নয়া দিল্লি: দিনকয়েক আগে, নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই বন্ডের মাধ্যমে, রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামে আর্থিক অনুদান দেওয়া যেত। কিন্তু, এই প্রকল্প ‘অসাংবিধানিক’ বলে জানিয়েছে আদালত। এবার, রাজনৈতিক অনুদান নিয়ে বড় পদক্ষেপ করল আয়কর দফতরও। এবার থেকে রাজনৈতিক অনুদানের হিসাব দিতে হবে আয়কর রিটার্ন ফর্মেও। এর জন্য ফর্মে থাকবে বিশেষ কলাম। সেই কলামে জানাতে হবে রাজনৈতিক অনুদানের অঙ্ক। সেই সঙ্গে অর্থ স্থানান্তরের বিশদও জানাতে হবে। অনলাইনে টাকা দিয়ে থাকলে, সেই অনলাইন লেনদেনের প্রমাণও দিতে হবে আয়কর রিটার্ন ফর্মের সঙ্গে। যদি কেউ চেকের মাধ্যমে রাজনৈতিক অনুদান দিয়ে থাকেন, সেই ক্ষেত্রে তাঁকে সেই চেকের নম্বর উল্লেখ করতে হবে রিটার্ন ফর্মে। আয়কর রিটার্ন থেকে পাওয়া তথ্য, অন্যান্য সরকারি তথ্য ভাণ্ডারের সঙ্গে মিলিয়ে যাচাই করতে পারে আয়কর দফতর।
এর পাশাপাশি, নির্বাচন কমিশনের স্বীকৃতি না থাকা রাজনৈতিক দলগুলিকে আর্থিক অনুদান দিয়েছে যারা, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে আয়কর দফতর । এই রাজনৈতিক দলগুলি নথিভুক্ত হলেও, নির্বাচন কমিশন এই দলগুলিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকতি দেয়নি। আয়কর দফতর সূত্রের খবর, এই ধরনের দলগুলিকে অর্থ সাহায্য করার জন্য দেশব্যাপী পাঁচ হাজারেরও বেশি আয়করদাতাকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। শুধু ব্যক্তি নয়, বেশ কিছু কর্পোরেট সংস্থাও পেয়েছে আয়কর দফতরের নোটিস।
নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলি যদি বিধানসভা বা লোকসভা নির্বাচনে অংশ না নেয়, বা এই দুই নির্বাচনে একটি নির্দিষ্ট শতাংশ ভোট না পায়, সেই ক্ষেত্রে এই দলগুলি নির্বাচন কমিশনের স্বীকৃতি হারায়। আয়কর বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২০-২১ এবং ২০২১-২২ অর্থবর্ষে নিবন্ধিত কিন্তু নির্বাচন কমিশনের অস্বীকৃত এমন ২০টি মতো রাজনৈতিক দল অনুদান পেয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে এই নোটিসগুলি পাঠানো হয়েছে৷ আগামী দিনে এই ধরনের আরও নোটিস পাঠানো হবে।
কর ফাঁকি দিতে এবং আর্থিক নয়ছয় লুকোতে এই ধরনের স্বল্প পরিচিত রাজনৈতিক দলগুলিকে অনুদান দেওয়া হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত করতেই আয়কর আইনের ৮০-র জিজিসি ধারায় এই নোটিস পাঠানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, করদাতারা কোনও নিবন্ধিত নির্বাচনী ট্রাস্ট বা রাজনৈতিক দলকে অনুদান দিলে, সেই অনুদানের প্রেক্ষিতে আয়করে ১০০ শতাংশ ছাড় দাবি করতে পারেন। কিন্তু, নোটিস পাওয়া ব্যক্তি এবং সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে, আইটি বিভাগ তাদের ঘোষিত আয়ের সঙ্গে অনুদানের সামঞ্জস্য পায়নি। কিছু ক্ষেত্রে, করদাতারা তাদের আয়ের ৮০ শতাংশ পর্যন্ত একটি রাজনৈতিক দলকে দান করেছেন। যে রাজনৈতিক দল সঠিকভাবে নিবন্ধিত পর্যন্ত নয়। দফতরের সন্দেহ, দলগুলি হয়তো পরবর্তী ক্ষেত্রে দাতাদের কিছু টাকা নগদে ফেরত দিয়েছে।