নয়া দিল্লি: এনডিএ বনাম ইউপিএ ৩ নয়, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে দেখা যেতে পারে এনডিএ বনাম পিডিএ। কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি যে জোট গড়ার পরিকল্পনা করছে, সেই জোটের নাম হতে পারে ‘পেট্রিওটিক ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স’ (দেশপ্রেমী গণতান্ত্রিক জোট) বা পিডিএ। নামের বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। পরের মাসে সিমলায় যে বিরোধী দলের নেতাদের দ্বিতীয় বৈঠক হবে, সেখানেই এই নামটিতে সিলমোগর পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, পটনার বৈঠকের পরদিনই বিহারে দলীয় নেতা-কর্মীদের সামনে ভাষণ দেওয়ার সময় সিপিআই-এর সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা পিডিএ নামটি ফাঁস করেন। তিনি আরও জানান, সিমলার বৈঠকে পিডিএ-কে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, আগামী ১০ থেকে ১২ জুলাইয়ের মধ্যে সিমলায় কংগ্রেসের আয়োজনে বিরোধী নেতারা তাঁদের পরের বৈঠক করবেন বলে ঠিক করেছেন।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডি রাজা জানিয়েছেন, জোটের নাম ‘পিডিএ’ হতে পারে। তবে এই বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে, বিরোধী দলগুলির জোটের নামে ধর্মনিরপেক্ষতা এবং গণতান্ত্রিক আদর্শের প্রতিফলন অবশ্যই থাকবে। তিনি জানিয়েছেন, তামিলনাড়ুতে ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট আছে, বিহারে মহাজোট রয়েছে। সেই ধারাবাহিকতা মেনেই, জোটের এমন একটি নাম দেওয়া হবে, যেখানে বিরোধীদের সাধারণ আদর্শগুলি প্রকাশ পাবে। তবে, নামের থেকেও লক্ষ্যে বেশি জোর দিচ্ছে বিরোধীরা। ডি রাজা জানিয়েছেন, এনডিএকে পরাজিত করাই বিরোধী দলগুলির প্রাথমিক লক্ষ্য এবং এই বিষয়ে বিরোধীদের কারও মনে কোনও দ্বিধা নেই।
যদিও আরজেডি নেতারা জানিয়েছেন, নতুন জোটের নাম নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। সিমলার বৈঠকে এই বিষয়ে আলোচনা করা হবে। তবে, বৈঠকের পর যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা গিয়েছিল, তাদের বিরোধী নয়, ‘দেশপ্রেমিক’ বলা উচিত। কাজেই নাম নিয়ে একেবারেই আলোচনা হয়নি, তা হয়তো নয়। এই প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, প্রস্তাবিত বিরোধী জোট ইতিমধ্যেই একটি আকার পেতে শুরু করেছে। সিমলার বৈঠকে এই জোটের কাঠামো এবং আসন ভাগাভাগির মতো গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
এর আগে, ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর, কংগ্রেস, বামদলগুলি এবং আরও বেশ কয়েকটি বিরোধী দল মিলে ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স বা ইউপিএ জোট গঠন করেছিল। ২০০৪ এবং তারপর ২০০৯ – পরপর দুই মেয়াদে সরকার গঠন করেছিল ইউপিএ জোট। ইউপিএ জোটে বড় দলের ভূমিকায় ছিল কংগ্রেস। নয়া জোটে কংগ্রেসের কী ভূমিকা হতে চলেছে, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। বিরোধীদের অনেকেই কংগ্রেসকে আর বড় দলের ভূমিকায় দেখতে চায় না। এর আগে মুম্বইয়ে শরদ পওয়ারের সঙ্গে বৈঠক করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “ইউপিএ শেষ। ইউপিএ বলে আর কিছু নেই।” পটনার বৈঠকের পর রাজনৈতিক মহল মনে করছে ইউপিএ-র দিন সত্যিই শেষ। এবার এনডিএ-কে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবে পিডিএ।