Hemant Soren: অমিত শাহর দরবারে হেমন্ত সোরেন! দ্রৌপদী-চালে বাজিমাত বিজেপির

Hemant Soren: সোমবার (২৭ জুন) নয়া দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র সঙ্গে সাক্ষাত করলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তথা ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা দলের প্রধান হেমন্ত সোরেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে এই ঘটনা গভীর তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। মঙ্গলবারই (২৮ জুন) আবার ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগের তদন্তের প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনে হাজিরা দিতে হবে হেমন্ত সোরেনকে।

Hemant Soren: অমিত শাহর দরবারে হেমন্ত সোরেন! দ্রৌপদী-চালে বাজিমাত বিজেপির
অমিত শাহর সঙ্গে সাক্ষাত হেমন্ত সোরেনের
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 27, 2022 | 7:46 PM

নয়া দিল্লি: রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে এখন সরগরম রাজধানীর রাজনৈতিক মহল। সোমবার (২৭ জুন) বিরোধীদের সর্বসম্মত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন যশবন্ত সিনহা। একই দিনে নয়া দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র সঙ্গে সাক্ষাত করলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তথা ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা দলের প্রধান হেমন্ত সোরেন। অথচ, বিজেপি বিরোধী শিবিরের অন্যতম মুখ হেমন্ত সোরেন। এমনকি, শুরু থেকেই তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিDrauরোধীদের ঐক্যবদ্ধ প্রার্থী দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে, এদিন নয়া দিল্লিতে গিয়ে বিরোধী শিবিরের নেতাদের সঙ্গে দেখা না করে অমিত শাহ-র সঙ্গে তাঁর সাক্ষাত, গভীর তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। আরও মজার বিষয়, মঙ্গলবারই (২৮ জুন) ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগের তদন্তের প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনে হাজিরা দেওয়ার কথা হেমন্ত সোরেনের।

ঝাড়খণ্ডে জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ে সরকার চালাচ্ছে জেএমএম। রাজ্যে বিজেপির সঙ্গে তীব্র বিরোধিতা রয়েছে তাদের। তার উপর, ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগ থেকেই দীর্ঘদিন লোকসভার সদস্য ছিলেন যশবন্ত। কাজেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থী যশবন্ত সিনহাকে সমর্থন করাটাই জেএমএম-এর পক্ষে স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু, সমস্যা তৈরি করেছেন দ্রৌপদী মুর্মু। ঝাড়খণ্ড রাজ্য আদিবাসী অধ্যূষিত। জেএমএম-এর বহু বিধায়কও আদিবাসী সম্প্রদায়ের। সেই আদিবাসী সমাজেরই প্রতিনিধি হিসেবে আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন দ্রৌপদী। তাই, তাঁকে সমর্থন না করে যশবন্তের প্রতি সমর্থনের হাত বাড়ানোটা জেএমএম-এর পক্ষে কঠিন।

আবার, দ্রৌপদীকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সমস্যার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক বাধাও রয়েছে জেএমএম-এর। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থন করা মানে, বিরোধী শিবির থেকে সরে যাওয়া। রাজ্য রাজনীতিতে বিজেপি বিরোধিতার ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি হবে। অন্যদিকে, দলের প্রতিষ্ঠাতা শিবু সোরেনকে আদিবাসীদের একচ্ছত্র নেতা হিসেবেই প্রচার করে থাকে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। দ্রৌপদী মুর্মু রাষ্ট্রপতি পদে আসীন হলে, আদিবাসী সমাজে শিবু সোরেনের থেকে উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে যাবেন দ্রৌপদী, এমন আশঙ্কা করছে জেএমএম।

গত শনিবারই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কোন প্রার্থীকে সমর্থন করা হবে, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠকে বসেছিল তারা। উপস্থিত ছিলেন শিবু সোরেনও। কিন্তু, কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি জেএমএম। ওই দিনই জেএমএম নেতারা জানিয়েছিলেন, সোমবার অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠক করবেন হেমন্ত সোরেন। দলের ঝাড়খণ্ডে সরকার চালাতে গিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে দল। সেই বিষয়েই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সঙ্গে আলোচনা করবেন হেমন্ত সোরেন, এমনটাই জানানো হয়েছিল। তারপর এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন হেমন্ত।

তবে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অমিত শাহ-হেমন্ত সোরেন আলোচনায় মুখ্য বিষয় হয়ে উঠতে পারে নির্বাচন কমিশনে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর হাজিরা দেওয়া। বিজেপির ঝাড়খণ্ড শাখা থেকে এই অভিযোগ করা হয়েছে। তাদের দাবি, হেমন্ত তাঁর মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারের অপব্যবহার করে রাঁচির এক পাথর খনির লিজ নিজের নামে করে নিয়েছেন। এই বিষয়ে জেরা করতে তাঁকে ২৮ জুন হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। তিনি বা তাঁর পক্ষত্রের কোনও আইনজীবী উপস্থিত না হলে তাঁর বিরুদ্ধে যে প্রমাণাদি রয়েছে, তার ভিত্তিতেই শুনানি এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে বলে সতর্ক করেছে কমিশন। এই তদন্তই কি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে ঘিরে জেএমএম-এর সিদ্ধান্তকে নিয়ন্ত্রণ করবে? এখন সেটাই দেখার।