চণ্ডীগঢ়: নির্বাচনের আগে দলনেত্রীর কথাই অক্ষরে অক্ষরে পালন করছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নি (Charanjit Singh Channi)। সম্প্রতিই কংগ্রেসের অন্দরে একতা ও সম্প্রীতি বজায় রাখা নিয়ে যে বার্তা দিয়েছিলেন সনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi), তা মাথায় রেখেই নতুন মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নভজ্যোত সিং সিধু (Navjot Singh Sidhu)-র কথা শুনতে তাঁর কোনও সমস্যা নেই।
বুধবারই একটি সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে মুখ্যমন্ত্রী চন্নি বলেন, “নভজ্যোত সিং সিধু পঞ্জাব কংগ্রেসের সভাপতি। উনি যা বলবেন, তা কোনও ক্ষতির জন্য নয়। আমার ওনার কথা শুনতে কোনও সমস্যা নেই। যদি আমার সঙ্গে কথা বলার আগে তিনি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন, তাতেও আমার কোনও সমস্যা নেই। সংবাদমাধ্যমের সূত্রে যোগাযোগ রাখলেও আমার সমস্যা নেই।”
মুখ্যমন্ত্রী পদে বসার পর থেকেই ঠাণ্ডা যুদ্ধ শুরু হয়েছে নভজ্যোত সিং সিধু ও চরণজিৎ সিং চন্নির। মুখে না বললেও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার অন্য়তম কারণ ছিলেন চন্নিই, এ কথা প্রায় সকলেরই জানা। মুখ্যমন্ত্রী পদে চন্নির বসা এবং তার নিয়োগ করা কয়েকজন আধিকারিকের বিরোধিতা করেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন সিধু। পরে গান্ধী পরিবারের হস্তক্ষেপে অবশেষে চলতি মাসে সেই ইস্তফা পত্র প্রত্যাহার করে নেন তিনি।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং(Amarinder Singh) ক্ষমতায় থাকাকালীন একাধিকবার পঞ্জাবের উপর ঋণের বোঝা নিয়ে আক্রমণ করেছিলেন সিধু। গত সপ্তাহেও তিনি ফের টুইট করে লেখেন, “ঋণে জর্জরিত রাজ্যগুলির মধ্যে অন্যতম হল পঞ্জাব, যেখানে রাজ্যের জিডিপির প্রায় ৫০ শতাংশই ঋণের পরিমাণ।” বুধবার এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি অর্থনীতির ছাত্র, তাই অর্থনীতি ভালভাবেই বুঝি। আমি সস্তায় মানুষকে বিদ্যুৎ পরিষেবা দিয়ে বহুমূল্য চুক্তি করা থেকে রক্ষা করেছি।”
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন (Punjab Assembly Election 2022) প্রসঙ্গেও তিনি জানান, রাজ্যের মানুষই ঠিক করবে কে মুখ্যমন্ত্রী থাকবে। চন্নি বলেন,”আমি কখনওই ভাবিনি আমি মুখ্যমন্ত্রী হব। দল আমাকে এই পদ দিয়েছে। আগামিদিনেও দল ও পঞ্জাবের সাধারণ মানুষই ঠিক করবেন কে মুখ্যমন্ত্রী হবে, আমি এই বিষয়ে ভাবতে চাই না।”
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, তিনি কেবল সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে চান। তিনি দারিদ্রতা দেখেছেন, তাই সাধারণ মানুষের সমস্যাগুলি বোঝেন। সেই কারণেই তিনি মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নয়, মানুষের মাঝে থেকেই কাজ করতে চান। হাতে অল্প সময় থাকলেও, সেই সময়ের মধ্যেই তিনি সর্বাধিক কাজ করতে চান বলে জানান।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “বিগত সাড়ে চার বছর ধরে উনি সাধারণ মানুষের জন্য কোনও কাজ করেননি। সেই কারণেই তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং উনি আর দলেও নেই।”