নয়া দিল্লি: অনুগামীদের অতিরিক্ত ভালবাসাই গলার কাটা হয়ে গিয়েছে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের। কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জল্পনা শুরু হতেই দলের অন্দরে মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে য়ে টানাটানি শুরু হয়ে গিয়েছিল, তাতে শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে মুখ পুড়েছে গেহলটের। বুধবারই তিনি তড়িঘড়ি দিল্লিতে আসেন দলনেত্রী সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করার জন্য, তাঁর মান ভাঙানোর জন্য। সূত্রের খবর, সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকে দলের শৃঙ্খলা নিয়েই কথা বলেছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নেতৃত্বে রাজস্থানে কখনও দলের অন্দরে শৃঙ্খলার অভাব হয়নি বলেও তিনি দাবি করেন। সম্প্রতি যা ঘটেছে, তাকেও তিনি গুরুত্ব না দিয়ে বলেছেন, “এইরকম ঘটনা তো হতেই থাকে।”
অশোক গেহলট যদি কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হন এবং তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়তে হয়, তবে রাজস্থানের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়েই দলের অন্দরে বিরোধ শুরু হয়েছিল। গেহলটের অবর্তমানে তাঁর গদিতে বসতে পারেন সচিন পাইলট, এই জল্পনা সামনে আসতেই দলের অন্দরে বিদ্রোহ শুরু হয়। গেহলট ঘনিষ্ঠ তিন বিধায়কের নেতৃত্বেই ৯২ জন বিধায়ক ইস্তফা দেওয়ার হুমকি দেন। কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে অজয় মাকেন ও মল্লিকার্জুন খাড়গেকে পর্যবেক্ষক হিসাবে পাঠানো হলেও, তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে রাজি হননি বিধায়করা। নিজেরাই একটি প্রস্তাবনা পাশ করেন, যাতে বলা হয় যে ২০২০ সালে সচিন পাইলটের বিদ্রোহের কারণে যখন সরকার ভাঙতে বসেছিল, সেই সময় যারা সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, তাদের মধ্যে থেকে কাউকেই যেন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বেছে নেওয়া হয়।
ये हमारी पार्टी की परम्परा आज भी है, 50 साल से देख रहा हूँ, नबर वन जो होता है कांग्रेस प्रेसिडेंट, इंदिरा जी के वक्त से मैं देख रहा हूँ, राजीव जी के वक्त से मैं देख रहा हूँ, चाहे नरसिम्हा राव जी थे, सोनिया गांधी जी कांग्रेस प्रेसिडेंट हैं, हमेशा कांग्रेस के अंदर डिसिप्लिन है। pic.twitter.com/MrayXZDNyM
— Ashok Gehlot (@ashokgehlot51) September 28, 2022
ইতিমধ্যেই দুই পর্যবেক্ষক দলনেত্রীর কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। দলে বিদ্রোহের জন্য তাঁরা অশোক গেহলটকে দায়ী না করলেও, তাঁর ঘনিষ্ঠ তিন বিধায়কের নাম উল্লেখ করেছেন। ওই তিন বিধায়ককে শো-কজ নোটিসও পাঠানো হয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যেই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
দলের অন্দরে এই বিদ্রোহ নিয়ে শীর্ষ নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ হতেই তড়িঘড়ি দিল্লি ছুটে আসেন অশোক গেহলট। দলনেত্রী সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাতের আগে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “কংগ্রেসে বরাবরই শৃঙ্খলা রয়েছে। এটাই দলের ঐতিহ্য। আমি বিগত ৫০ বছর ধরে দেখে আসছি। ইন্দিরা গান্ধীর সময় থেকে শুরু করে, তারপর রাজীব গান্ধী, নরসিমহা রাও, আর এখন সনিয়া গান্ধী। এনাদের নেতৃত্বে দলে বরাবরই শৃঙ্খলা ছিল।”
রাজস্থানে কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে তিনি বলেন, “অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এই ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকে। এটা ঘর কি বাত। বর্তমানে দেশ বিপদে রয়েছে। আমরা সবাই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে চিন্তিত। সেই কারণেই রাহুল গান্ধী ভারত জোড়ো যাত্রার সূচনা করেছেন এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে সম্প্রীতির বার্তা দিচ্ছেন।”