Russian Wife: ৪ দিন নেপালে থাকল, ধরাই গেল না! চন্দন নগরের রাশিয়ান বউকে ধরতে ইন্টারপোলের সাহায্য নিতে বলল সুপ্রিম কোর্ট
Russian Wife Case: চন্দননগরের বাসিন্দা সৈকত বসুর স্ত্রী ভিক্টোরিয়া রাশিয়ার নাগরিক। পরে বিবাহ সূত্রে ভারতে এসেছিলেন। তাঁদের এক সন্তান রয়েছে। সেই সন্তানের উপর অত্যাচারের অভিযোগ ওঠে ভিক্টোরিয়ার বিরুদ্ধে।

নয়া দিল্লি: সুপ্রিম কোর্টের কড়া নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও রাশিয়ান পুত্রবধূ কীভাবে শিশুকে নিয়ে দেশ ছেড়ে পালাল! কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং দিল্লি পুলিশের ভূমিকায় চরম ক্ষুব্ধ শীর্ষ আদালত। অবিলম্বে মস্কোর ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও শিশুকে নিয়ে অবৈধভাবে দেশ ছেড়ে পালানোর জন্য ভিক্টোরিয়া নামে ওই রুশ মহিলার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
দিল্লি পুলিশের ব্যর্থতার কারণে প্রয়োজনে দিল্লির পুলিশ কমিশনারকে তলব করা হতে পারে বলেও জানিয়ে দিয়েছে বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ। ১০ দিন পর মামলার ফের শুনানি রয়েছে। এর মধ্যে তদন্ত কতদূর এগিয়েছে, সেই বিষয়ে স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিতে হবে দিল্লি পুলিশ এবং সরকারকে।
চন্দননগরের বাসিন্দা সৈকত বসুর স্ত্রী ভিক্টোরিয়া রাশিয়ার নাগরিক। পরে বিবাহ সূত্রে ভারতে এসেছিলেন। তাঁদের এক সন্তান রয়েছে। সেই সন্তানের উপর অত্যাচারের অভিযোগ ওঠে ভিক্টোরিয়ার বিরুদ্ধে। মামলা হয় আদালতের। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, ছেলে সপ্তাহে তিন দিন মা অর্থাৎ ভিক্টোরিয়ার কাস্টডিতে থাকবে আর বাবা সৈকতের কাছে থাকবে বাকি ৪ দিন। কিন্তু গত মাসে ভিক্টোরিয়ার হাতে সন্তানকে দিয়ে আসার পর থেকে আর তাঁদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা যায়নি বলে জানান সৈকত।
এই ইস্যুতে ফের মামলা হয়। এমনকী ভিক্টোরিয়াকে নিয়ে গুপ্তচরবৃত্তির সন্দেহও প্রকাশ করে সৈকত বসুর পরিবার। সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, যেখান থেকে সম্ভব ভিক্টোরিয়াকে ফিরিয়ে আনতে হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, বিদেশ মন্ত্রক ও দিল্লির পুলিশ-প্রশাসনকে বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে জানা যায়, দিল্লি থেকে বিহার হয়ে নেপাল যান ভিক্টোরিয়া। সেখান থেকে দুবাই ও তারপর মস্কো চলে গিয়েছেন তিনি। নিয়ে গিয়েছেন সন্তানকেও।
শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, নজরদারি চালাতে ব্যর্থ হয়েছে দিল্লি পুলিশ। সিসিটিভি-তে দেখা গিয়েছে, বাড়ির পিছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন ওই রুশ মহিলা। আদালতে দেওয়া হলফনামা থেকে জানা যাচ্ছে, গত ৭ জুলাই ছেলেকে পান ভিক্টোরিয়া। এরপর দিল্লি থেকে ট্যাক্সিতে করে চলে যান বিহারের নারকাটিগঞ্জ স্টেশনে। সেটা ৮ জুলাই। তারপর সীমান্ত পার করে চলে যান নেপাল। ১২ জুলাই নেপাল থেকে শারজার বিমানে চাপেন। সেখান থেকে মস্কো চলে যান।
চারদিন ধরে ভিক্টোরিয়া নেপালে ছিলেন, অথচ পুলিশ কিছুই করতে পারল না কেন! প্রশ্ন তুলেছে আদালত। কেন্দ্র জানিয়েছে, এয়ারলাইনস তথ্য প্রকাশ করতে চাইছে না। শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, অপরাধের ঘটনার ক্ষেত্রে কোনও বিমান সংস্থা তথ্য গোপন করতে পারে না। এ ক্ষেত্রে নথিও জাল করা হয়েছে বলে অনুমান আদালতের। এই ঘটনাকে সাধারণ বৈবাহিক সমস্যা বলে বিবেচনা করা ঠিক হয়নি বলেও মন্তব্য করেছে ডিভিশন বেঞ্চ।
সুপ্রিম কোর্ট এদিন স্পষ্ট বলেছে, “কেন্দ্রীয় সরকারকে মনে রাখতে হবে যে ওই শিশু আদালতের কাস্টডিতে ছিল। বাবা বা মা, কারও হাতে দেওয়া হয়নি।” কোনও কড়া পদক্ষেপ করার আগে প্রশাসনকে আরও একবার সুযোগ দিয়েছে আদালত। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, মস্কোর ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে অবিলম্বে যোগাযোগ করতে হবে, ইন্টারপোলকে ব্যবহার করতে হবে ও সঠিক আইনি পদক্ষেপ করতে হবে।
