নয়া দিল্লি: পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পরই ক্রমশ সুর চড়াতে শুরু করেছেন বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস (Congress) নেতারা। এদিকে, নিশ্চুপ শীর্ষ নেতৃত্ব। কার্যত পর্দার আড়ালে চলে গিয়েছেন রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। অন্যদিকে, চলতি সপ্তাহেই জি-২৩(G-23)-র অন্যতম নেতা গুলাম নবি আজ়াদ(Ghulam Nabi Azad)-র সঙ্গে দেখা করেছিলেন দলনেত্রী সনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi)। বিক্ষুব্ধদের মন গলাতে কী প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা না গেলেও, হাত গুটিয়ে বসে নেই শীর্ষ নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে খবর, বিক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গে কথা বলার পরই কংগ্রেসের শীর্ষনেতৃত্বরা গান্ধী পরিবারের বাইরে এমন কোনও একজন মুখের খোঁজ করা হচ্ছে যিনি দলের হাল ফেরাতে পারবেন।
প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী, যার নেতৃত্ব দেওয়ার ভঙ্গি জি-২৩ নেতাদের কাছে বড় চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে, তিনিই ঘনিষ্ঠ মহলের কাছে দলের হারের মূল তিনটি কারণ খুঁজে বের করেছেন। গান্ধীদের মতে দলের মতার্দশ, সংগঠন ও প্রযুক্তি- এই তিনটি কারণেই সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ধীরে ধীরে গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে কংগ্রেস।
উল্লেখ্য, গত ১৩ মার্চই কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ছিল। সেখানেই রাহুল গান্ধী প্রশ্ন করেছিলেন, “আপনারা বাজার থেকে যে কোনও প্রযুক্তি কিনতে পারেন। যেকোনও রাজনৈতিক দলই তা কিনতে পারে। কিন্তু কোথা থেকে মতাদর্শ কিনবেন?”
ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, বৈঠকের পরই গান্ধী পরিবারের তরফে এমন মুখের খোঁজ করা হচ্ছে, যারা আগামিদিনে দলে বড় কোনও ভূমিকা পালন করতে পারবে। এখনও অবধি যে নেতাদের নাম উঠে এসেছে, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন মুকুল ওয়াসনিক, অশোক গেহলট, ভূপেশ বাঘেল, মল্লিকার্জুন খাড়গে ও সচিন পাইলট।
অন্যদিকে, জি-২৩ নেতারাও দলে পরিবর্তনের ডাক দিয়েছেন। তাদের দাবি, কংগ্রেসের হাল ফেরাতে সম্মিলিত নেতৃত্বের প্রয়োজন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও সর্বস্তরের মতামত গ্রহণ করা উচিত। সূত্রের খবর, বিক্ষুব্ধ এক জি-২৩ নেতাকে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে রাহুল গান্ধী বলেছিলেন তাঁর নিজের রাজ্যের সাংগঠনিক দায়িত্বভার গ্রহণ করতে। সনিয়া গান্ধীও গুলাম নবি আজ়াদের কাছ থেকে নামের তালিকা চেয়েছেন যারা আগামিদিনে দলের হাল ফেরাতে পারবে।
গত শুক্রবারই দলনেত্রী সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন গুলাম নবি আজ়াদ। মধুসূদন মিস্ত্রির নেতৃত্বে কংগ্রেসের যে কেন্দ্রীয় নির্বাচনী কমিটি রয়েছে, তাতে পরিবর্তন আনার পরামর্শ দিয়েছেন প্রবীণ নেতা, এমনটাই সূত্রের খবর। কংগ্রেসের সংসদীয় কমিটিতেও একইভাবে রদবদলের দাবি করা হয়েছে।
কংগ্রেস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, গুলাম নবি আজাদের সঙ্গে কথা বলার পর থেকেই বিক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন দলনেত্রী সনিয়া গান্ধী। তবে সনিয়া গান্ধীও নির্দিষ্ট এক সাংসদ, যিনি জি-২৩র সদস্য, তাঁর উপর ক্ষুব্ধ বলেই জানা গিয়েছে।