নয়া দিল্লি: আমাদের সরকারকেও একসময় লোকে গড়পড়তা বলত। কিন্তু, আজ সেই দেশই সারা বিশ্বে চকচক করছে। সারা বিশ্বকে আশার আলো দেখাচ্ছে। কাজেই কখনও তোমাদের সম্ভাবনাকে ছোট করে দেখ না। শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি)’পরীক্ষা পে চর্চা’র ষষ্ঠ সংস্করণে গড়পড়তা শিক্ষার্থীদের সাফল্যের সন্ধান দিতে গিয়ে নিজের সরকারকেই উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন দিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামে প্রায় ২০০ জন শিক্ষার্থী, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অভিভাবকদের সঙ্গে মিলিত হন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে গুরুগ্রামের এক ছাত্রী প্রশ্ন করেছিল, গড়পড়তা ছাত্র হয়ে কীভাবে সে তাঁর পড়াশোনায় মনোযোগ দেবে? এরই জবাবে গড়পড়তাদের সাফল্যের চাবিকাঠির সন্ধান দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তুমি যে জানতে পেরেছ তুমি গড়পড়তা, এর জন্য তোমায় অভিনন্দন। অনেক গড়পড়তারও নীচে থাকা ছাত্রছাত্রীদের মনে ভুল ধারণা থাকে যে, তাদের অনেক ক্ষমতা রয়েছে। তারা কিছুই করতে পারে না। তবে, গড়পড়তা হওয়া মানেই যে তুমি বড় কিছু অর্জন করতে পারবে না, তা নয়। চেষ্টা এবং সংকল্পের মাধ্যমে যে কোনও সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করা যায় এবং সাফল্য অর্জন করা যায়। গুরুত্বপূর্ণ হল বাস্তবসম্মত লক্ষ্য নির্ধারণ করা, ক্রমাগত উন্নতিতে মন দেওয়া এবং সেগুলি অর্জনের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। কখনও তোমার সম্ভাবনাকে ছোট করে দেখ না। সময় বদলায়, আর প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু অসাধারণ দক্ষতা থাকে। তোমায় শুধু সেই দক্ষতাটা কী, তা জানতে হবে।”
শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দিতে, নিজের সরকারকেই উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি জানান, কয়েক বছর আগে লোকে তাঁর সরকার সম্পর্কেও অনেক কথা বলত। এই সরকারে কোনও অর্থনীতিবিদ নেই। প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতির কোনও জ্ঞান নেই। এই নিয়ে প্রচুর লেখালেখি হত। কিন্তু, এখন করোনা পরবর্তী সময়ে গোটা বিশ্ব যখন আর্থিক সঙ্কটের মোকাবিলা করছে, সেই সময় ভারতকেই আর্থিক পুনরুদ্ধারের আশার আলো হিসেবে দেখছে গোটা বিশ্ব।
২০১৮ সালে প্রথমবার ‘পরীক্ষা পে চর্চা’র আয়োজন করা হয়েছিল। তারপর থেকে প্রতি বছরই এই অনুষ্ঠান হয়ে আসছে। আসন্ন বোর্ড পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে, পরীক্ষার চাপের মোকাবিলা এবং অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। চলতি বছরে এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। এই বছর ১৫৫টি দেশ থেকে প্রায় ৩৮.৮ লক্ষ শিক্ষার্থী ‘পরীক্ষা পে চর্চা’য় অংশ নেওয়ার জন্য নাম নিবন্ধন করেছিল। এর মধ্যে বিভিন্ন রাজ্য বোর্ডগুলির ১৬ লক্ষেরও বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। সারা দেশ থেকে মোট ১০২ জন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং কলা উৎসব প্রতিযোগিতার ৮০ জন বিজয়ী, বিশেষ অতিথি হিসেবে তাল কাটোরা স্টেডিয়ামের মূল অনুষ্ঠানের উপস্থিত ছিল।