Garbha Sanskar: গর্ভ থেকেই কীভাবে ‘সংস্কারী এবং দেশভক্ত’ সন্তান জন্মাবে? বিশেষ কর্মসূচি আরএসএস-এর শাখার
Garbha Sanskar programme for pregnant women: গর্ভ থেকেই জন্ম নেবে 'সুসংস্কারী এবং দেশভক্ত' শিশু। এই লক্ষ্যে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য 'গর্ভ সংস্কার' কর্মসূচি চালু করল রাষ্ট্রীয় সেবিকা সমিতির শাখা সংগঠন।
হায়দরাবাদ: গর্ভ থেকেই জন্ম নেবে ‘সুসংস্কারী এবং দেশভক্ত’ শিশু। এর জন্য মহিলাদের গর্ভবস্থায় ভগবদ্গীতা এবং রামায়ণের মতো ধর্মীয় গ্রন্থ অধ্যয়ন করতে হবে, সংস্কৃত মন্ত্র উচ্চারণ করতে হবে এবং যোগাভ্যাসের অনুশীলন করতে হবে। রবিবার (১১ জুন), হায়দরাবাদ থেকে এই বিষয়ে একটি বিশেষ প্রচার অভিযান শুরু করল হিন্দুত্ববাদী মহিলা সংগঠন, ‘রাষ্ট্র সেবিকা সমিতি’-র সহযোগী সংগঠন ‘সম্বর্ধিনী ন্যাস’। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই প্রচার অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘গর্ভ সংস্কার’। সারা দেশে জুড়ে এই প্রচার অভিযান চলবে। আরএসএস-এর সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকদের এই প্রচারে কাজে লাগানো হবে।
সম্বর্ধিনী ন্যাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গোটা দেশকে পাঁচটি অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি অঞ্চলের জন্য ১০ জন করে চিকিৎসকের একটি করে দল গঠন করা হয়েছে। আয়ুর্বেদিক, হোমিওপ্যাথি এবং অ্যালোপ্যাথি – তিন শাখার চিকিৎসকরাই থাকবেন এই দলগুলিতে। এই দলগুলি নিজ নিজ এলাকা থেকে ২০ জন গর্ভবতী মহিলাকে ধর্মগ্রন্থ অধ্যয়নে উৎসাহ দেবেন। আর এই কর্মসূচির বাস্তবায়নের তদারকি করবেন একটি আট সদস্যের কেন্দ্রীয় দল।
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস-এর সমান্তরাল সংগঠন হল রাষ্ট্র সেবিকা সমিতি। আর এই হিন্দুত্ববাদী মহিলা সংগঠনেরই অন্যতম এক শাখা সম্বর্ধিনী ন্যাস। গর্ভ সংস্কার কর্মসূচি সম্পর্কে সম্বর্ধিনী ন্যাস দাবি করেছে, গর্ভাবস্থার নয় মাসে যদি বাবা-মা সংস্কৃত মন্ত্র পাঠ করেন এবং ধর্মশাস্ত্র পাঠ করেন, তবে গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। সংগঠনের মতে, সংস্কৃত শ্লোক উচ্চারণের ফলে গর্ভস্থ শিশুর কাছে ইতিবাচক কম্পন পৌঁছয়। এর ফলে গর্ভেই তাদের মধ্যে ভারতীয় মূল্যবোধ এবং সংস্কার তৈরি হয়। গর্ভধারণ থেকে প্রসব পর্যন্ত গর্ভাবস্থার প্রতি একটি ‘বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি’ নিয়ে এই কর্মসূচি তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে দেশে ‘পরবর্তী প্রজন্মের দেশপ্রেমিকরা’ তৈরি হবে। সংগঠনের এক সদস্য বলেছেন, “ছেলে হোক বা মেয়ে হোক, জন্ম থেকেই তাদের মধ্যে ভালো সংস্কার, ভালো চিন্তাভাবনা আসা উচিত এবং তাদের দেশভক্ত হওয়া উচিত। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন সেবা, মূল্যবোধ, সংস্কৃতি এবং মহিলাদের প্রতি সম্মানের ভাবনা নিয়েই এই পৃথিবীতে আসে, তার জন্য়ই এই কর্মসূচি।”
তবে, শুধু ধর্মগ্রন্থ পাঠ কিংবা সংস্কৃতি মন্ত্র উচ্চারনই নয়, গর্ভে থাকা শিশুদের সঙ্গে কথা বলা, তাদের পুষ্টিকর খাবার দেওয়া এবং বেড়ে ওঠার জন্য একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ প্রদান-সহ শিশুর যত্ন নেওয়ার বিষয়ে একটি বিস্তৃত নির্দেশিকা দেওয়া হবে ন্যআসের পক্ষ থেকে। এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী মহিলাদের যাতে স্বাভাবিক উপায়ে প্রসব হয়, তার জন্য তাঁদের যোগব্যায়ামের পাঠও দেওয়া হবে। সংগঠনটি জানিয়েছে, গর্ভে চার মাস থাকার পর থেকেই গর্ভস্থ শিশু বাইরের কথাবার্তা শুনতে পায়। কাজেই সেই সময় থেকেই শিশুদের তার বাবা-মা, পরিবারের সদস্য, ভারতবর্ষ, তাদের নিজ নিজ রাজ্য এবং ভারতের মহান ব্যক্তিত্বদের কাহিনি শোনানো উচিত। ওই শিশুদের বয়স দুই বছর না হওয়া পর্যন্ত গর্ভ সংস্কারের এই প্রক্রিয়া চলবে।