নয়া দিল্লি: গত নির্বাচনেও হাতে হাত মিলিয়ে লড়াই করেছিলেন তারা। কিন্তু গেরুয়া ঝড়ের সামনে টিকতে পারেনি কংগ্রেস (Congress)-সমাজবাদী পার্টি (Samajwadi Party)জোট। তাই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে একাই লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই দল। এরইমাঝে আকাশে দেখা হয়ে গেল দুই দবের শীর্ষ নেতার। দিল্লি থেকে লখনউগামী বিমানে মুখোমুখি হলেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী (Priyanka Gandhi) ও সমাজবাদী নেতা অখিলেশ যাদব (Akhilesh Yadav)।
ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে শুরু করেছে দুই নেতার মাঝআকাশে সাক্ষাতের সেই ছবি। দেখা যাচ্ছে, বিমানে বাকি যাত্রীদের সঙ্গে লাইন দিয়ে উঠছেন প্রিয়ঙ্কা, ততক্ষণে নিজের আসনে পৌঁছে গিয়েছেন অখিলেশ। করোনা সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে দুজনের মুখই মাস্কে ঢাকা থাকলেও তারা একে অপরকে ঠিকই চিনতে পারেন। দেখে হাসিমুখে হাতও নাড়েন।
সামনেই উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন (Uttar Pradesh Assembly Election 2022)। জোরকদমে প্রচারে নেমে পড়েছে সমস্ত রাজনৈতিক দলই। গতকালও সেই প্রচারের উদ্দেশ্যেই লখনউ যাচ্ছিলেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। সেখান থেকে তিনি বারাবানকি যান দলীয় যাত্রার সূচনা করতে। অন্যদিকে, অখিলেশ যাদবও দিল্লিতে এসেছিলেন গুরুত্বপূর্ণ কাজ সারতে। একই বিমানে তিনিও লখনউ ফিরে যান।
২০১৭ সালে কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টি একসঙ্গে জোটে বিধানসভা নির্বাচন লড়েছিল। কিন্তু মোদী ও যোগী ম্যাজিকের সামনে টিকতেই পারেনি সেই জোট। ৪০৩টি আসনের বিধানসভা নির্বাচনে ১০৫টি আসনে লড়েছিল কংগ্রেস, বাকিগুলিতে সপা। কিন্তু কংগ্রেসের নিজস্ব খারাপ ফলাফলের পাশাপাশি জোটের কারণে সমাজবাদী পার্টির ভোটব্যাঙ্কেও প্রভাব পড়ে। মাত্র ৪৭টি আসন পায় তারা, যেখানে ২০১২ সালের বিধানসভা নির্বাচনে একা লড়ে অখিলেশ যাদবের দল ২২৪টি আসনে জিতেছিল।
জোটের এই চরম ব্যর্থতার পরই অখিলেশ জানিয়ে দিয়েছিলেন কংগ্রেসের সঙ্গে আর জোট বাঁধবেন না তিনি। এই প্রসঙ্গে গত জুন মাসেই তিনি বলেন, “২০১৭ সালের জোটের অভিজ্ঞতা আমাদের কাছে মোটেও ভাল ছিল না। আমরা ১০০-রও বেশি আসন ছেড়ে দিয়েছিলাম কিন্তু ওরা (কংগ্রেস) জিততে পারেনি।”
এদিকে, সম্প্রতি লখিমপুরের হিংসার ঘটনার পর যোগী সরকারকে দোষারোপের পাশাপাশি অখিলেশ যাদব ও মায়াবতীর দিকেও অভিযোগের আঙুল তোলেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। তাঁর অভিযোগ, বিরোধী হিসাবে দুই দলই ব্যর্থ কারণ তারা কেউই উত্তর প্রদেশের সাধারণ মানুষের কথা তুলে ধরতে পারেনি।
উত্তর প্রদেশ নির্বাচনে জয়ের জন্য দলের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর উপরই ভরসা রাখছে কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবেও প্রিয়ঙ্কার নাম ঘোষণা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই প্রিয়ঙ্কা জানিয়ে দিয়েছেন, মোট বিধানসভা আসনের ৪০ শতাংশ আসনে মহিলা প্রার্থীদের টিকিট দেওয়া হবে। লখিমপুর কাণ্ড থেকে শুরু করে করোনাকালে গঙ্গায় মৃতদেহ- প্রচারে সমস্ত প্রসঙ্গই তুলে আনছেন প্রিয়ঙ্কা। অন্যদিকে, অখিলেশ যাদবও সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে পেট্রলৃ-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আক্রমণ করেছেন।