নয়া দিল্লি : ভারতীয় বায়ুসেনায় মহিলাদের অংশগ্রহণ নিয়ে বড় ঘোষণা করলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি মঙ্গলবার জানিয়েছেন, ছয়বছর আগে মহিলাদের যুদ্ধবিমান চালানোর পরীক্ষা হিসেবে যা শুরু হয়েছিল তা এইবার স্থায়ী বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠবে। ২০১৫ সালে মহিলাদের যুদ্ধবিমানের পাইলট করার ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে তা অবশ্য় পরীক্ষামূলকভাবে। তবে সেই পরীক্ষামূলক নিয়োগ এখন স্থায়ী হতে চলেছে। তিনি বলেছেন, এই পরীক্ষামূলক স্কিমকে স্থায়ী নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার।
রাজনাথ সিং টুইটারে লিখেছেন, “এটি ভারতের ‘নারী শক্তি’ এবং নারীর ক্ষমতায়নের প্রতি আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতিশ্রুতির সাক্ষ্য প্রমাণ।” ২০১৬ সালে IAF এর ফাইটার স্ট্রিমে তাঁদের অন্তর্ভুক্তির জন্য পরীক্ষামূলক স্কিমটি বাস্তবায়িত হওয়ার পরে ১৬ জন মহিলা ফাইটার পাইলট নিয়োগ হয়েছে। এটি বায়ুসেনার ইতিহাসে একটি মাইলফলক। একজন IAF মুখপাত্র বলেছেন, “প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এটিকে একটি স্থায়ী প্রকল্প করার জন্য ছাড়পত্র দিয়েছে।” এই বিষয়টি এমন সময় সামনে আসে যখন সশস্ত্র বাহিনীতে ইতিমধ্যে মহিলাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে। নৌসেনা বাহিনীতেও এরকম সুযোগের কথা পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পুরুষদের পাশাপাশি যুদ্ধজাহাজে মহিলারা যাতে অংশ নিতে পারে তার প্ল্যানও তৈরি হচ্ছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে মহিলারা এখন ফাইটার জেট ওড়ানোর সুযোগ পেয়েছেন এবং এখন তাঁরা স্থায়ীভাবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য়ও যোগ্য বলে বিবেচিত।
এছাড়াও, ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি ২০২২ সালের জুন মাসে তার প্রথম ব্যাচের মহিলা ক্যাডেটদের অন্তর্ভুক্ত করতে প্রস্তুত। সুপ্রিম কোর্ট ২০২১ সালের অক্টোবরে একটি যুগান্তকারী আদেশের মাধ্য়ে মহিলাদের জন্য অ্যাকাডেমির দরজা খুলে দিয়েছিল। IAF-এর সর্বশেষ রাফাল জেট ছাড়াও, IAF-এর মহিলা পাইলটরাও মিগ-২১, সুখোই-৩০ এবং মিগ-২৯ ফাইটার ওড়াচ্ছেন। ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট শিবাঙ্গী সিং, দেশের প্রথম রাফাল পাইলট গত সপ্তাহে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে IAF ট্যাবলোর অংশ ছিলেন। সেন্টার অফ এয়ার পাওয়ার স্টাডিজের পরিচালক প্রাক্তন এয়ার মার্শাল অনিল চোপড়া বলেছেন, “মহিলারা রাফাল এবং এসইউ-৩০ সহ টপ-এন্ড ফাইটার প্লেন চালাচ্ছেন। পরীক্ষামূলক স্কিমটিকে স্থায়ীভাবে রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত তাঁদের ক্ষমতার স্বীকৃতি। তাঁরা IAF এর সমস্ত শাখায় অত্যন্ত ভাল কাজ করেছে।”
সেনাবাহিনী, নৌ ও বায়ুসেনাবাহিনীতে বর্তমানে ৯ হাজারের বেশি নারী কর্মরত আছেন। কর্মজীবনে মহিলাদের অগ্রগতি বাড়াতে পরিষেবাগুলি তাঁদের আরও সুযোগ দিয়েছে। গত সাত বছরে সশস্ত্র বাহিনীতে মহিলাদের সংখ্যা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। যেখানে নারীদের এখন ফাইটার প্লেন ওড়ানোর এবং যুদ্ধজাহাজে সেবা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে; পদাতিক বাহিনী বা ইনফ্যান্ট্রিতে ট্যাঙ্ক এবং যুদ্ধের ক্ষেত্রে এখনও মহিলাদের সাদরে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। ১৯৯২ সালে তাঁদের প্রথমবারের মতো মেডিকেল স্ট্রিমের বাইরে সশস্ত্র বাহিনীতে যোগদানের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। ২০২১ সালের মে মাসে সেনাবাহিনী মিলিটারি পুলিশের কর্পসে মহিলাদের প্রথম ব্যাচকে অন্তর্ভুক্ত করেছিল। প্রথমবার তাঁদের নন-অফিসার ক্যাডারে সামরিক বাহিনীতে যোগদানের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।