নয়া দিল্লি: পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন আদালতে, নির্বাচন পরবর্তী হিংসা নিয়ে যে মামলাগুলির শুনানি চলছিল, তার উপর স্থগিতাদেশ জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্য়ের আদালতগুলিতে মামলার শুনানি চলাকালীন, মামলার সঙ্গে জড়িত প্রত্যক্ষদর্শী এবং আইনজীবীদের ভয় দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগে সিবিআই-এর। এই প্রেক্ষিতে তারা রাজ্যের আদালতগুলি থেকে মামলা অন্য স্থানান্তরের জন্য আবেদন করেছিল সুপ্রিম কোর্টে। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি সঞ্জয় কওল মামলাটি শোনেন। তিনি কোনও রায় ঘোষণা না করলেও, আপাতত রাজ্যের আদালতগুলিতে শুনানি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
সিবিআই আদালতে জানায়, মামলার সাক্ষী, প্রত্যক্ষদর্শী, আইনজীবীদের নিয়মিত ভীতী প্রদর্শন করা হচ্ছে। এই অবস্থায় বাংলায় মামলাগুলির বিচার প্রক্রিয়া চালানো সম্ভব হচ্ছে না। অনেক সময় ভয় পেয়ে সরে যাচ্ছেন সিবিআইয়ের সাক্ষী। এমনকি, মামলা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন আইনজীবীরা। ২০২১ সালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও, তাদের রিপোর্টে ভোট পরবর্তী মামলাগুলি অন্য রাজ্যে স্থানান্তরের সুপারিশ করেছিল বলে জানায় সিবিআই। এরপরই, এই সকল মামলা স্থানান্তরের বিষয়ে সব পক্ষের মতামত জানতে চেয়ে নোটিস জারি করেছেন বিচারপতি কওল। শুধু তাই নয়, রাজ্য পুলিশের ডিজিকে এই বিষয়ে আলাদাভাবে হলফনামা দাখিলেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১১ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। তার আগেই সব পক্ষকে তাদের মতামত জানাতে হবে।
২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের পরই, রাজ্য জুড়ে ব্যাপক হিংসার অভিযোগ উঠেছিল। ফল ঘোষণার পর থেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে হিংসার খবর আসতে থাকে। অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে সরগরম ছিল রাজনৈতিক মহল। প্রাথমিকভাবে অভিযোগুলির তদন্ত শুরু করেছিল রাজ্য পুলিশই। তবে, বিজেপি-সহ বিরোধিরা সিবিআই তদন্তের দাবি জানায়। একাধিক অশান্তির ঘটনায়, তাদের দাবি মেনে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের সেই রায়কে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু, সুপ্রিম কোর্টও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ বহাল রেখেছিল। তারপর থেকে রাজ্যে এই ঘটনাগুলির তদন্ত করছে সিবিআই। কলকাতা এবং জেলার একাধিক সিবিআই আদালতে মামলাগুলির শুনানি চলছে। কিন্তু, এদিন শীর্ষ আদালতের নির্দেশে সেই সকল শুনানি বন্ধ হল।