলারের সামরিক চুক্তি করে। ভারত আমেরিকার কাছ থেকে ৬টি পি-৮আই সাবমেরিন হান্টিং এয়ারক্রাফ্টের চুক্তি করতে চলেছে। এছাড়াও আমেরিকার কাছ থেকে মিসাইল ও টর্পেডোও কিনতে চলেছে ভারত। বায়ুসেনার ক্ষমতা বাড়াতে আমেরিকার সঙ্গে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। আগের ট্রাম্প সরকারও ৭১ হাজার কোটি টাকার বিনিময়ে যুদ্ধের অস্ত্রসামগ্রী কেনার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছিল। ২৪টি এমএইচ-রোমিও ও অ্যাপাাচি হেলিকপ্টার কেনার জন্য় আমেরিকার সঙ্গে চুক্তি হয়েছে ভারতের। ১৪৫টি এম-৭৭৭ ট্য়াঙ্কের জন্যও ৫ হাজার কোটির চুক্তি করা হয়েছে। এই বিপুল অস্ত্র ভাণ্ডার ও শক্তিশালী সেনা বাহিনী শত্রুপক্ষের মনে ভয় ধরাতে বাধ্য।
গত বছর গালওয়ান সংঘর্ষের কথাও মনে রয়েছে নিশ্চয়ই। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা দিয়ে ভারতে অনুপেরবেশের চেষ্টা করেছিল চিন, কিন্তু ভারতীয় সেনার সামনে টিকতে পারেনি লাল ফৌজ। চিনের মতো আগ্রাসী দেশকেও পিছু হটতে দেখে হতবাক হয়েছিল গোটা বিশ্ব, একইসঙ্গে ভারতীয় সেনার শক্তিও টের পেয়েছিল তারা।
সেনাবাহিনীকে মজবুত করতে নৌ, বায়ু ও সামরিক সেনার একত্রিতভাবে অভিযান চালানোর ক্ষেত্রেও বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর উদ্য়োগেই দেশের তিন বাহিনী একজোট হয়েছে। চিনের সঙ্গে ভারতের সীমান্তে আরও কড়া প্রহরার জন্য কয়েক হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ একাধিক রাস্তা তৈরির উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। বিআরও ২৭২টি সড়ক তৈরি করছে। বর্তমানে সড়কেও নামছে যুদ্ধবিমান।
ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তায় কোয়াড হোক বা ব্রিকসের মতো আন্তর্জাতিক মঞ্চেও ভারত নিজের বক্তব্য ও দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছে। বর্তমানে দেশকে সামরিক ক্ষেত্রে সাহায্যের জন্য অন্য দেশের উপর নির্ভর করতে হয় না। কার্যতই আত্মনির্ভর হয়ে উঠেছে আমাদের দেশ।