কেরল: দলে স্থায়ী সভাপতির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে মত প্রকাশ করলেন কংগ্রেস নেতা শশী থারুর। শনিবার বক্তব্য রাখতে গিয়ে কিছুটা জোর দিয়েই তিনি বলেন, “দলের সাংগঠনিক কাঠামোতে আরও বেশি শক্তির প্রয়োজন।”
শনিবার একটি সংবাদিক বৈঠক করেন প্রবীণ এই কংগ্রেস নেতা। তিনি বলেন, “আমরা প্রত্যেকেই সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্ব পছন্দ করি। কিন্তু অনেকদিন ধরেই তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিগত দু’বছর ধরে দলে কোনও স্থায়ী সভাপতি নেই। ইতিমধ্যে এই বিষয়ে শীর্ষ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। কারণ কংগ্রেসের সাংগঠনিক কাঠামোতে আরও বেশি শক্তির প্রয়োজন। ”
পাশাপাশি রাহুল গান্ধীর উদ্দেশেও বার্তা দিয়েছেন তিরুঅন্তপুরমের সাংসদ। তিনি বলেছেন, “রাহুল গান্ধীর মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। তিনি যদি দলের নেতৃত্ব দিতে চান তবে তাঁকে দ্রুত এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
উল্লেখ্য, গতকাল দেশীয় রাজনীতির খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিল পঞ্জাব। শনিবারের বারবেলা গরম হয়েছিল পঞ্জাবের রাজনীতি নিয়ে। দীর্ঘ কয়েক মাসের টালবাহানার পর পদত্যাগ করেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং। ‘অপমানিত’ হয়েই মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন সে কথা নিজেই স্বীকার করে নেন তিনি। একের পর এক প্রতিক্রিয়া মিলতে শুরু করেছে বিরোধীদের কাছ থেকে। তবে সকলেরই মোদ্দা কথা একটাই,“কংগ্রেস(Congress)-র কাছ থেকে এত বেশি আশা করাই উচিত নয়।”
বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে নভজ্যোত সিং সিধুর প্রবেশের পর থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বিরোধ শুরু হয়। বিগত কয়েক মাস ধরেই সেই দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছিল। সিধু এবং তাঁর ঘনিষ্ট বিধায়করা একাধিকবার দাবি জানিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে যেন অমরিন্দর সিং-কে সরিয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু সে সময়ে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে বারংবারই জানানো হয়েছিল, অমরিন্দরের নেতৃত্বেই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে লড়বে কংগ্রেস। তবে শনিবারই বিধায়কদের দাবিতে কংগ্রেসের পরিষদীয় বৈঠক ডাকাকে কেন্দ্র করে বেজায় চটেন অমরিন্দর। বৈঠকের আগেই তিনি ঘনিষ্ট বিধায়কদের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং রাজভবনে গিয়ে ইস্তফা দেন।
কংগ্রেস সূত্রে খবর, অমরিন্দর স্পষ্ট ভষায় সোনিয়া গান্ধীকে জানিয়ে ছিলেন রাহুল-প্রিয়াঙ্কা পঞ্জাব ভোটে কোনও ভাবেই কংগ্রেসকে জেতাতে পারবেন না। কিন্তু দু’জনই অপমান করেছেন ক্যাপ্টেনকে। দলের অনেকে মনে করছেন অমরিন্দরের মতো প্রবীণ নেতাকে যেভাবে রাহুল-প্রিয়াঙ্কা অপমান করছেন তাতে দলের মধ্যেই ভুল বার্তা গেল।
উল্টোদিকে, রাহুল গান্ধীর ঘনিষ্ঠ শিবিরের মত অমরিন্দর সিংকে সরানোর সিদ্ধান্ত কঠিন হলেও এটি ছিল সাহসী পদক্ষেপ। কারণ দলীয় সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে ক্যাপ্টেন সিং-এর বিরুদ্ধে পঞ্জাবে তৈরি হয়েছে জনমত। সেখানকার কৃষকদের ‘বাইরে ‘ আন্দোলন করতে বলায় ক্ষোভ উগড়ে গিয়ে পড়ে তাঁর উপর। তাই সমস্যার সমাধান একেবারে মূল থেকে করাই শ্রেয় বলে মনে করেছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন: India corona Update: দেশে মৃত্যু বেড়ে ৩০৯! একদিনে আক্রান্ত ৩০ হাজারের বেশি
২০২৪ এর লোকসভা ভোট ও আগামী বছরে পঞ্জাবের বিধানসভা ভোট জিততে মরিয়া কংগ্রেস। সেই কারণে বিজেপির বিরুদ্ধে শক্ত হাতে লড়তে কোনও খামতি রাখতে চাইছে না তারা। এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।