ট্যাটুই চিনিয়ে দিল পচা-গলা দেহ, খুন করে স্যুটকেসে ভরে দেহ নর্দমায় ফেলে দিয়েছিল স্ত্রী’র প্রেমিক

TV9 Bangla Digital | Edited By: তন্নিষ্ঠা ভাণ্ডারী

Aug 29, 2021 | 9:35 AM

দিল্লির সুখদেব বিহারে জলে ভাসছিল ওই দেহ। জলে পচে দেহ চেনার উপায় ছিল না।

ট্যাটুই চিনিয়ে দিল পচা-গলা দেহ, খুন করে স্যুটকেসে ভরে দেহ নর্দমায় ফেলে দিয়েছিল স্ত্রীর প্রেমিক
ট্যাটুর সূত্র ধরেই মৃত্যু রহস্যের কিনারা

Follow Us

নয়া দিল্লি: পুলিশের অনুমান বেশ কয়েকদিন আগেই খুন করে জলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল দেহ। পুলিশের নজরে যখন ঘটনাটি এসেছে, তখন দেহে পচ ধরেছে। পচে-গলে দেহের অবস্থা এমনই হয়েছে যে চেনার উপায় নেই। ট্যাটু না দেখতে পেলে হয়ত শনাক্তই করা সম্ভব হত না মৃতদেহটি। কিন্তু ট্যাটুর সূত্র ধরেই মৃতদেহের রহস্যের কিণারা করে ফেলেছে পুলিশ। খুনিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি, এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে মৃত ব্যক্তির স্ত্রী’রও। স্ত্রী’র প্রেমিকই এই খুনের ঘটনায় জড়িত বলে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দিল্লি নিউ ফ্রেন্ডস কলোনি এলাকার একটি জলাশয় থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়, তারপরই পুলিশ তদন্ত শুরু করে।

গত ১০ অগস্ট ওই জলে ভাসমান দেহের কথা জানতে পারে পুলিশ। দিল্লির সুখদেব বিহারে নিউ ফ্রেন্ডস কলোনি এলাকার একটি জলাশয়ে ভাসছিল দেহটি। অভিজাত ওই এলাকার জলাশয়ে স্যুটকেসের মধ্যে দেহ ভাসতে দেখে খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহে স্যুটকেসের মধ্যে বন্ধ করা ছিল দেহ। তত ক্ষণে পচে গিয়েছে সেই দেহ। মৃতদেহ উদ্ধার কররে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। দেহটি শনাক্ত করা না গেলেও পুলিশ দেখতে পায় মৃত ব্যক্তির ডান হাতে একটি ট্যাটু আঁকা রয়েছে।

প্রাথমিকভাবে পুলিশ অনুমান করে মৃত ব্যক্তির বয়স ৩৫-এর আশেপাশে। দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার আরপি মীনা এক বিবৃতিতে জানান, পুলিশ তদন্তের শুরুতেই বুঝতে পারে যে ওই দেহ কোনও এক নর্দমায় স্যুটকেসে ভরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। সেটাই ভাসতে ভাসতে ওই নিউ ফ্রেন্ডস কলোনি এলাকায় পৌঁছে গিয়েছে। এই ঘটনায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ও ২০১ ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ।

এই রহস্যের কিণারা করতে গিয়ে একটি নিখোঁজ ডায়রির সন্ধান পায় পুলিশ। এই মৃতদেহ খুঁজে পাওয়ার কিছুদিন আগেই দিল্লির নেব সেরাই থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। গত ৮ অগস্ট থেকে ওই ব্যক্তির কোনও খোঁজ ছিল না। ব্যক্তির স্ত্রী নিজেই অভিযো দায়ের করেছিলেন। সেই ডায়রি হয়েছিল নবীন নামে ওই ব্যক্তির নামে। আরও কিছু তথ্য মিলিয়ে দুয়ে দুয়ে চার করে পুলিশ। এরপরই ওই ডায়রির সুত্র ধরে পুলিশ পৌঁছে যায় নির্দিষ্ট ঠিকানায়। সেখানে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে নবীন ও তাঁর স্ত্রী মুসকান ভাড়ায় থাকতেন একটি বাড়িতে। কিন্তু যতক্ষণে পুলিশ পৌঁছেছে, ততক্ষণে ওই বাড়ি ছেড়েছেন মুসকান। সন্ধান চালিয়ে মুসকানের নতুন ঠিকানা খুঁজে পায় পুলিশ। মোবাইলের লোকেশনের সূত্র ধরে খানপুর এলাকার ওই বাড়িতে গিয়ে পুলিশ দেখে মা ও দু’বছরের সন্তানকে গিয়ে সেখানে রয়েছেন মুসকান। পুলিশ জিজ্ঞেস করলে স্ত্রী জানান, নবীনের গায়ে কোনও ট্যাটু ছিল না।

কিন্তু মৃতের ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই সবটা স্পষ্ট হয়ে যায়। নবীনের ভাই জানান, ট্যাটু ছিল নবীনের ডান হাতে। স্ত্রী মুসকান দাবি করেন, ৭ অগস্ট নবীনের সঙ্গে তাঁর বচসা হয়। নবীনের মারে তাঁর মুখ থেকে রক্তক্ষরণ হতে শুরু করে। এরপর এইমস হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যান তিনি। বাড়ি ফিরে দেখেন, নবীন বাড়িতে নেই। এরপরই থানায় ডায়রি করেন তিনি। পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে মুসকানের চিকিৎসার বিষয়টি ভুয়ো। এরপর মুসকানের ফোন থেকে পুলিশ জানতে পারে বন্ধ জামালের সঙ্গে মুসকানের যোগাযোগ রয়েছে। জামালের ফোনের সূত্র ধরে পুলিশ দেখে যে, ৭ অগস্ট নবীন-মুসকানের বাড়িতে গিয়েছিল জামাল। শুধু তাই নয়, সুখদেব বিহারে যেখানে দেহটি জলে ফেলা হয়েছিল, সেখানেও গিয়েছিল জামাল। এরপরই জানা যায় আসল গল্পটা।

৭ তারিখে বচসার সময় উপস্থিত ছিল জামাল। বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল তারই বন্ধু বিবেক। এরপরই মুসকান, জামাল ও বিবেক মিলে ঘিরে ধরে নবীনকে। জামাল ও বিবেক পরপর ছুরির কোপ বসায় নবীনের শরীরে। নবীনের মৃত্যুর পর তার দেহ বাথরুমে ধুয়ে ফেলে স্ত্রী মুসকান। বিবেক, জামালের রক্ত ভেজা কাপড়ও নর্দমায় ফেলে দেওয়া হয়। ছুরি ও সেই সব জামাকাপড় উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনায় মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও পড়ুন: সাধ্যের মধ্যেই এসি কোচ! অনেক কম ভাড়ায় রেলে যুক্ত হচ্ছে ‘ইকনমি ক্লাস’

Next Article