ইটানগর:
ফের ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং চিনা পিএলএ-র মধ্যে সংঘর্ষ। গালওয়ানের পর এবার অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং জেলার ইয়াংস্টে এলাকায়। সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৯ ডিসেম্বর চিনা পিএলএ-র একটি অবৈধ নির্মাণকাজে বাধা দিয়েছিল ভারতীয় সেনা। তাতেই দুই পক্ষের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এরপর ফের ১১ ডিসেম্বরও দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয়। এতে দুই দেশের সেনাবাহিনীরই কয়েকজন সদস্য সামান্য আহত হয়েছেন।
ওয়াকিবহাল মহল জানিয়েছে, অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টরে নিয়ন্ত্রণরেখাটি নির্দিষ্ট করা নেই। নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বেশ কিছু এলাকায় ভারত-চিন – দুই পক্ষই নিজ নিজ দাবি জানায়। ওই এলাকায় টহল দেয়। ২০০৬ সাল থেকেই এই প্রবণতা চলছে। ৯ ডিসেম্বর, তাওয়াং সেক্টরে এরকমই একটি জায়গায় নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয় চলে এসেছিল চিন সেনা। সূত্রের খবর, ভারতীয় সেনার কড়া বাধার মুখে পড়েছিল তারা। তা থেকেই শুরু হয় সংঘর্ষ। তবে, গালওয়ানের মতো রক্তক্ষয়ী হাতাহাতিতে পরিণত হয়নি এই সংঘর্ষ। দুই পক্ষেরই কয়েকজন কর্মী সামান্য আহত হয়েছেন।
ভারতীয় সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, সংঘর্ষের পরই উভয় পক্ষই তাৎক্ষণিকভাবে ওই এলাকা থেকে পিছিয়ে আসে। তবে, এলাকার শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের জন্য এই বিষয়ে ওই এলাকায় মোতায়েন ভারতীয় সেনা কমান্ডার, চিনা পিএলএ কমান্ডারের সঙ্গে একটি পতাকা বৈঠক করেছেন। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, তাওয়াং সেক্টরে ভারত-চিন সংঘর্ষে আহত অন্তত ৬ জন সেনা সদস্যকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে অসমের গুয়াহাটিতে। সংশ্লিষ্ট এক প্রতিরক্ষা কর্তা দাবি করেছেন, “ভারতীয় পক্ষের তুলনায় চিনা পক্ষের অনেক বেশি সেনা জখম হয়েছেন।”
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের অক্টোবর মাসেও প্রায় একই এলাকায় চিনা সৈন্যদের বাধা দিয়েছিল ভারতীয় সেনা। প্রায় ২০০ পিএলএ সৈন্য, অরুণাচল প্রদেশের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার এলাকার কাছে এসে পড়েছিল। তাদের আটকায় ভারতীয় সেনা। তার আগে ২০২০ সালে পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় দুই পক্ষের মধ্য রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছিল। পূর্ব লাদাখের নিয়ন্ত্রণরেখা এলাকায় চিন সৈন্যের উপস্থিতি নিয়ে মতবিরোধ থেকে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধেছিল।
নিয়ন্ত্রণরেখার ভারতীয় অংশে বেশ কিছু এবং একটি নজরদারি পোস্ট তৈরি করেছিল চিন। কিন্তু, দুই পক্ষের একটি চুক্তির পর, সেনা প্রত্যাহার করতে রাজি হয়েছিল চিন। তবে, ২০২০ সালের ১৫ জুন রাতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। প্রায় পাঁচ ঘন্টা ধরে চলা সংঘর্ষে কমান্ডার কর্নেল সুরেশ বাবু-সহ ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়েছিল। তাদের কয়েকজন সেনা সদস্যের মৃত্যু হয়েছে বলে জানালেও, চিনা পিএলএ-র ঠিক কতজন সদস্যের মৃত্যু হয়েছিল বা আহত হয়েছিল, তা জানায়নি বেজিং। তবে, মার্কিন ও ভারতীয় কর্তৃপক্ষের দাবি, গালওয়ান থেকে অন্তত ৪০ জনের দেহ সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল চিন।