পুনে: পুলিশ কর্মী, জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড থেকে চিকিৎসক, পুনের পোর্শে কাণ্ডে ১৭ বছর ৮ মাসের নাবালককে বাঁচাতে নেমে পড়েছিল সকলে। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে, পরপর দুটি বারে মদ খেতে দেখা গিয়েছিল তাকে। তারপরও, তার রক্তের পরীক্ষার রিপোর্টে বলা হয়েছিল, তাতে অ্যালকোহল ছিল না। অর্থাৎ, সে সেই রাতে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালায়নি। দুই ২৪ বছরের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকে পিষে দেওয়া, নিছকই দুর্ঘটনা। জনমানসে সন্দেহ ছিল সেই সময়ই। এবার তাই সত্যি প্রমাণ হল। রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে হেরফের করার অভিযোগে, সোমবার গ্রেফতার করা হল দুই ডাক্তার-সহ তিনজনকে।
এদিন, সাসুন হাসপাতালের ডাঃ অজয় তাওড়ে এবং ডা. হরি হারনরকে গ্রেফতার করেছে পুনে ক্রাইম ব্রাঞ্চ। এছাড়া, অতুল ঘাটকাম্বলে নামে সাসুন হাসপাতালেরই আরও একজন কর্মীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। পুনের পুলিশ কমিশনার অমিতেশ কুমার জানিয়েছেন, সাসুন হাসপাতালে যে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল এবং ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল, তা আদৌ অভিযুক্ত কিশোরের নয়। অর্থাৎ নমুনা বদলে দেওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, “১৯ মে রাত বেলা ১১টা নাগাদ, সাসুন হাসপাতালে কিশোরের রক্তের যে নমুনা নেওয়া হয়েছিল, তা একটি ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। অন্য এক ব্যক্তির রক্তের নমুনা নিয়ে ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছিল। রক্তের নমুনা বদলে দিয়েছিলেন সিএমও ডা. হরি হারনর। তদন্ত করে আমরা জানতে পেরেছি, সাসুন হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের এইচওডি, ডা. অজয় তাওড়ের নির্দেশেই এই কাজ করেছিলেন হরি হালনর।” অমিতেশ কুমার আরও জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার দিন ডা. তাওড়ে এবং অভিযুক্ত কিশোরের বাবার মধ্যে ফোনে কথা হয়েছিল। দুই ডাক্তারেরই ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার পর অভিযুক্ত কিশোরের রক্তের দুটি নমুনা দুটি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে নেওয়া হয়েছিল। প্রথম রক্তের নমুনায় অ্যালকোহল পাওয়া যায়নি। কিন্তু দ্বিতীয় পরীক্ষায় অ্যালকোহল পাওয়া গিয়েছিল। তাতেই রক্তের নমুনায় কোনও হেরফের করা হয়েছে বলে সন্দেহ জেগেছিল। এরপর, রক্তের নমুনা দুটির ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষায় জানা যায়, নমুনাগুলি এক ব্যক্তির নয়। অর্থাৎ, রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে যাতে অ্যালকোহলের উল্লেখ না থাকে, তার জন্য নাবালকের রক্তের নমুনা অন্য ব্যক্তির সঙ্গে বদলে দেওয়া হয়েছিল।