SC On Singur TATA Case: ‘একজন বিচারপতির বিরুদ্ধে কীভাবে এ ধরনের অভিযোগ করেন?’, সিঙ্গুর মামলায় শীর্ষ আদালতে চরম ভর্ৎসিত রাজ্য, দিতেই হবে ক্ষতিপূরণ
SC On Singur TATA Case: একলাখি গাড়ি তৈরির কারখানার গড়ার জন্য ২০০৬ সালে তৎকালীন বাম সরকার অধিগ্রহণ করেছিল সিঙ্গুরের প্রায় হাজার একর কৃষিজমি। সে সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী দলনেত্রী। সিঙ্গুর আন্দোলনের ইতিহাস সকলের জানা। কারখানা গড়তে না পেরে ফেরত যেতে হয়েছিল টাটা গোষ্ঠীকে।

নয়া দিল্লি: সিঙ্গুর মামলায় শীর্ষ আদালতে অস্বস্তির মুখে রাজ্য সরকার। আরবিট্রেটরের রায় বহাল রেখে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পি নরসিমহা ও বিচারপতি অতুল এস চান্দুরকরের বেঞ্চ জানিয়ে দিল, টাটাদের মোটা অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাজ্য সরকারকে।
একলাখি গাড়ি তৈরির কারখানা গড়ার জন্য ২০০৬ সালে তৎকালীন বাম সরকার অধিগ্রহণ করেছিল সিঙ্গুরের প্রায় হাজার একর কৃষিজমি। সে সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী দলনেত্রী। সিঙ্গুর আন্দোলনের ইতিহাস সকলের জানা। কারখানা গড়তে না পেরে ফেরত যেতে হয়েছিল টাটা গোষ্ঠীকে।
২০১১ সালে ৩৪ বছরের বাম রাজত্বের অবসান ঘটিয়ে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে বাংলার ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। আন্দোলনের ফলস্বরূপ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিঙ্গুরের সেই জমি চাষিদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই টাটা গোষ্ঠী ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা দায়ের করে। রাজ্যের কাছে ৭৬৬ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চায় টাটা মোটরস। ২০২৩ সালে ওয়েস্ট বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড ও টাটা মোটরসের মধ্যে মামলা চলছিল। সমস্যা মেটাতে আরবিট্রেটর নিয়োগ করে শীর্ষ আদালত।
তিন সদস্যের সালিশি আদালতের একজনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্টতার অভিযোগ তোলে রাজ্য। প্রথমে হাইকোর্টে তা আপিল করা হলে, খারজি হয়ে যায়। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পি নরসিমহা ও বিচারপতি অতুল এস চান্দুরকরের বেঞ্চে ওঠে মামলা। রাজ্যের তরফে এদিন আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। তিনি দাবি করেন, তিন সদস্যের আরবিট্রেটরদের মধ্যে এক বিচারপতি পক্ষপাতদুষ্ট। তাঁকে টাটাদের আমন্ত্রণে ১৫ বার নাগপুরে যেতে দেখা গিয়েছে। অথচ আরবিট্রেশন শেষ হয়ে যাওয়ার পর আমন্ত্রণ পেয়েও যাননি।
টাটাদের তরফে এদিন আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী মুকুল রোহতগি। তিনি তীব্র আপত্তি জানিয়ে বলেন, “একজন বিচারপতির বিরুদ্ধে কীভাবে এই ধরনের অভিযোগ করা যায়?” অবিলম্বে আবেদন খারিজ করে রাজ্যকে জরিমানা করার দাবি করেন তিনি।
এরপরই নিজের দাবির সপক্ষে কিছু নথি আদালতে পেশ করেন সিব্বল। আদালতের পর্যবেক্ষণ, “যদি কোনওভাবে বোঝা যায় যে, এই দাবি অন্যায্য। তবে রাজ্যকে বড় জরিমানা করা হবে।” সিব্বল তখন বলেন, তিনি সেই নথি ফেরত নিয়ে নিতে চান।
ফের আপত্তি করে রোহতগির দাবি, “সব কিছুর সীমা থাকা উচিত। রাজ্যকে বড় জরিমানা করা হোক।” সবশেষে রাজ্যের আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। অর্থাৎ রাজ্যকে ক্ষতিপূরণ বাবদ টাটাদের ৭৬৬ কোটি টাকা দিতে হবে।
