নয়া দিল্লি: করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের (Second Wave of COVID-19) দাপট চলাকালীনই নয়া আতঙ্ক হিসাবে দেখা দিয়েছিল মিউকরমাইকোসিস (Mucormycosis) বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস (Black Fungus)। এ বর ডেঙ্গু (Dengue) রোগীর শরীরেও এই ছত্রাক সংক্রমণের খবর মিলল। দিল্লির এক হাসপাতালে মিউকরমাইকোসিস নিয়ে ভর্তি হয়েছেন ৪৯ বছরের এক ব্যক্তি, মাত্র ১৫ দিন আগেই তিনি ডেঙ্গু থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। নতুন করে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের আবির্ভাবে চিন্তিত চিকিৎসক মহলও।
শনিবারই দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালের তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, নতুন করে এক ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগীর খোঁজ মিলেছে। গ্রেটার নয়ডার বাসিন্দা তালিব মহম্মদ নামক ওই ব্যক্তি সম্প্রতিই ডেঙ্গু থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। তার শরীরে মিউকরমাইকোসিস ছত্রাকের উপস্থিতি মিলেছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মাত্র ১৫ দিন আগেই ডেঙ্গু থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন ওই ব্যক্তি। কয়েকদিন আগেই তিনি জানান যে, ডেঙ্গু থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পর থেকেই তিনি এক চোখে কিছু দেখতে পারছেন না। গত বছরের শেষভাগ থেকেই সাধারণত করোনা রোগীর দেহে এই ছত্রাক সংক্রমণের দেখা মিললেও ডেঙ্গু থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা কোনও ব্যক্তির শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণ অত্যন্ত বিরল ঘটনা।
ওই রোগীর চিকিৎসক, ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালের ইএনটি বিশেষজ্ঞ ডঃ সুরেশ সিং নারুকা জানান, এটি অত্যন্ত বিরল ঘটনা। মিউকরমাইকোসিস সংক্রমণের কারণে নাক, চোখ এমনকি মস্তিষ্কের সুস্থ কোষগুলিও নষ্ট হয়ে যেতে পারে। যদি দ্রুত রোগ চিহ্নিতকরণ ও চিকিৎসা না শুরু হয়, তবে দৃষ্টিশক্তি হারানো, নাক, গালের অংশ বাদ দিতে হতে পারে।
হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের প্রধান ডঃ অতুল আহুজাও জানান, সদ্য ডেঙ্গু তেকে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর মিউকরমাইকোসিসের চিকিৎসা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি। সেরা চিকিৎসাটুকু দেওয়ার পরও ওই রোগী চিরকালের মতো দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারেন। সংক্রমণ রুখতে তাঁর দুটি চোখই বাদ দিতে হতে পারে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালীনই রাজধানী দিল্লি সহ গোটা দেশ জুড়ে মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল। মধুমেহ বা অন্যান্য কোনও কো-মর্ডিবিটি যুক্ত রোগীদের মধ্যে এই ছত্রাক সংক্রমণ দেখা যাচ্ছিল। মূলত করোনার দ্রুত চিকিৎসার জন্য় ব্যবহৃত স্টেরয়েডের কারণেই এই ছত্রাক সংক্রমণ হচ্ছিল বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। দেশজুড়ে প্রায় কয়েক হাজার রোগী ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার পরই এই সংক্রমণকে “মহামারি” বলে ঘোষণা করা হয়।
চোখ ও কানের চারপাশে ব্যথা অনুভব করা, লাল হয়ে যাওয়া, হালকা জ্বর, নাক থেকে রক্তপাত হওয়া (এপিস্ট্যাক্সিস), সাইনাসের মারাত্মক যন্ত্রণা, মাথাব্যথা, কাশি, শ্বাসকষ্ট, রক্ত বমিভাব, মানসিক অস্থিরতা ও দৃষ্টিশক্তি হ্রাস হওয়া, চোখে আংশিক ঝাপসা দেখলেই চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ নেওয়ার উপদেশ দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: Bihar Journalist Murder: সাহসিকতার মাশুল! ৪ দিন পর রাস্তার ধার থেকে উদ্ধার সাংবাদিকের আধ পোড়া দেহ