নয়াদিল্লি: তিনি শিল্পপতি নারায়ণ মূর্তির স্ত্রী। তাঁর জামাই ঋষি সুনক ব্রিটেনের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী। তবে তিনি নিজের পরিচয়েই উজ্জ্বল। তিনি সুধা মূর্তি। একাধারে লেখক। রাজ্যসভার সাংসদ। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁর কথা শুনতে উপচে পড়ে ভিড়। ধনকুবের হয়েও তাঁর সরল জীবনযাপন চোখে পড়ার মতো। সেই সুধা মূর্তি গত ৩০ বছরে একটাও শাড়ি কেনেননি। কারণ জানলে অবাক হবেন।
ইনফোসিসের চেয়ারম্যান নারায়ণ মূর্তির সাফল্যের পিছনে সুধা মূর্তির অবদানের কাহিনি নানা সময় শোনা যায়। সুধা মূর্তি নিজেও ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। তাঁর সহজ-সরল ভাষায় লেখা শিশুদের বই পড়তে উৎসুক থাকেন পাঠকরা। তাঁর জীবন-যাপনও সাধারণ। সেই সুধা মূর্তি গত ৩০ বছর কেন শাড়ি কেনেননি, একটি অনুষ্ঠানে নিজেই জানালেন। দ্য ভয়েস অব ফ্যাশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “বলা হয় যে তুমি যখন কাশী(বারাণসী) যাবে, তখন নিজের কোনও প্রিয় কিছুকে ত্যাগ করতে হবে। আমি শপিং করতে খুব ভালবাসতাম। আমি মা গঙ্গার কাছে শপথ করলাম যে এই জীবনে আর শপিং করব না। বিশেষ করে শাড়ি। এখন আমি শুধু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রই কিনি।”
বছর তিয়াত্তরের সুধা মূর্তি বলেন, তাঁর পরিবার খুবই সাধারণ জীবন-যাপনে বিশ্বাস করতেন। সেভাবেই তাঁকে বড় করা হয়েছে। তাঁর কথায়, “৬ বছর আগে যখন আমার মা মারা যান, তখন তাঁর কাছে ৮-১০টা শাড়ি ছিল। ৩২ বছর আগে যখন আমার ঠাকুরমা মারা যান, তাঁর কাছে ৪টে শাড়ি ছিল। খুব কম জিনিস নিয়ে সাধারণ জীবন-যাপন আমার কাছে সহজ মনে হয়।”
বছর তিরিশ আগে কাশীতে গঙ্গাস্নানের পর থেকে আর শাড়ি কেনেনি সুধা মূর্তি। তাহলে তিনি শাড়ি পান কোথায়? এর উত্তরও দিয়েছেন নিজেই। তাঁর বোনেরা, বন্ধুরা এবং কখনও কখনও যে NGO সংস্থার সঙ্গে কাজ করেন, তাঁরা তাঁকে শাড়ি উপহার দেন। তিনি বলেন, প্রথম দিকে তাঁর বোনেরা বছরে একাধিক শাড়ি উপহার দিতেন। একদিন তিনি বোনেদের বললেন, তাঁর কাছে অনেক শাড়ি জমা হয়েছে। একটা শাড়ি তাঁর অনেকদিন চলে জানিয়ে সুধা মূর্তি বলেন, “গত ৫০ বছর আমি শাড়ি পরছি। শাড়ি পরার পর আয়রন করে রাখি। মাটির সঙ্গে শাড়ির পাড় লাগবে, এতটা নিচে শাড়ি পরি না। ফলে শাড়ি নোংরাও কম হয় এবং অনেকদিন ভাল থাকে।”